গুরু মহারাজের বারেন্দা আশ্রম আগমনের ঘটনায় একটা ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে ৷তাই প্রথমেই পাঠকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি! গুরু মহারাজ দু-বার আমাদের বাড়ী (রশুই গ্রাম) আর তিনবার বারেন্দা আশ্রমে এসেছিলেন । [ ১৯৯৭/৯৮ সালে উনি (গুরু মহারাজ) শেষবারের মতো ইউরোপ গিয়েছিলেন এবং সেইবার উনি ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও আফ্রিকা মহাদেশের অনেক দেশ পরিভ্রমণ করেছিলেন ! বিশেষত সেইসব দেশ যেগুলি অর্থনৈতিকভাবে , রাজনৈতিকভাবে , সামাজিকভাবে অর্থাৎ এককথায় প্রায় সব দিক থেকেই দুর্বল ! বিদেশী শাসনমুক্ত হয়েও দেশগুলির সাধারণ মানুষ এখনও শ্বেতাঙ্গদের দ্বারা এমনকি স্বদেশীয় ধনী ও ক্ষমতাবানদের দ্বারা চরমভাবে লাঞ্ছিত , বঞ্চিত , শোষিত হয়ে চলেছে ! গুরু মহারাজ ১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি বা একটু পরে(পুজোর আগে) ফিরে এসে একদিন সিটিং-এ আফ্রিকার ঐ দেশগুলোর কথা (উগান্ডা , বুরুন্ডি , বৎসোয়ানা ইত্যাদি আরও অনেক দেশের নাম করেছিলেন) আলোচনা করেছিলেন – তাতে দেখা গেল ১০০ বছর আগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তাঁর বিখ্যাত ‘আফ্রিকা’ কবিতায় ঐ দেশের যে দুঃখময় বর্ণনা দিয়েছিলেন – এখনও সেইরকমই বা তার চাইতেও ভয়ঙ্কর অবস্থা ঐ সব দেশে ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন – শিক্ষার অভাব , সুস্থ ও সামাজিক চেতনার অভাব , অর্থনৈতিক অভাব – দেশগুলোতে চরমভাবে বিরাজমান ! দেশনেতাদের এসবদিকে খুব একটা তেমন নজরই নাই ! বহুদিন ধরে বিদেশী (ইউরোপীয়)-দের শাসনাধীন থাকায় – এদের শুধু ক্রীতদাসের মতো ব্যাবহারই করা হয়েছে — কোনভাবেই চেতনার উন্নতির চেষ্টা করা হয়নি ৷ গুরু মহারাজ বলেছিলেন – এতদিন শেতাঙ্গরা শাসন ও শোষণ করেছে , এখন স্বদেশীয় কৃষ্ণাঙ্গরাই (ধনী ও ক্ষমতাবানেরা) সেটা করছে (এটা অবশ্যই সব দেশেই হয়ে থাকে , এদেশেও ধনী এবং ক্ষমতাবানেরা সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত শোষণ করে যাচ্ছে) ! তাছাড়া এখন ঐসমস্ত গরীব দেশগুলির প্রধান সমস্যা এডস্ , যৌনরোগ এবং বিভিন্ন মারণ ব্যাধির প্রকোপ ।
ইউরোপ , আমেরিকার ধনী উশৃঙ্খল ব্যক্তিরা ঐ ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে , আর একবার আক্রান্ত হয়ে গেলে আর তাদের নিজের দেশে বা উন্নত দেশগুলিতে যৌনজীবন যাপন করতে পারছে না (যেহেতু ওসব দেশের মহিলারা খুব Sincere)! তখন ওইসকল রোগগ্রস্থ ধনীরা স্ফুর্তি করতে চলে যাচ্ছে আফ্রিকার বিভিন্ন গরীব দেশগুলোতে ! আর সেখানে গিয়ে প্রচুর পয়সার বিনিময়ে যথেচ্ছ যৌনজীবন যাপন করছে ৷
ফলে বিষাক্ত মারণব্যাধি হু হু করে ছড়িয়ে দিচ্ছে ঐ নিরীহ , বেচারা , অসহায় জনগোষ্ঠীগুলিতে !
উনি বলেছিলেন – এখনই ওইসব দেশের কোন কোন স্থানে 40% মানুষ ঐ সমস্ত মারণব্যাধিতে আক্রান্ত ! আর এই সমস্ত রোগ যেভাবে দ্রুতহারে বিস্তারলাভ করে – তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই আফ্রিকায় গরীব দেশগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে যাবে ! তবে উনি আশার কথাও শুনিয়েছিলেন , বললেন – তবে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা , বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি মানবকল্যাণকামী বহু সংগঠন এই field – এ কাজ করছে । ব্যাপক প্রচারের দ্বারা কমবয়সী মেয়েদেরকে সচেতন করা হচ্ছে — শিক্ষার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে , মহিলাদেরকে নিয়ে Camp করা হচ্ছে , রোগগ্রস্থদের আলাদা করে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে – এইভাবে চেষ্টা চলছে ।]
যাইহোক , যেটা বলছিলাম – গুরু মহারাজের এই যে প্রায় একবছরের বনগ্রামে অনুপস্থিতির সময়কালটা আমার হিসাবের গোলমাল হয়ে গেছিল ৷ ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ওনার প্রথম বারেন্দা আশ্রমে আগমন । তারপর ১৯৯৭ সালের জানুয়ারী মাসে(দ্বিতীয়বারের জন্য) উনি কৃপা করে (বলা চলে ওনার নিজের ইচ্ছায় , – সেবার আমাদের তেমন খুব একটা প্রচেষ্টাই ছিল না) আজিমগঞ্জ থেকে গাড়ী করে বনগ্রাম ফেরার পথে বারেন্দা আশ্রমে এসেছিলেন । ঐ সময় উনি রাস্তায় ‘রঞ্জন’ নামের একটি অনাথ পথবালককে অসহায়ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে, তাকে ওনার নিজের গাড়ীতে তুলে নেন।
‘পথে পথে ঘোরা’ _অবস্থা থেকে ঐ ছেলেটি বারেন্দা আশ্রমে-ই প্রথম এসেছিল –তাই ওর কোন বাড়তি জামাকাপড়ও ছিল না। এখানকার ভক্তেরা(সুব্রত) ওর জন্য দু-সেট জামাকাপড় কিনে দিয়েছিল! গুরুমহারাজের সাথে ফিরে গিয়ে ছেলেটি (রন্জন) এরপর অনেকদিন পর্যন্ত বনগ্রাম আশ্রমে থেকে পড়াশোনা করেছিল! এখন নিশ্চয়ই সে অনেক বড় হয়েছে _হয়তো আশ্রমেও আসে!
রন্জন ছাড়াও গুরুমহারাজের সাথে সেই সময় এসেছিল একজন ইউরোপীয়, যার সাথে ছিল একটি ৫/৬-বছরের বাচ্ছা ছেলে! এখানকার(বারেন্দা গ্রাম অঞ্চলে) মানুষ বড় একটা সাহেবদের ওত ছোট বাচ্ছা দেখেনি _ফলে ছেলেটি সবার কাছে বিরাট একটা আকর্ষণের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল! সেবার গুরুমহারাজ খুবই অল্প সময়ের জন্য এসেছিলেন!
তাই আগে যে বলেছিলাম _বিজুরের সোমেশ্বরদা(জাবুই-এর লক্ষ্মী-মা র ভাই)-র নতুন কেনা টাটাসুমো গাড়ীতে করে গুরুমহারাজ এসেছিলেন দ্বিতীয়বার _সেটা ঠিক নয়। ওইটা ছিল তৃতীয় বা শেষ বার! ১৯৯৮-সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে! সেবার গুরুমহারাজের সাথে অনেক কজন এসেছিল _সোমেশ্বরদা ছাড়াও ওনার মেয়ে বা ভাইঝি, লক্ষ্মী-মা, ন’কাকাদের বাড়ির এক বৌমা(যার বাড়ি কান্দি-তে) এবং শম্পা মা(যাঁর সন্ন্যাস নাম অমৃতাপ্রানা, যিনি বর্তমানে বর্ধমান সদগুরু আশ্রমে থাকেন)।
গুরুমহারাজের আগমন নিয়ে ভুল হবার কথা নয় _তবু পরিবেশনায় ভুল হচ্ছিল বলে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে ঘটনাক্রম গুলোঠিক করে নেওয়া হোল!
এবার আবার ফিরে যাবো আগের কথায় _যেখানে আমাদের আলোচনা হবার কথা ছিল ‘মন্ত্রবিজ্ঞান’!! (ক্রমশঃ)
ইউরোপ , আমেরিকার ধনী উশৃঙ্খল ব্যক্তিরা ঐ ধরণের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে , আর একবার আক্রান্ত হয়ে গেলে আর তাদের নিজের দেশে বা উন্নত দেশগুলিতে যৌনজীবন যাপন করতে পারছে না (যেহেতু ওসব দেশের মহিলারা খুব Sincere)! তখন ওইসকল রোগগ্রস্থ ধনীরা স্ফুর্তি করতে চলে যাচ্ছে আফ্রিকার বিভিন্ন গরীব দেশগুলোতে ! আর সেখানে গিয়ে প্রচুর পয়সার বিনিময়ে যথেচ্ছ যৌনজীবন যাপন করছে ৷
ফলে বিষাক্ত মারণব্যাধি হু হু করে ছড়িয়ে দিচ্ছে ঐ নিরীহ , বেচারা , অসহায় জনগোষ্ঠীগুলিতে !
উনি বলেছিলেন – এখনই ওইসব দেশের কোন কোন স্থানে 40% মানুষ ঐ সমস্ত মারণব্যাধিতে আক্রান্ত ! আর এই সমস্ত রোগ যেভাবে দ্রুতহারে বিস্তারলাভ করে – তাতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই আফ্রিকায় গরীব দেশগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়ে যাবে ! তবে উনি আশার কথাও শুনিয়েছিলেন , বললেন – তবে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা , বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি মানবকল্যাণকামী বহু সংগঠন এই field – এ কাজ করছে । ব্যাপক প্রচারের দ্বারা কমবয়সী মেয়েদেরকে সচেতন করা হচ্ছে — শিক্ষার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে , মহিলাদেরকে নিয়ে Camp করা হচ্ছে , রোগগ্রস্থদের আলাদা করে চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে – এইভাবে চেষ্টা চলছে ।]
যাইহোক , যেটা বলছিলাম – গুরু মহারাজের এই যে প্রায় একবছরের বনগ্রামে অনুপস্থিতির সময়কালটা আমার হিসাবের গোলমাল হয়ে গেছিল ৷ ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ওনার প্রথম বারেন্দা আশ্রমে আগমন । তারপর ১৯৯৭ সালের জানুয়ারী মাসে(দ্বিতীয়বারের জন্য) উনি কৃপা করে (বলা চলে ওনার নিজের ইচ্ছায় , – সেবার আমাদের তেমন খুব একটা প্রচেষ্টাই ছিল না) আজিমগঞ্জ থেকে গাড়ী করে বনগ্রাম ফেরার পথে বারেন্দা আশ্রমে এসেছিলেন । ঐ সময় উনি রাস্তায় ‘রঞ্জন’ নামের একটি অনাথ পথবালককে অসহায়ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে, তাকে ওনার নিজের গাড়ীতে তুলে নেন।
‘পথে পথে ঘোরা’ _অবস্থা থেকে ঐ ছেলেটি বারেন্দা আশ্রমে-ই প্রথম এসেছিল –তাই ওর কোন বাড়তি জামাকাপড়ও ছিল না। এখানকার ভক্তেরা(সুব্রত) ওর জন্য দু-সেট জামাকাপড় কিনে দিয়েছিল! গুরুমহারাজের সাথে ফিরে গিয়ে ছেলেটি (রন্জন) এরপর অনেকদিন পর্যন্ত বনগ্রাম আশ্রমে থেকে পড়াশোনা করেছিল! এখন নিশ্চয়ই সে অনেক বড় হয়েছে _হয়তো আশ্রমেও আসে!
রন্জন ছাড়াও গুরুমহারাজের সাথে সেই সময় এসেছিল একজন ইউরোপীয়, যার সাথে ছিল একটি ৫/৬-বছরের বাচ্ছা ছেলে! এখানকার(বারেন্দা গ্রাম অঞ্চলে) মানুষ বড় একটা সাহেবদের ওত ছোট বাচ্ছা দেখেনি _ফলে ছেলেটি সবার কাছে বিরাট একটা আকর্ষণের বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছিল! সেবার গুরুমহারাজ খুবই অল্প সময়ের জন্য এসেছিলেন!
তাই আগে যে বলেছিলাম _বিজুরের সোমেশ্বরদা(জাবুই-এর লক্ষ্মী-মা র ভাই)-র নতুন কেনা টাটাসুমো গাড়ীতে করে গুরুমহারাজ এসেছিলেন দ্বিতীয়বার _সেটা ঠিক নয়। ওইটা ছিল তৃতীয় বা শেষ বার! ১৯৯৮-সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে! সেবার গুরুমহারাজের সাথে অনেক কজন এসেছিল _সোমেশ্বরদা ছাড়াও ওনার মেয়ে বা ভাইঝি, লক্ষ্মী-মা, ন’কাকাদের বাড়ির এক বৌমা(যার বাড়ি কান্দি-তে) এবং শম্পা মা(যাঁর সন্ন্যাস নাম অমৃতাপ্রানা, যিনি বর্তমানে বর্ধমান সদগুরু আশ্রমে থাকেন)।
গুরুমহারাজের আগমন নিয়ে ভুল হবার কথা নয় _তবু পরিবেশনায় ভুল হচ্ছিল বলে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে ঘটনাক্রম গুলোঠিক করে নেওয়া হোল!
এবার আবার ফিরে যাবো আগের কথায় _যেখানে আমাদের আলোচনা হবার কথা ছিল ‘মন্ত্রবিজ্ঞান’!! (ক্রমশঃ)