গুরু মহারাজ (স্বামী পরমানন্দ)-এর ছোট ভাই গৌতম শরীর ছেড়েছেন গত ১৬ই জানুয়ারী(২০১৯) ৷ ফলে তার শ্রাদ্ধাদিকর্ম হবে ২৮/২৯ তারিখ ৷ আমরাও চেষ্টা করব এই কয়টা দিন তাকে নানাভাবে স্মরণ করার । তাই আলোচনা হচ্ছে তার কথা , তার বলা জননী নিভারাণীর কথা, আর সর্বোপরি ঐ পরিবারে শরীর ধারণকারী ভগবান স্বামী পরমানন্দের কথা !! এখানে একটা কথা বলে রাখা ভাল যে গুরু মহারাজের গর্ভধারিনী জননীর প্রকৃত নাম ছিল নিভারাণী দেবী ৷ কিন্তু পরবর্ত্তীকালে ওনাকে নিয়ে বই লেখার সময় গঙ্গাবাবু লিখেছিলেন “জননী নিভাননী”। এই বইটির পান্ডুলিপি স্বয়ং গুরু মহারাজ দেখেছিলেন , জায়গায় জায়গায় কারেকশন্-ও করেছিলেন ! ফলে “জননী নিভাননী” নামটাও সঠিক ! তাই এ ব্যাপারে কোনো পাঠকের মনে যেন কোনো সংশয় না উৎপন্ন হয় , তাই এই কথা বলা । অবশ্য এই নিয়ে গুরু মহারাজ একদিন সিটিং-এ আলোচনা করেছিলেন বলেই এতকথা বলতে পারলাম ।
এবার পুনরায় আমরা আবার ফিরে আসি কৃষ্ণদেবপুরে , যেখানে গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের বাল্যের লীলাভূমি ! যদিও উনি ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন মামাবাড়ী ‘বিজারা’ গ্রামে (কৃষ্ণদেবপুর থেকে তখনকার দিনে হাঁটাপথে ৪/৫ কিমি পথ) , কিন্তু তবু তাঁর জন্মভূমি বলতে কৃষ্ণদেবপুরকেই বোঝায় ! তখনকার দিনে এই নিয়মটারই প্রচলন ছিল যে , সন্তান গর্ভে আসার কয়েকমাস পরেই মা-য়েরা বাপের বাড়ী চলে আসতো এবং সেখানেই (অর্থাৎ মামার বাড়ীতে) সন্তানের জন্ম হোত ! যাইহোক , গুরু মহারাজও সেই নিয়মে যেহেতু ‘বিজারা’ গ্রামে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন – তাই ওই গ্রামটিও ধন্য , ওখানকার মাটিও পবিত্র ! বনগ্রাম আশ্রমের ‘চরৈবেতি’ পত্রিকার সম্পাদক স্বামী স্বরূপানন্দ, গুরু মহারাজের মামার বাড়ীর একজন সদস্য (মামাতো ভাই) । ওনারা দুজনে প্রায় সমবয়সী – হয়তো ছমাস বা একবছরের ছোট বা বড় । সেই অর্থে ঐ দুজনকে সমবয়সীও বলা যায় ৷ ওনারা দুজনে ছোটবেলায় একসাথে খুবই খেলা করেছেন — একসাথে বহুসময় কাটিয়েছেন ! তাই স্বামী স্বরূপানন্দের কাছে গুরু মহারাজের ছোটবেলার অনেক স্মৃতি রয়েছে ! গুরু মহারাজ এসব কথা আলোচনা করতেন । একবার বলেছিলেন ছোটবেলায় গুরু মহারাজ স্বরূপানন্দকে (উদয়) ‘গেঁড়ি’ বলে রাগাতেন , আর বালক উদয়, বালকবেশী ভগবান পরমানন্দরূপী ‘রবীন’কে রাগাতো ‘কালা’ বলে ।
কেন ‘কালা’ কেন ? এর উত্তর দিয়েছেন গুরু মহারাজ নিজেই ৷ উনি বলেছিলেন – ” সেই ছোট বয়সেই (৫/৬ বছর বয়স) আমার মধ্যে পৃথিবীর জ্ঞানরাশির যাবতীয় যা কিছু তা হু হু করে ঢুকছিল ! যেহেতু এবার এই শরীরের সংস্কার ছিল শতভিষা নক্ষত্রের , পৃথিবী গ্রহের নয় – তাই পৃথিবীর যাবতীয় জ্ঞানরাশি এই শরীরে নতুনভাবে প্রবেশ করে জমা হচ্ছিল । ছোট বয়সের একটা সময় (৫/৬ বা ৭/৮ বছর) সত্যি সত্যিই আমি বাইরের অনেক কথাই শুনতে পেতাম না । মানুষজন কথা বলত , আমি দেখতাম তাদের মুখ নড়ছে , কিন্তু আমি কিছুই বুঝতাম না ! ফলে সেই অবস্থায় আমাকে দিয়ে যে যা খুশী পারতো – করিয়ে নিতো I সেইসময় বড়দের কথা শুনতাম না অর্থাৎ অমান্য করতাম মনে করে বড়রা আমাকে শাসন কোরতো , শাস্তি দিতো ! কিন্তু আমার এসবে ভ্রূক্ষেপই ছিল না !
সে সব কি দিনই না গেছে! হু হু করে ভারতীয় ষড়দর্শনের এক একটার বিচারসহ চিন্তাধারা ও জ্ঞানরাজী আমার brain cell- এ imput হচ্ছিলো! আর শুধু এক একটা দর্শনের বিষয়বস্তুই নয় _সেই সেই দর্শনকে নিয়ে প্রাচীন ভারতে যত বিতর্ক হয়েছে এবং কি কি যুক্তির দ্বারা ঐ দর্শন প্রাধান্য পেয়েছে _সেগুলি ও imput হচ্ছিল!
এসবের কার্যকারিতা তখন বুঝিনি কিন্তু এখন দেখছি সেগুলি খুবই কাজে লাগে! যে কোনো দর্শনের উপরেই আলোচনা হোক না কেন _মানুষজনকে বোঝাতে আমার কোন অসুবিধা হয় না! এটাও দেখেছি পৃথিবী গ্রহের কোনো মেধা ই আমার যুক্তিকে খন্ডন করতে পারে না! আসলে বিরোধী যুক্তি কি কি হোতে পারে _তাও তো আমার জানা! তাই আমার যে কোনো মত প্রতিষ্ঠা করতে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয় না!
সেই জন্য দেখবে সিটিং-এ কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করতে না করতেই তার উত্তর আমার মুখে এসে যায়! আবার এমনও দেখেছি _হয়তো আমি ঘরে বসে আছি, হটাৎ vision হচ্ছে ____’সিটিং-এ কারা বসে আছে, কোন্ কোন্ angle থেকে কোন্ কোন্ ব্যক্তি কি জিজ্ঞাসা করছে __এবং আমি তার কি উত্তর দিচ্ছি!! এই সবের পরিস্কার চিত্র, আমার মানসপটে ফুটে ওঠে! মজা লাগে _ভীষন রকম মজা লাগে! মা – য়ের জগতে এইরকম কত লীলা, কত খেলা হয়ে চলেছে! দেখার চোখ থাকলে দেখা যায়, বোঝার মন থাকলে বোঝা যায়, চেতনার উত্তরনের সাথে সাথে আস্বাদনও করা যায়!”(ক্রমশঃ)
এবার পুনরায় আমরা আবার ফিরে আসি কৃষ্ণদেবপুরে , যেখানে গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের বাল্যের লীলাভূমি ! যদিও উনি ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন মামাবাড়ী ‘বিজারা’ গ্রামে (কৃষ্ণদেবপুর থেকে তখনকার দিনে হাঁটাপথে ৪/৫ কিমি পথ) , কিন্তু তবু তাঁর জন্মভূমি বলতে কৃষ্ণদেবপুরকেই বোঝায় ! তখনকার দিনে এই নিয়মটারই প্রচলন ছিল যে , সন্তান গর্ভে আসার কয়েকমাস পরেই মা-য়েরা বাপের বাড়ী চলে আসতো এবং সেখানেই (অর্থাৎ মামার বাড়ীতে) সন্তানের জন্ম হোত ! যাইহোক , গুরু মহারাজও সেই নিয়মে যেহেতু ‘বিজারা’ গ্রামে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন – তাই ওই গ্রামটিও ধন্য , ওখানকার মাটিও পবিত্র ! বনগ্রাম আশ্রমের ‘চরৈবেতি’ পত্রিকার সম্পাদক স্বামী স্বরূপানন্দ, গুরু মহারাজের মামার বাড়ীর একজন সদস্য (মামাতো ভাই) । ওনারা দুজনে প্রায় সমবয়সী – হয়তো ছমাস বা একবছরের ছোট বা বড় । সেই অর্থে ঐ দুজনকে সমবয়সীও বলা যায় ৷ ওনারা দুজনে ছোটবেলায় একসাথে খুবই খেলা করেছেন — একসাথে বহুসময় কাটিয়েছেন ! তাই স্বামী স্বরূপানন্দের কাছে গুরু মহারাজের ছোটবেলার অনেক স্মৃতি রয়েছে ! গুরু মহারাজ এসব কথা আলোচনা করতেন । একবার বলেছিলেন ছোটবেলায় গুরু মহারাজ স্বরূপানন্দকে (উদয়) ‘গেঁড়ি’ বলে রাগাতেন , আর বালক উদয়, বালকবেশী ভগবান পরমানন্দরূপী ‘রবীন’কে রাগাতো ‘কালা’ বলে ।
কেন ‘কালা’ কেন ? এর উত্তর দিয়েছেন গুরু মহারাজ নিজেই ৷ উনি বলেছিলেন – ” সেই ছোট বয়সেই (৫/৬ বছর বয়স) আমার মধ্যে পৃথিবীর জ্ঞানরাশির যাবতীয় যা কিছু তা হু হু করে ঢুকছিল ! যেহেতু এবার এই শরীরের সংস্কার ছিল শতভিষা নক্ষত্রের , পৃথিবী গ্রহের নয় – তাই পৃথিবীর যাবতীয় জ্ঞানরাশি এই শরীরে নতুনভাবে প্রবেশ করে জমা হচ্ছিল । ছোট বয়সের একটা সময় (৫/৬ বা ৭/৮ বছর) সত্যি সত্যিই আমি বাইরের অনেক কথাই শুনতে পেতাম না । মানুষজন কথা বলত , আমি দেখতাম তাদের মুখ নড়ছে , কিন্তু আমি কিছুই বুঝতাম না ! ফলে সেই অবস্থায় আমাকে দিয়ে যে যা খুশী পারতো – করিয়ে নিতো I সেইসময় বড়দের কথা শুনতাম না অর্থাৎ অমান্য করতাম মনে করে বড়রা আমাকে শাসন কোরতো , শাস্তি দিতো ! কিন্তু আমার এসবে ভ্রূক্ষেপই ছিল না !
সে সব কি দিনই না গেছে! হু হু করে ভারতীয় ষড়দর্শনের এক একটার বিচারসহ চিন্তাধারা ও জ্ঞানরাজী আমার brain cell- এ imput হচ্ছিলো! আর শুধু এক একটা দর্শনের বিষয়বস্তুই নয় _সেই সেই দর্শনকে নিয়ে প্রাচীন ভারতে যত বিতর্ক হয়েছে এবং কি কি যুক্তির দ্বারা ঐ দর্শন প্রাধান্য পেয়েছে _সেগুলি ও imput হচ্ছিল!
এসবের কার্যকারিতা তখন বুঝিনি কিন্তু এখন দেখছি সেগুলি খুবই কাজে লাগে! যে কোনো দর্শনের উপরেই আলোচনা হোক না কেন _মানুষজনকে বোঝাতে আমার কোন অসুবিধা হয় না! এটাও দেখেছি পৃথিবী গ্রহের কোনো মেধা ই আমার যুক্তিকে খন্ডন করতে পারে না! আসলে বিরোধী যুক্তি কি কি হোতে পারে _তাও তো আমার জানা! তাই আমার যে কোনো মত প্রতিষ্ঠা করতে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয় না!
সেই জন্য দেখবে সিটিং-এ কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করতে না করতেই তার উত্তর আমার মুখে এসে যায়! আবার এমনও দেখেছি _হয়তো আমি ঘরে বসে আছি, হটাৎ vision হচ্ছে ____’সিটিং-এ কারা বসে আছে, কোন্ কোন্ angle থেকে কোন্ কোন্ ব্যক্তি কি জিজ্ঞাসা করছে __এবং আমি তার কি উত্তর দিচ্ছি!! এই সবের পরিস্কার চিত্র, আমার মানসপটে ফুটে ওঠে! মজা লাগে _ভীষন রকম মজা লাগে! মা – য়ের জগতে এইরকম কত লীলা, কত খেলা হয়ে চলেছে! দেখার চোখ থাকলে দেখা যায়, বোঝার মন থাকলে বোঝা যায়, চেতনার উত্তরনের সাথে সাথে আস্বাদনও করা যায়!”(ক্রমশঃ)