গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ যখন ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরছিলেন তখনকার কথা হচ্ছিল ! সময়ের ক্রম অনুযায়ী কথাগুলো বলা হচ্ছে না – তবু ঘটনাগুলোকে উল্লেখ করা হচ্ছে ! এই ঘটনাগুলির বেশিরভাগই গুরু মহারাজের নিজের শ্রীমুখ থেকে শোনা ! এছাড়া অল্পস্বল্প কিছু ঘটনার বর্ণনা ইউরোপীয় ভক্তদের কাছ থেকে শোনাও রয়েছে ৷ ইউরোপে গুরুমহারাজের ইউরো রেলে ভ্রমণকালীন যে আলোচনায় আমরা ছিলাম সেটা হয়তো ওনার জীবনে ঘটা একটা সাধারণ ঘটনা , কিন্তু সার্বিক বিচারে ঘটনাটির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম ! হয়তো ওই ঘটনার পর ‘ইউরো-রেলের’ অনেক নিয়মকানুনের-ই বদল হয়ে গিয়েছিল ! হয়তো ইউরোপীয়দের সাদা-কালো বর্ণবৈষম্য নীতির Against-এ মহাপ্রকৃতির এটা ছিল একটা চরম প্রতিবাদ ! এখন আমরা ঘটনায় ফিরে যাই ৷
সেদিন ইউরোপের দুটি দেশের বর্ডারে – উভয় দেশের জাঁদরেল অফিসারেরা যে তাৎক্ষণিক কমিশন ক্যাম্প ওখানে বসিয়েছিল – তার উদ্দেশ্য ছিল সাদা-চামড়ার রেলের অফিসারদের গায়ে হাত দেওয়ার অপরাধে ঐ কালো আমেরিকান ছেলেটিকে কোন কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা ! কিন্তু গুরু মহারাজ সৌভাগ্যক্রমে ওই কম্পার্টমেন্টই উপস্থিত থাকায় – তা সম্ভব হয়নি ! গুরুমহারাজ যখন কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন – তার আগেই ওরা ওই কালো ছেলেটির বিরুদ্ধে কাগজপত্র প্রায় Ready-ই করে ফেলেছিল ৷ কিন্তু গুরু মহারাজ যখন চেকিং অফিসার দুজনের দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে তাদের ব্যবহারের কি কি অসৌজন্যতা ছিল বা অভব্যতা ছিল , সেইগুলি point-out করতে লাগলেন – তখন সমস্ত অফিসারেরা একদম চুপ হয়ে গিয়েছিল ! গুরু মহারাজের কথায় ফ্রান্সের মহিলাটিও সমর্থন করেছিল ! জাপানি ছেলে দুটি বিশেষ কোনো কথা বলেনি , বেয়র্নও কী করা উচিত বুঝতে পারছিল না । যা কিছু বক্তব্য গুরু মহারাজ একাই বলছিলেন !
ওদের মধ্যে একজন উচ্চপদস্থ অফিসার গুরু মহারাজকে থামিয়ে দিয়ে বলেছিলেন – “তোমার পাসপোর্ট , Visa চেক্ করে দেখলাম তুমি একজন Indian , নরওয়েতে এসে প্রথমে উঠেছো এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ ঘুরতে চাইছো! তোমার উদ্দেশ্য এখানকার মানুষদের আধ্যাত্মিক শিক্ষা দেওয়া ! কিন্তু ওই অভিযুক্ত ছেলেটি একজন আমেরিকান , ও সরাসরি আমেরিকা থেকে ইউরোপে এসেছে ! তাহলে ওই ছেলেটি তো তোমার পূর্ব-পরিচিত নয় ! – আর তুমি ওর সাথে এই কাজে যুক্তও নও ! তাহলে কেন তুমি ওকে সাপোর্ট করে কথা বলছ ?”
এর উত্তরে গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” ওই ছেলেটি আমার বন্ধু ! একজন বন্ধুর উচিত বন্ধুর বিপদে তার পাশে এসে দাঁড়ানো ! তাছাড়া আমি ঐ কামরায় যা ঘটেছিল তাই বলেছি _সত্য বলছি ! বন্ধুর প্রয়োজনে সত্য বলায় কি বাধা আছে ?”
তখন ওরা গুরুমহারাজকে জিজ্ঞাসা করেছিল – “ওই ছেলেটির সাথে তো তোমার পূর্বে পরিচয়-ই ছিল না – তাহলে ও তোমার বন্ধু হোল কিভাবে ?”
গুরু মহারাজ উত্তর দিয়েছিলেন – ” একটু আগে এই ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে ওর সাথে পরিচয় ও কিছু কথাবার্তা হবার পর থেকেই ছেলেটি আমার বন্ধু হয়েছে ৷ তাই আমি বন্ধুর স্বপক্ষে সওয়াল করছি ৷”
তারপর গুরু মহারাজ দীপ্তকন্ঠে ওদেরকে বলেছিলেন – “আপনারা যদি ওই ছেলেটিকে শাস্তি দেন – তাহলে আমি ওর সাথেই থাকব। কোর্টে ওর হয়ে সাক্ষী দেব। এখান থেকে বেড়িয়ে গিয়ে-ই Media ডেকে আপনাদের অফিসারদের চরিত্র সম্বন্ধে সব কথা খুলে বলবো! তাছাড়া আমরা কম্পার্টমেন্টের প্রায় প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোক – আমরা নিজের দেশে গিয়েও আপনাদের যে চিত্র এখানে দেখেছি – তা ব্যক্ত করে দেবো ! এবার আপনারা ভাবুন আপনারা কি করবেন – ছেলেটিকে বেকসুর খালাস করে দিয়ে ট্রেন ছেড়ে দেবেন অথবা ঝামেলা-অশান্তি বাড়িয়ে তুলবেন !”
গুরুমহারাজ বলেছিলেন _”আমি জানতাম যে ঐ সব উন্নত দেশের ‘পাপারাৎজি’-রা সাংঘাতিক! যদি কোন সরকারী দপ্তরের অথবা কোন celebrity-র fault একবার পায় __তাহলে একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে! তাই ওদেরকে media-র ভয় দেখানো হয়েছিল।
ওরা আমাদের সবার কথাই নোট্ করে রাখছিল। সবার কথা শোনার পর ওরা ঐ ছেলেটি ছাড়া বাকিদেরকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলল_এবং ওরা সমস্ত অফিসারেরা মিলে জরুরী মিটিং এ বসে গেল।
মাত্র ১০/১৫ মিনিটের মধ্যেই ওরা বেরিয়ে এসে জানিয়ে দিল যে, ছেলেটির উপর থেকে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে এবং সে মুক্ত ! ওরা অভিযোগের সমস্ত কাগজপত্র ঐখানেই ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল।
এরপর ওদের সবচাইতে বড় অফিসার আমার কাছে এসে বলল_’আপনি নিশ্চয়ই আমাদের বিচারের ন্যায়পরায়নতা দেখে impressed হয়েছেন! দেখলেন তো __আমাদের অত বেশি সাদা-কালো sentiment নাই! কেউ কেউ হয়তো কোন সময় কোন ভুল করে ফেলে_কিন্তু সবাইকে এক দলে ফেলবেন না! আমরা এখন এটা আশা করতেই পারি যে, আপনি আর মিডিয়া-র সামনে আমাদের বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য রাখবেন না! ”
গুরুমহারাজ সবার সাথে করমর্দন করে সবাইকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসেছিলেন! ইতিমধ্যে মাইকে announce করছিল সকলকে গাড়িতে উঠে পড়ার জন্য! সমস্ত যাত্রীরা ট্রেনে উঠে পড়তেই ট্রেন ছেড়ে দিয়েছিল! ফলে গুরুমহারাজ নির্বিঘ্নে তাঁর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন!! (ক্রমশঃ)
সেদিন ইউরোপের দুটি দেশের বর্ডারে – উভয় দেশের জাঁদরেল অফিসারেরা যে তাৎক্ষণিক কমিশন ক্যাম্প ওখানে বসিয়েছিল – তার উদ্দেশ্য ছিল সাদা-চামড়ার রেলের অফিসারদের গায়ে হাত দেওয়ার অপরাধে ঐ কালো আমেরিকান ছেলেটিকে কোন কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা ! কিন্তু গুরু মহারাজ সৌভাগ্যক্রমে ওই কম্পার্টমেন্টই উপস্থিত থাকায় – তা সম্ভব হয়নি ! গুরুমহারাজ যখন কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন – তার আগেই ওরা ওই কালো ছেলেটির বিরুদ্ধে কাগজপত্র প্রায় Ready-ই করে ফেলেছিল ৷ কিন্তু গুরু মহারাজ যখন চেকিং অফিসার দুজনের দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে তাদের ব্যবহারের কি কি অসৌজন্যতা ছিল বা অভব্যতা ছিল , সেইগুলি point-out করতে লাগলেন – তখন সমস্ত অফিসারেরা একদম চুপ হয়ে গিয়েছিল ! গুরু মহারাজের কথায় ফ্রান্সের মহিলাটিও সমর্থন করেছিল ! জাপানি ছেলে দুটি বিশেষ কোনো কথা বলেনি , বেয়র্নও কী করা উচিত বুঝতে পারছিল না । যা কিছু বক্তব্য গুরু মহারাজ একাই বলছিলেন !
ওদের মধ্যে একজন উচ্চপদস্থ অফিসার গুরু মহারাজকে থামিয়ে দিয়ে বলেছিলেন – “তোমার পাসপোর্ট , Visa চেক্ করে দেখলাম তুমি একজন Indian , নরওয়েতে এসে প্রথমে উঠেছো এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ ঘুরতে চাইছো! তোমার উদ্দেশ্য এখানকার মানুষদের আধ্যাত্মিক শিক্ষা দেওয়া ! কিন্তু ওই অভিযুক্ত ছেলেটি একজন আমেরিকান , ও সরাসরি আমেরিকা থেকে ইউরোপে এসেছে ! তাহলে ওই ছেলেটি তো তোমার পূর্ব-পরিচিত নয় ! – আর তুমি ওর সাথে এই কাজে যুক্তও নও ! তাহলে কেন তুমি ওকে সাপোর্ট করে কথা বলছ ?”
এর উত্তরে গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” ওই ছেলেটি আমার বন্ধু ! একজন বন্ধুর উচিত বন্ধুর বিপদে তার পাশে এসে দাঁড়ানো ! তাছাড়া আমি ঐ কামরায় যা ঘটেছিল তাই বলেছি _সত্য বলছি ! বন্ধুর প্রয়োজনে সত্য বলায় কি বাধা আছে ?”
তখন ওরা গুরুমহারাজকে জিজ্ঞাসা করেছিল – “ওই ছেলেটির সাথে তো তোমার পূর্বে পরিচয়-ই ছিল না – তাহলে ও তোমার বন্ধু হোল কিভাবে ?”
গুরু মহারাজ উত্তর দিয়েছিলেন – ” একটু আগে এই ট্রেনের কম্পার্টমেন্টে ওর সাথে পরিচয় ও কিছু কথাবার্তা হবার পর থেকেই ছেলেটি আমার বন্ধু হয়েছে ৷ তাই আমি বন্ধুর স্বপক্ষে সওয়াল করছি ৷”
তারপর গুরু মহারাজ দীপ্তকন্ঠে ওদেরকে বলেছিলেন – “আপনারা যদি ওই ছেলেটিকে শাস্তি দেন – তাহলে আমি ওর সাথেই থাকব। কোর্টে ওর হয়ে সাক্ষী দেব। এখান থেকে বেড়িয়ে গিয়ে-ই Media ডেকে আপনাদের অফিসারদের চরিত্র সম্বন্ধে সব কথা খুলে বলবো! তাছাড়া আমরা কম্পার্টমেন্টের প্রায় প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোক – আমরা নিজের দেশে গিয়েও আপনাদের যে চিত্র এখানে দেখেছি – তা ব্যক্ত করে দেবো ! এবার আপনারা ভাবুন আপনারা কি করবেন – ছেলেটিকে বেকসুর খালাস করে দিয়ে ট্রেন ছেড়ে দেবেন অথবা ঝামেলা-অশান্তি বাড়িয়ে তুলবেন !”
গুরুমহারাজ বলেছিলেন _”আমি জানতাম যে ঐ সব উন্নত দেশের ‘পাপারাৎজি’-রা সাংঘাতিক! যদি কোন সরকারী দপ্তরের অথবা কোন celebrity-র fault একবার পায় __তাহলে একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে! তাই ওদেরকে media-র ভয় দেখানো হয়েছিল।
ওরা আমাদের সবার কথাই নোট্ করে রাখছিল। সবার কথা শোনার পর ওরা ঐ ছেলেটি ছাড়া বাকিদেরকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলল_এবং ওরা সমস্ত অফিসারেরা মিলে জরুরী মিটিং এ বসে গেল।
মাত্র ১০/১৫ মিনিটের মধ্যেই ওরা বেরিয়ে এসে জানিয়ে দিল যে, ছেলেটির উপর থেকে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে এবং সে মুক্ত ! ওরা অভিযোগের সমস্ত কাগজপত্র ঐখানেই ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল।
এরপর ওদের সবচাইতে বড় অফিসার আমার কাছে এসে বলল_’আপনি নিশ্চয়ই আমাদের বিচারের ন্যায়পরায়নতা দেখে impressed হয়েছেন! দেখলেন তো __আমাদের অত বেশি সাদা-কালো sentiment নাই! কেউ কেউ হয়তো কোন সময় কোন ভুল করে ফেলে_কিন্তু সবাইকে এক দলে ফেলবেন না! আমরা এখন এটা আশা করতেই পারি যে, আপনি আর মিডিয়া-র সামনে আমাদের বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য রাখবেন না! ”
গুরুমহারাজ সবার সাথে করমর্দন করে সবাইকে নিয়ে গাড়িতে উঠে বসেছিলেন! ইতিমধ্যে মাইকে announce করছিল সকলকে গাড়িতে উঠে পড়ার জন্য! সমস্ত যাত্রীরা ট্রেনে উঠে পড়তেই ট্রেন ছেড়ে দিয়েছিল! ফলে গুরুমহারাজ নির্বিঘ্নে তাঁর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন!! (ক্রমশঃ)