স্থান ~ বনগ্রাম পরমানন্দ মিশন ৷ উপস্থিত ব্যক্তিগণ ~ বহিরাগত ও মিশনস্থ ভক্তমন্ডলী । সময় ~ ১৮/৪/১৯৮৯
জিজ্ঞাসু:– অনেকেই বলে গেছেন ‘ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে’–ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ কি সত্যই ভাল হবে__ না, আরও খারাপের দিকে যাবে ?
গুরু মহারাজ(স্বামী পরমানন্দ) :– খারাপের দিকে যাবে কেন ? ভারতবর্ষে বিভিন্ন মহাপুরুষগণ শরীরধারণ করেছেন কি _এইজন্য ? ভালোই তাে হচ্ছে, আরও ভালো হবে। দেখবে ২০০২ সালের পর থেকে ভারতের সুদিন আসতে শুরু করবে, কিন্তু তার পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে সময় লাগবে। তবে জেনে রাখবে_ যে কোন ভালোর মধ্যেই কিছু খারাপ‌ও নিহিত থাকে_ ধ্বংসের পরেই নতুন সৃষ্টি হয় ! পৃথিবীর পরিস্থিতি এখন মোটেই ভাল নয়। চারিদিকে অশান্তির বাতাবরণ, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতিপর্ব চলছে।
মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলােতে তো যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এইসব থেকে ( অশান্তি ) শুরু হলেও এর রেশ চলবে বেশ কয়েকবছর ধরে। পরে দেখবে অনেক দেশ ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়বে এবং বহু উন্নত দেশেরও পতন হয়ে যাবে। পৃথিবীতে যা পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার রয়েছে, তাতে পৃথিবীটা কয়েকবার ধ্বংস হতে পারে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার হলেও_ তার ফলে গােটা পৃথিবীর ধ্বংসের কোন সম্ভাবনা নেই! সাধুরা এ ব্যাপারে খুবই চিন্তাভাবনা করছেন। এছাড়া উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে পরমাণু অস্ত্রকেও নিস্ক্রিয় করা যাবে অথবা পরমাণু অস্ত্রবাহী মিশাইলকে ধরে মহাশূন্যে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে।
তবে এই যুদ্ধে সমগ্র পৃথিবীর জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশের ধস নামবে। Death, disease and destruction অর্থাৎ প্রাকৃতিক বিপর্যয়, অজানা মহামারী রােগসমূহ এবং ভয়ঙ্কর যুদ্ধাস্ত্রের প্রয়ােগ__ এরূপ নানাভাবে লােকক্ষয় হতে থাকবে গােটা পৃথিবী জুড়ে ! তােমাদের ভারতবর্ষও রেহাই পাবে না_ যুদ্ধের আঁচ ভালোই লাগবে ! তবে তারপরেই ভারতবর্ষে বিপ্লব সংঘটিত হবে ! ভারতবর্ষে গােটাকয়েক বিদ্রোহ হয়েছে কিন্তু সর্বাত্মক বিপ্লব এদেশে কখনও হয়নি_ এবার হবে ! বহু পূর্ব থেকেই ভারতবর্ষ বিশ্বকে নানাভাবে শিক্ষা দিয়েছে_বারবার তাদেরকে আধ্যাত্মিক শিক্ষার “আচার্য্য” উপহার দিয়েছে ! তবে এবার শুধু শিক্ষা বা সংস্কৃতির ক্ষেত্রেই নয়__ অন্য সমস্ত ব্যাপারে ধ্বংসস্তুপে দাঁড়ানাে বিশ্বকে ভারতের কাছ থেকে সাহায্য নিতে হবে ৷
আর ভারতবর্ষের রাজনৈতিক পরিকাঠামো পাল্টালেই দেখবে অনেক প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে এবং এটি একটি ফেডারেল রাষ্ট্রের রূপ নেবে। ২০৫০-৫২ সাল থেকে আসবে ভারতবর্ষের সুবর্ণযুগ ! ঐতিহাসিকরা গুপ্তযুগকে সুবর্ণযুগ বললেও_প্রকৃতপক্ষে তা ছিল না। এইবার হবে। ঐ সময় থেকে ভারতবর্ষ সমস্ত দিক থেকে পূর্ণভাবে বিকশিত হবে ৷
এইতো অনেক কথা বলে ফেললাম! তবে আমার বক্তব্য হোলো__ ভবিষ্যৎকে নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে বর্তমানকে কাজে লাগাও _এবং অন্তর্জগতের গভীরে প্রবেশ করে পূর্ণ জ্ঞান লাভ করো_ পূর্ণ হ‌ও!