।। স্বামী বাউলানন্দজী।।
===============®=======
[ স্বামী বাউলানন্দজী সম্বন্ধে এই রচনাটি ‘আপ্পা ভেঙ্কট রাও’-এর দ্বারা লিখিত । সুতরাং আলোচ্য অংশে যেখানেই “আমি” কথাটি ব্যবহার হয়েছে সেটা আপ্পা বেঙ্কট রাওকেই বোঝানো হয়েছে।]
{প্রোভার্টি রিলিফ সোসাইটির সংকট।}
১৯৪৫ এর ডিসেম্বর মাসে সরকারি কর্ম থেকে ইস্তফা দিয়ে আমি (লেখক_ আঃ বেঙ্কট রাও) পি আর এস(প্রোভার্টি রিলিফ সোসাইটি) বা “দারিদ্র মোচন পরিষেবা”-য় সম্পাদক হিসাবে যোগ দিলাম । বিস্তৃত এলাকা জুড়ে পি আর এস-এর কর্মতৎপরতা যত বাড়তে লাগলো, তত অর্থের প্রয়োজনও বাড়তে লাগলো। স্টোর থেকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার সময় হয়ে এলো, কিন্তু সিকিউরিটি ছাড়া স্টোরের পরিচালকদের পক্ষে সে টাকা দেওয়ার কোনো উপায় ছিল না।সিকিউরিটি দেখানোর মত কোনো কিছুই তখন পি আর এস-এর কাছে ছিল না । এমতাবস্থায় সমস্ত কাজ আটকে গেল ।
অবশ্য স্টোর এবং কর্মীদের মধ্যে সৌহার্দ্য অক্ষুন্ন থাকলো। সম্পর্ক ভালো থাকা সত্ত্বেও নিয়মকানুনের জটিলতার জন্য সমস্ত কাজ আটকে গেল। নিয়মকানুন শিথিল করার একমাত্র উপায় সরকারি সাহায্য নেওয়া! অন্তত দু’ লাখ টাকার প্রয়োজন এবং সরকারি সাহায্য পাওয়া সহজ কথা নয় _যদি না চেনাশোনা থাকে ! বিনা সিকিউরিটিতে অত টাকা কে দেবে ?
তপঃশক্তি ছাড়া স্বামী বাউলানন্দজীর আর অন্য কোন পুঁজি ছিল না।পৃথিবীর কোন ব্যাংকে আধ্যাত্মিক শক্তির মূল্যায়ন করে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়! ফলে এখন শ্রীরামকৃষ্ণের কৃপাই একমাত্র সম্বল ! অরন্যের কয়েক হাজার দরিদ্র মানুষ এবং কয়েকশো উচ্চ পদাধিকারী কর্মচারীরা এই কর্মের সাথে যুক্ত । কাজ বন্ধ হয়ে গেলে তাদের সকলের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
একমাত্র ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ করুনার প্রতিমূর্তি ! তিনিই আশ্রয়! তাঁর কৃপা ছাড়া পথ নাই! কিন্তু কিভাবে ? কার মাধ্যমে ?
স্বামীজী নিজে কিন্তু এই অবস্থাতেও অবিচলিত ছিলেন । তিনি ‘সাধ্যম্’ সহ সকলকে কাছে ডেকে বললেন__ “গতবার কিস্তির টাকা পেতে যখন একই রকম সমস্যা হয়েছিল, তখন একজন ব্যক্তির সামান্য যোগাযোগের সূত্র ধরে পি আর এস অপ্রত্যাশিত এবং উল্লেখযোগ্য সাহায্য পেয়ে নিজের শক্তি বর্ধিত করার সুযোগ পেয়েছিল! এবারেও হয়তো সেই রকমই হবে ! মাদ্রাজ থেকে সাহায্যের জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। কারণ মাদ্রাজ, রাজামুন্দ্রী থেকে অনেক বড় এবং প্রভাবশালী স্থান। তাছাড়া প্রশাসনিক কেন্দ্র মাদ্রাজ, সুতরাং খুঁজে দেখো __সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা !”
আমি (লেখক) বললাম _”আমরা যে কাজ হাতে নিয়েছি, সেটা কিন্তু সরকারের দায়িত্ব ! যদি সরকার সাহায্য না করেন তবে তাদের উচিত পি আর এসে-র কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া ! আমাদের উচিত সরকারকে এই কথাটা খুব ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া ! সমস্ত সুবিধা-অসুবিধা ওঁরা বুঝে নিন ! তারপর সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই মেনে নেওয়া হবে!”
এই কথায় ‘সাধ্যম্’ খুশি হয়ে বললেন _”সরকার যদি গ্যারান্টি হিসাবে দাঁড়ান, তবে ব্যাংক ঋণ দিতে বাধ্য !” শ্রী রামামূর্তি হোচ্ছেন সরকারি উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে দেখা করে সরকারি গ্যারান্টি জোগাড় করতে হবে। আজই যদি আমরা মাদ্রাজে যেতে পারি,তাহলে ভালো হয়!”
“আমরা প্রস্তুত”_ স্বামীজী বললেন। সেই দিন সন্ধ্যায় স্বামীজী, হরি এবং সাধ্যম্ মাদ্রাজে চলে গেলেন।
মাদ্রাজে যে বাড়িতে স্বামীজী ছিলেন সেই বাড়ির মালিক ভিয়ান্না পান্তলু এক বিশিষ্ট আইনজীবী ও আমাদের আদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল ! তিনি প্রস্তাব দিলেন _”যদি কোনো বিভাগীয় মুখ্য পদাধিকারীর চিঠি নিয়ে যাওয়া যায়, তবে সরকারি সহযোগিতা পেতে পি আর এসে-র আর কোনো অসুবিধা হবে না। কো-অপারেটিভ সোসাইটির সচিবের কাছে গেলেই ভালো হয়! কারণ এই সমস্যাটা তারই এক্তিয়ারে পড়ে।” (ক্রমশঃ)
===============®=======
[ স্বামী বাউলানন্দজী সম্বন্ধে এই রচনাটি ‘আপ্পা ভেঙ্কট রাও’-এর দ্বারা লিখিত । সুতরাং আলোচ্য অংশে যেখানেই “আমি” কথাটি ব্যবহার হয়েছে সেটা আপ্পা বেঙ্কট রাওকেই বোঝানো হয়েছে।]
{প্রোভার্টি রিলিফ সোসাইটির সংকট।}
১৯৪৫ এর ডিসেম্বর মাসে সরকারি কর্ম থেকে ইস্তফা দিয়ে আমি (লেখক_ আঃ বেঙ্কট রাও) পি আর এস(প্রোভার্টি রিলিফ সোসাইটি) বা “দারিদ্র মোচন পরিষেবা”-য় সম্পাদক হিসাবে যোগ দিলাম । বিস্তৃত এলাকা জুড়ে পি আর এস-এর কর্মতৎপরতা যত বাড়তে লাগলো, তত অর্থের প্রয়োজনও বাড়তে লাগলো। স্টোর থেকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার সময় হয়ে এলো, কিন্তু সিকিউরিটি ছাড়া স্টোরের পরিচালকদের পক্ষে সে টাকা দেওয়ার কোনো উপায় ছিল না।সিকিউরিটি দেখানোর মত কোনো কিছুই তখন পি আর এস-এর কাছে ছিল না । এমতাবস্থায় সমস্ত কাজ আটকে গেল ।
অবশ্য স্টোর এবং কর্মীদের মধ্যে সৌহার্দ্য অক্ষুন্ন থাকলো। সম্পর্ক ভালো থাকা সত্ত্বেও নিয়মকানুনের জটিলতার জন্য সমস্ত কাজ আটকে গেল। নিয়মকানুন শিথিল করার একমাত্র উপায় সরকারি সাহায্য নেওয়া! অন্তত দু’ লাখ টাকার প্রয়োজন এবং সরকারি সাহায্য পাওয়া সহজ কথা নয় _যদি না চেনাশোনা থাকে ! বিনা সিকিউরিটিতে অত টাকা কে দেবে ?
তপঃশক্তি ছাড়া স্বামী বাউলানন্দজীর আর অন্য কোন পুঁজি ছিল না।পৃথিবীর কোন ব্যাংকে আধ্যাত্মিক শক্তির মূল্যায়ন করে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়! ফলে এখন শ্রীরামকৃষ্ণের কৃপাই একমাত্র সম্বল ! অরন্যের কয়েক হাজার দরিদ্র মানুষ এবং কয়েকশো উচ্চ পদাধিকারী কর্মচারীরা এই কর্মের সাথে যুক্ত । কাজ বন্ধ হয়ে গেলে তাদের সকলের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
একমাত্র ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ করুনার প্রতিমূর্তি ! তিনিই আশ্রয়! তাঁর কৃপা ছাড়া পথ নাই! কিন্তু কিভাবে ? কার মাধ্যমে ?
স্বামীজী নিজে কিন্তু এই অবস্থাতেও অবিচলিত ছিলেন । তিনি ‘সাধ্যম্’ সহ সকলকে কাছে ডেকে বললেন__ “গতবার কিস্তির টাকা পেতে যখন একই রকম সমস্যা হয়েছিল, তখন একজন ব্যক্তির সামান্য যোগাযোগের সূত্র ধরে পি আর এস অপ্রত্যাশিত এবং উল্লেখযোগ্য সাহায্য পেয়ে নিজের শক্তি বর্ধিত করার সুযোগ পেয়েছিল! এবারেও হয়তো সেই রকমই হবে ! মাদ্রাজ থেকে সাহায্যের জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে। কারণ মাদ্রাজ, রাজামুন্দ্রী থেকে অনেক বড় এবং প্রভাবশালী স্থান। তাছাড়া প্রশাসনিক কেন্দ্র মাদ্রাজ, সুতরাং খুঁজে দেখো __সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা !”
আমি (লেখক) বললাম _”আমরা যে কাজ হাতে নিয়েছি, সেটা কিন্তু সরকারের দায়িত্ব ! যদি সরকার সাহায্য না করেন তবে তাদের উচিত পি আর এসে-র কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া ! আমাদের উচিত সরকারকে এই কথাটা খুব ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়া ! সমস্ত সুবিধা-অসুবিধা ওঁরা বুঝে নিন ! তারপর সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তাই মেনে নেওয়া হবে!”
এই কথায় ‘সাধ্যম্’ খুশি হয়ে বললেন _”সরকার যদি গ্যারান্টি হিসাবে দাঁড়ান, তবে ব্যাংক ঋণ দিতে বাধ্য !” শ্রী রামামূর্তি হোচ্ছেন সরকারি উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে দেখা করে সরকারি গ্যারান্টি জোগাড় করতে হবে। আজই যদি আমরা মাদ্রাজে যেতে পারি,তাহলে ভালো হয়!”
“আমরা প্রস্তুত”_ স্বামীজী বললেন। সেই দিন সন্ধ্যায় স্বামীজী, হরি এবং সাধ্যম্ মাদ্রাজে চলে গেলেন।
মাদ্রাজে যে বাড়িতে স্বামীজী ছিলেন সেই বাড়ির মালিক ভিয়ান্না পান্তলু এক বিশিষ্ট আইনজীবী ও আমাদের আদর্শের প্রতি সহানুভূতিশীল ! তিনি প্রস্তাব দিলেন _”যদি কোনো বিভাগীয় মুখ্য পদাধিকারীর চিঠি নিয়ে যাওয়া যায়, তবে সরকারি সহযোগিতা পেতে পি আর এসে-র আর কোনো অসুবিধা হবে না। কো-অপারেটিভ সোসাইটির সচিবের কাছে গেলেই ভালো হয়! কারণ এই সমস্যাটা তারই এক্তিয়ারে পড়ে।” (ক্রমশঃ)