[“বীরভূমে ন’কাকা” _প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল। প্রথমবার ন’কাকার সাথে আমি যখন আদিত্যপুর পরমানন্দ মিশনে যাই, সেইসময়কার কথা এখানে আলোচনা করা হচ্ছে। এখন সেই কথাগুলোকেই আগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাক! ]
আমি আদিত্যপুর আশ্রমের জায়গাটি কেনার আগে থেকেই বহুবার এই আশ্রম তৈরির অন্যতম কর্মকর্তা (রূপকার স্বামী পরমানন্দ) হরিপদ ভল্লার বোলপুরের বাড়িতে গেছি! গুরুমহারাজই(স্বামী পরমানন্দ )আমাকে ওখানকার আশ্রমের জায়গা কেনার আগেই বেশ কয়েকবার বোলপুরে পাঠিয়েছিলেন( হরিপদ ভল্লা আমাদের পূর্বপরিচিত ছিলেন এবং আমাদের সাথে আলাপের সূত্র ধরেই উনি গুরুমহারাজের কাছে গিয়েছিলেন।)। তারপর অনেক জায়গা-জমি দেখার পর এই নির্দিষ্ট জায়গাটি কেনা হোল। এর কিছুদিন পরেই গুরুমহারাজ ভল্লাবাবুর বাড়ী (বোলপুরে) এসেছিলেন এবং উনি ওখান থেকে বর্তমান আশ্রমের এই প্লটটি দেখতে এসেছিলেন! সেই সময়েও আমি গুরুমহারাজের সাথে সাথেই ছিলাম।
কিন্তু তারপর থেকে আর এই আশ্রমের কি বিকাশ হোল – কি পরিবর্ত্তন হোল – তা আর অনেকদিন দেখতে আসা হয়নি ! বহুদিন অনির্বাণ মহারাজ (স্বামী অদ্বৈতানন্দ, যিনি অতি সম্প্রতি শরীর ছেড়েছেন) ওখানে কিছুদিন থেকে কাজ করেছিলেন। তারপর পঙ্কজবাবু(বর্তমান স্বামী পরমাত্মানন্দ ) ঐ আশ্রমের কিছুটা বিকাশ সাধন করেছিলেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত নন্দ মহারাজ বা ভুবনেশ্বরানন্দ এই আশ্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন!
এসব কথা শুনতে পেতাম, কিন্তু সেই থেকে আর আসা হয় নি! আবার বহুদিন পরে ন’কাকার হাত ধরে ‘আদিত্যপুর পরমানন্দ মিশনে’ পা দিলাম ! দেখলাম আশ্রমটি (যখন জায়গাটি কেনা হয়েছিল , তখন একটা মজে যাওয়া ছোট পুকুর , আর তার চারিদিকের পাড় নিয়ে ৪/৫ বিঘার একটি প্লট ছিল)-র চারিপাশ গাছপালা – বেড়া দিয়ে ঘেরা , পুকুরটি সামান্য কাটানো হয়েছে (পরে ভল্লাবাবু এবং শশাঙ্ক মহারাজের উদ্যোগে ভালোভাবে কাটানো হোল এবং পারের দুধার বাঁধানো হয়েছে এবং একটি সুন্দর বাঁধানো ঘাট করা হয়েছে) । একটি বড়োসড়ো ঠাকুর ঘর বা মন্দির আর দুদিকে বারান্দা , মন্দির সংলগ্ন একটি ছোট ঘর , একটি মাটির রান্নাঘর আর একটি ডাক্তারখানা এবং আবাসিক তিন-চারটি ছেলে ও ব্রহ্মচারী বা মহারাজদের জন্য তিনটি পাকা ঘর ওই আশ্রম এ তখন সবে তৈরি রয়েছে(এখন অবশ্য আরো অনেক ঘরবাড়ি হয়েছে)।
আমরা হেঁটে হেঁটে আশ্রমে পৌঁছে – আশ্রমের কলে (টিউবওয়েল) পা-হাত ধুয়ে মন্দিরের দাওয়ায় বসলাম ৷ ওই ঠাকুর ঘরটাই ন’কাকা (এবং অবশ্য আমারও)-র বিশ্রামের স্থল হিসেবে চিহ্নিত হোল ! ন’কাকা প্রথমবার আদিত্যপুর যাবার পর থেকে অন্তত চার-পাঁচ বছর ঠাকুর ঘরের মেঝেতেই রাত্রে বিশ্রাম নিতেন!
যাইহোক , ন’কাকা পৌঁছাতেই নন্দ মহারাজের খুব হাসি_খুবই আনন্দ! হাসিমুখে আরও একজন ওখানে উপস্থিত ছিল _সে হোল মধুমিতা! ওনারা ন’কাকাকে অভ্যর্থনা করে নিয়ে গিয়ে ঠাকুরঘরে বসালেন । অনাড়ম্বরভাবে প্রথমবারের জন্য আদিত্যপুর আশ্রমে ন’কাকার প্রথম পদার্পণ(এর আগে যখন ন’কাকা গঙ্গাবাবুদের সাথে গিয়েছিলেন তখন ভল্লাবাবুর বাড়িতে উঠেছিলেন) ! গোটা কয়েক পুরনো ভক্তরা বিকেলের দিকে একে একে জড়ো হয়েছিল ৷ একটু আধটু ঈশ্বরীয় প্রসঙ্গও হোল ৷ সেই সময় ওই আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন একজন বিশেষ মানুষ – কীর্ণাহারের সনৎ কুমার চ্যাটার্জী ! তাঁর কথা এখানে একটু বলে রাখি! উনি Railway-তে চাকরি করতেন , অতি সম্প্রতি (সেই সময়) চাকরি থেকে Retired করেছেন এবং সবে সবে (২oo৪-০৫ সালে) বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত হয়েছেন । আর বনগ্রামে যাওয়া আসা শুরু হোতেই অতি অল্প দিনের মধ্যেই ন’কাকার সাথে ওনার খুবই একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছিল । সনৎ কাকার ব্যাপারটা ছিল _”আসিলাম, দেখিলাম, জয় করিলাম”-এর মতন!! সনৎ কাকার (আদিত্যপুর আশ্রমে সকলে এই নামেই ডাকতো) সাথে আদিত্যপুর আশ্রমের এবং নন্দ মহারাজের (স্বামী ভুবনেশ্বরানন্দ)-ও একটা খুবই সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল! সনৎ কাকাদের কীর্ণাহারের বাড়ির প্রায় সকল Member-রাই অনেক আগে থেকেই বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন । ওনার দাদা সুশীল বাবু হাইস্কুলের Retired teacher , বিশিষ্ট ভদ্রলোক! ন’কাকা ওনার কথা উঠলেই খুব শ্রদ্ধার সঙ্গে সুশীলবাবুর শান্ত , ধীর-স্থির , ভদ্র ব্যবহারের কথা স্মরণ করতেন ৷ সুশীল বাবুর স্ত্রী, ওনাদের ছেলে পার্থ চ্যাটার্জি এবং পার্থ-র স্ত্রী জবাও গুরু মহারাজের দীক্ষিত ছিল। পার্থ ন’কাকারও খুব ভক্ত ছিল ৷ এইভাবে ওই বাড়ির সদস্যরা বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত থাকলেও – সনৎ কাকা যেহেতু সেইসময় বাইরে (সম্ভবতঃ রূপনারায়ণ-চিত্তরঞ্জন অঞ্চলে) চাকরি করতেন তাই উনি তখন বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেন নি ৷ কিন্তু Retired হয়ে কীর্ণাহারে ফিরে এসেই উনি বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন । আর যুক্ত হয়েই প্রবল বিক্রমে আশ্রমের কাজে নেমে গিয়েছিলেন!
ঐ বয়সে(৬২/৬৩-বছর) সনৎ কাকার ঐ রকম ছোটাছুটি করে কাজ করা দেখে – সবাই অবাক হয়ে যেতো ! কিন্তু সনৎ কাকার যেন শরীরে কোনো ক্লান্তি ছিল না ! মিশনের কর্মে লিপ্ত হবার পর থেকে _একাধারে উনি ওই অঞ্চলের ‘চরৈবেতি’ পত্রিকা distribution করছেন , সপ্তাহে ২/৩ দিন কীর্ণাহার থেকে বা সিউড়ি থেকে (কিছুদিন উনি এবং ওনার ফ্যামিলি সিউড়িতে থাকতো) আদিত্যপুর আশ্রমে যাচ্ছেন এবং হয়তো দু-চার দিন আশ্রমে থেকেও যাচ্ছেন! আবার ফিরে গিয়ে বাড়ির বাজার-দোকান করছেন , বনগ্রাম আশ্রমে যাচ্ছেন – ওনার কর্মযজ্ঞের সে এক এলাহি ব্যাপার ! এছাড়াও পঁচিশে ডিসেম্বর উৎসব উপলক্ষে এ গ্রাম – ও গ্রামে মহারাজদের সাথে সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে collection -ও উনি করতেন ।
এইভাবে সনৎ কাকা তখন আদিত্যপুর আশ্রমের একজন অপরিহার্য সদস্য হয়ে উঠেছিলেন । এই সনৎ কাকা-ই আবেগ-উচ্ছ্বাস দিয়ে তার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের কাছে ন’কাকাকে ‘তিনি যেমনটা বুঝেছেন’ – সেটাই প্রচার করতে শুরু করে দিলেন [প্রকৃতপক্ষে সনৎ কাকা, ন’কাকা এবং কাকীমা-কে সাক্ষাৎ শিব এবং শিবানী জ্ঞানেই ভক্তি করতেন]৷
যাইহোক, এর ফল হোল – অতি সত্বর ন’কাকাকে কেন্দ্র করে আদিত্যপুর আশ্রমে একটা ভক্ত মন্ডলী তৈরি হয়ে গেলো । আর সনৎ কাকার ভক্তি ও প্রচারের আতিশয্যে ন’কাকা আদিত্যপুর আশ্রমে গেলেই – ওখান থেকে ওনাকে কীর্ণাহার , সিউড়ি ,আমোদপুর , লাভপুর , তারাপীঠ ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে যেতেই হোতো [কারণ ঐসব অঞ্চলে সনৎ কাকার আত্মীয় স্বজনরা বাস কোরতো]!
সুতরাং এই কথাটা বলতেই হচ্ছে যে , পূর্ব পূর্ব জন্মের সংস্কারের কথা মাথায় রেখেই বলছি __খানিকটা সনৎ কাকুর জন্যই বীরভূমের ভক্তেরা দলে দলে ন’কাকার কাছে আসতে শুরু করেছিল!! (ক্রমশঃ)
আমি আদিত্যপুর আশ্রমের জায়গাটি কেনার আগে থেকেই বহুবার এই আশ্রম তৈরির অন্যতম কর্মকর্তা (রূপকার স্বামী পরমানন্দ) হরিপদ ভল্লার বোলপুরের বাড়িতে গেছি! গুরুমহারাজই(স্বামী পরমানন্দ )আমাকে ওখানকার আশ্রমের জায়গা কেনার আগেই বেশ কয়েকবার বোলপুরে পাঠিয়েছিলেন( হরিপদ ভল্লা আমাদের পূর্বপরিচিত ছিলেন এবং আমাদের সাথে আলাপের সূত্র ধরেই উনি গুরুমহারাজের কাছে গিয়েছিলেন।)। তারপর অনেক জায়গা-জমি দেখার পর এই নির্দিষ্ট জায়গাটি কেনা হোল। এর কিছুদিন পরেই গুরুমহারাজ ভল্লাবাবুর বাড়ী (বোলপুরে) এসেছিলেন এবং উনি ওখান থেকে বর্তমান আশ্রমের এই প্লটটি দেখতে এসেছিলেন! সেই সময়েও আমি গুরুমহারাজের সাথে সাথেই ছিলাম।
কিন্তু তারপর থেকে আর এই আশ্রমের কি বিকাশ হোল – কি পরিবর্ত্তন হোল – তা আর অনেকদিন দেখতে আসা হয়নি ! বহুদিন অনির্বাণ মহারাজ (স্বামী অদ্বৈতানন্দ, যিনি অতি সম্প্রতি শরীর ছেড়েছেন) ওখানে কিছুদিন থেকে কাজ করেছিলেন। তারপর পঙ্কজবাবু(বর্তমান স্বামী পরমাত্মানন্দ ) ঐ আশ্রমের কিছুটা বিকাশ সাধন করেছিলেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত নন্দ মহারাজ বা ভুবনেশ্বরানন্দ এই আশ্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন!
এসব কথা শুনতে পেতাম, কিন্তু সেই থেকে আর আসা হয় নি! আবার বহুদিন পরে ন’কাকার হাত ধরে ‘আদিত্যপুর পরমানন্দ মিশনে’ পা দিলাম ! দেখলাম আশ্রমটি (যখন জায়গাটি কেনা হয়েছিল , তখন একটা মজে যাওয়া ছোট পুকুর , আর তার চারিদিকের পাড় নিয়ে ৪/৫ বিঘার একটি প্লট ছিল)-র চারিপাশ গাছপালা – বেড়া দিয়ে ঘেরা , পুকুরটি সামান্য কাটানো হয়েছে (পরে ভল্লাবাবু এবং শশাঙ্ক মহারাজের উদ্যোগে ভালোভাবে কাটানো হোল এবং পারের দুধার বাঁধানো হয়েছে এবং একটি সুন্দর বাঁধানো ঘাট করা হয়েছে) । একটি বড়োসড়ো ঠাকুর ঘর বা মন্দির আর দুদিকে বারান্দা , মন্দির সংলগ্ন একটি ছোট ঘর , একটি মাটির রান্নাঘর আর একটি ডাক্তারখানা এবং আবাসিক তিন-চারটি ছেলে ও ব্রহ্মচারী বা মহারাজদের জন্য তিনটি পাকা ঘর ওই আশ্রম এ তখন সবে তৈরি রয়েছে(এখন অবশ্য আরো অনেক ঘরবাড়ি হয়েছে)।
আমরা হেঁটে হেঁটে আশ্রমে পৌঁছে – আশ্রমের কলে (টিউবওয়েল) পা-হাত ধুয়ে মন্দিরের দাওয়ায় বসলাম ৷ ওই ঠাকুর ঘরটাই ন’কাকা (এবং অবশ্য আমারও)-র বিশ্রামের স্থল হিসেবে চিহ্নিত হোল ! ন’কাকা প্রথমবার আদিত্যপুর যাবার পর থেকে অন্তত চার-পাঁচ বছর ঠাকুর ঘরের মেঝেতেই রাত্রে বিশ্রাম নিতেন!
যাইহোক , ন’কাকা পৌঁছাতেই নন্দ মহারাজের খুব হাসি_খুবই আনন্দ! হাসিমুখে আরও একজন ওখানে উপস্থিত ছিল _সে হোল মধুমিতা! ওনারা ন’কাকাকে অভ্যর্থনা করে নিয়ে গিয়ে ঠাকুরঘরে বসালেন । অনাড়ম্বরভাবে প্রথমবারের জন্য আদিত্যপুর আশ্রমে ন’কাকার প্রথম পদার্পণ(এর আগে যখন ন’কাকা গঙ্গাবাবুদের সাথে গিয়েছিলেন তখন ভল্লাবাবুর বাড়িতে উঠেছিলেন) ! গোটা কয়েক পুরনো ভক্তরা বিকেলের দিকে একে একে জড়ো হয়েছিল ৷ একটু আধটু ঈশ্বরীয় প্রসঙ্গও হোল ৷ সেই সময় ওই আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন একজন বিশেষ মানুষ – কীর্ণাহারের সনৎ কুমার চ্যাটার্জী ! তাঁর কথা এখানে একটু বলে রাখি! উনি Railway-তে চাকরি করতেন , অতি সম্প্রতি (সেই সময়) চাকরি থেকে Retired করেছেন এবং সবে সবে (২oo৪-০৫ সালে) বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত হয়েছেন । আর বনগ্রামে যাওয়া আসা শুরু হোতেই অতি অল্প দিনের মধ্যেই ন’কাকার সাথে ওনার খুবই একটা অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়েছিল । সনৎ কাকার ব্যাপারটা ছিল _”আসিলাম, দেখিলাম, জয় করিলাম”-এর মতন!! সনৎ কাকার (আদিত্যপুর আশ্রমে সকলে এই নামেই ডাকতো) সাথে আদিত্যপুর আশ্রমের এবং নন্দ মহারাজের (স্বামী ভুবনেশ্বরানন্দ)-ও একটা খুবই সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল! সনৎ কাকাদের কীর্ণাহারের বাড়ির প্রায় সকল Member-রাই অনেক আগে থেকেই বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন । ওনার দাদা সুশীল বাবু হাইস্কুলের Retired teacher , বিশিষ্ট ভদ্রলোক! ন’কাকা ওনার কথা উঠলেই খুব শ্রদ্ধার সঙ্গে সুশীলবাবুর শান্ত , ধীর-স্থির , ভদ্র ব্যবহারের কথা স্মরণ করতেন ৷ সুশীল বাবুর স্ত্রী, ওনাদের ছেলে পার্থ চ্যাটার্জি এবং পার্থ-র স্ত্রী জবাও গুরু মহারাজের দীক্ষিত ছিল। পার্থ ন’কাকারও খুব ভক্ত ছিল ৷ এইভাবে ওই বাড়ির সদস্যরা বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত থাকলেও – সনৎ কাকা যেহেতু সেইসময় বাইরে (সম্ভবতঃ রূপনারায়ণ-চিত্তরঞ্জন অঞ্চলে) চাকরি করতেন তাই উনি তখন বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত হতে পারেন নি ৷ কিন্তু Retired হয়ে কীর্ণাহারে ফিরে এসেই উনি বনগ্রাম আশ্রমের সাথে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন । আর যুক্ত হয়েই প্রবল বিক্রমে আশ্রমের কাজে নেমে গিয়েছিলেন!
ঐ বয়সে(৬২/৬৩-বছর) সনৎ কাকার ঐ রকম ছোটাছুটি করে কাজ করা দেখে – সবাই অবাক হয়ে যেতো ! কিন্তু সনৎ কাকার যেন শরীরে কোনো ক্লান্তি ছিল না ! মিশনের কর্মে লিপ্ত হবার পর থেকে _একাধারে উনি ওই অঞ্চলের ‘চরৈবেতি’ পত্রিকা distribution করছেন , সপ্তাহে ২/৩ দিন কীর্ণাহার থেকে বা সিউড়ি থেকে (কিছুদিন উনি এবং ওনার ফ্যামিলি সিউড়িতে থাকতো) আদিত্যপুর আশ্রমে যাচ্ছেন এবং হয়তো দু-চার দিন আশ্রমে থেকেও যাচ্ছেন! আবার ফিরে গিয়ে বাড়ির বাজার-দোকান করছেন , বনগ্রাম আশ্রমে যাচ্ছেন – ওনার কর্মযজ্ঞের সে এক এলাহি ব্যাপার ! এছাড়াও পঁচিশে ডিসেম্বর উৎসব উপলক্ষে এ গ্রাম – ও গ্রামে মহারাজদের সাথে সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে collection -ও উনি করতেন ।
এইভাবে সনৎ কাকা তখন আদিত্যপুর আশ্রমের একজন অপরিহার্য সদস্য হয়ে উঠেছিলেন । এই সনৎ কাকা-ই আবেগ-উচ্ছ্বাস দিয়ে তার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের কাছে ন’কাকাকে ‘তিনি যেমনটা বুঝেছেন’ – সেটাই প্রচার করতে শুরু করে দিলেন [প্রকৃতপক্ষে সনৎ কাকা, ন’কাকা এবং কাকীমা-কে সাক্ষাৎ শিব এবং শিবানী জ্ঞানেই ভক্তি করতেন]৷
যাইহোক, এর ফল হোল – অতি সত্বর ন’কাকাকে কেন্দ্র করে আদিত্যপুর আশ্রমে একটা ভক্ত মন্ডলী তৈরি হয়ে গেলো । আর সনৎ কাকার ভক্তি ও প্রচারের আতিশয্যে ন’কাকা আদিত্যপুর আশ্রমে গেলেই – ওখান থেকে ওনাকে কীর্ণাহার , সিউড়ি ,আমোদপুর , লাভপুর , তারাপীঠ ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে যেতেই হোতো [কারণ ঐসব অঞ্চলে সনৎ কাকার আত্মীয় স্বজনরা বাস কোরতো]!
সুতরাং এই কথাটা বলতেই হচ্ছে যে , পূর্ব পূর্ব জন্মের সংস্কারের কথা মাথায় রেখেই বলছি __খানিকটা সনৎ কাকুর জন্যই বীরভূমের ভক্তেরা দলে দলে ন’কাকার কাছে আসতে শুরু করেছিল!! (ক্রমশঃ)