[ ঈশ্বরের অদ্ভুত ইচ্ছায় P.R.S.-এর সংকটের সমাধান।]
{ ব্যাংকের কিস্তি ঠিক সময় মত দিতে না পারায় যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল তারপর থেকে এই আলোচনা শুরু হচ্ছে}
ইতিমধ্যে বাজারে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি দেখা গেল । কাঠ ব্যবসায়ীগণ এক সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এখন হতে বিক্রীত মালের উপর ক্রেতাকে কর দিতে হবে । পূর্বে বিক্রেতাকে বিক্রীত মালের উপর সরকারকে কর দিতে হোতো । কাঠ ব্যবসায়ী গনের এই সিদ্ধান্তে কমিশন এজেন্টরা ক্ষুব্ধ হোলেন। বাজারে অচলাবস্থা দেখা দিল। সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে গেল। পি আর এস _ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য নয় এবং এই ব্যাপারে অ্যাসোসিয়েশন তাদের সঙ্গে কোনো শলাপরামর্শ করে নাই। সেজন্য পি আর এস এই নিয়মের আওতার বাইরে রইলো । পি আর এস বিক্রির কাজ চালিয়ে যেতে লাগলো। সমগ্র বাঁশ ব্যবসা আমাদের দিকে মোড় নিল । আমরা প্রতিদিন 40 থেকে 50 হাজার বাঁশ বিক্রি করলাম। আমাদের নির্ধারিত মূল্যেই বাঁশ বিক্রি হতে লাগলো । বিক্রয় কর ছাড়াই বিক্রির কাজ চলতে লাগলো। শীঘ্রই আমাদের সমস্ত মজুদ বাঁশ বিক্রি হয়ে গেল।
ধর্মঘট চলতে লাগলো। বাঁশ বিক্রি করে আমরা টাকা ব্যাংকে জমা রাখলাম । আগস্ট মাসের শেষে আমাদের দেয় সমস্ত টাকা আমরা শোধ করে দিলাম । বাজারের এই 40 দিনের অচল অবস্থা, পি আর এস এর নিকট বিরাট আশীর্বাদ স্বরূপ হোলো । ঋণ পরিশোধের পরও আমাদের কাছে এক লক্ষ টাকা মূল্যের বাঁশ রইলো। স্টোরের সঙ্গে কাজকারবার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হোলো । বন্ডের মেয়াদও শেষ হোলো।
পি আর এস এবং এর সম্পাদক সাধ্যমকে সমুচিত শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাংকের অধ্যক্ষ হতাশ হয়ে পড়লেন। আমাদেরকে অপদস্ত করার জন্য তিনি অন্যভাবে চেষ্টা করতে লাগলেন । তিনি বোর্ডের সভায় পি আর এসের সম্পাদকের বিরুদ্ধে দুটি নিন্দা প্রস্তাব আনলেন। 1)__ সম্পাদককে না জানিয়ে আইনের উপদেষ্টার কাছে এই বিভাগের কথা জানিয়েছেন । 2)__ ইচ্ছাকৃতভাবে বোর্ড নির্ধারিত নিলাম বাতিল করেছেন ‌।
সভায় তিনি দেড় ঘন্টা ধরে তাঁর বক্তব্য রাখলেন। ওই সময়ের মধ্যে তিনি সাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলির পুনরাবৃত্তি করতে থাকলেন ।তার এই বাচনভঙ্গি সভায় উপস্থিত কোনো ব্যক্তির‌ই ভালো লাগলো না । কপিলেশ্বর পুরমের জমিদার সেই সভায় সভাপতি হয়েছিলেন । তিনি তাঁকে থামিয়ে উপস্থিত ডাইরেক্টরদের জিজ্ঞাসা করলেন __অধ্যক্ষের অভিযোগের পক্ষে কারো সমর্থন আছে কিনা ? এই অভিযোগ সমর্থন করতে কেউ দাঁড়ালেন না। ফলে ব্যাংকের ওই ব্যক্তি অপমানিত হয়ে মাথা হেঁট করলেন ।
এরপর জমিদার সাধ্যমের উচ্চ প্রশংসা করলেন । তিনি বললেন সম্পাদক সাধ্যম্ পি আর এস এবং স্টোরের মান সম্মান রক্ষা করেছেন। সকলের স্বার্থের জন্য সাধ্যম যে তীব্র চেষ্টা করেছেন _তার জন্য সাধ্যমকে প্রশংসা করার একটা প্রস্তাব করলেন। সহ-সভাপতি লক্ষণাইয়া এই প্রস্তাব সমর্থন করলেন । এই প্রস্তাব সর্বসন্মতিক্রমে গৃহীত হল এই প্রশংসার চিহ্ন হিসেবে জমিদার সাদ্দামকে একটা মূল্যবান বিদেশি পেন উপহার দিলেন । তিনি এই সৎ এবং কঠোর পরিশ্রমী ব্যক্তির প্রশংসা করলেন এবং তার উন্নতি কামনা করলেন । ব্যাংকের অধ্যক্ষ এইসব ঘটনায় একেবারে ভেঙ্গে পড়লেন।
লঞ্চ ভাড়া করা, বেসরকারি কর্মী নিয়োগ, বাচারের অচলাবস্থা এ-সমস্তই ঈশ্বরের ইচ্ছায় হয়েছিল বলে তা পি আর এসের অনুকূল হয়েছিল। দরিদ্র, অসহায় লোকের সাহায্য কল্পে নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টায় রত ভক্তকে সাহায্য করার ব্যাপারে শ্রীরামকৃষ্ণের কি অদ্ভুত ইচ্ছা!!(ক্রমশঃ)