গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ জাহাজের ডেকে আমেরিকান ছেলেমেয়েগুলিকে যে সমস্ত কথা বলেছিলেন ওরা সেগুলি সব মন দিয়ে শুনেছিল ! প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা বা তারও অধিক সময় ধরে ঐ উচ্ছ্বল-উশৃংখল ছেলেমেয়েগুলিকে গুরু মহারাজের কাছে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে জাহাজের ডেকে বসে থাকা অন্যান্য অনেক যাত্রীরাই খুব অবাক হয়ে গেছিল ! কারণ দীর্ঘ সময় ধরে ছেলেমেয়েগুলির অসম্ভব প্রানচঞ্চলতা ওরা নিজের চোখে দেখেছিল, তাই ওরা উঠে যাবার পর ঐ লোকগুলির অনেকেই গুরুমহারাজের সাথে আলাপ করতে এসেছিল ! ওরাও বুঝতে পারছিল ইনি আর যাই হোক _কিছু অসাধারণত্ব তো এনার রয়েছেই!
যাইহোক ওই ঘটনা ঘটে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই জাহাজটি গ্রীসের নির্দিষ্ট কোন বন্দরে ঢুকে পড়েছিল – কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে ছেলেমেয়েগুলি কিন্তু আর কোন হৈ-চৈ করেনি ! ওদের সাথে পরে আর গুরু মহারাজের দেখাও হয়নি – ওদের কেউ পরবর্তীতে ইন্ডিয়ায় এসেছিল কিনা সেটাও আমাদের আর গুরু মহারাজকে জিজ্ঞাসা করে ওঠা হয়নি ৷
ঐসময় গ্রীসের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছিলেন গুরু মহারাজ ! সেদিন সিটিং এ সেই সব কথাই উনি বলেছিলেন, তাছাড়াও ঐদিন গ্রীস মহাকাব্য ইলিয়াড-ওডিসির সাথে আমাদের দেশের মহাকাব্যের যে যথেষ্ট মিল রয়েছে _তা আলোচনা করেছিলেন গুরু মহারাজ । উনি বলেছিলেন উভয় দেশের মহাকাব্যেই (ইলিয়াড ও রামায়ণে) মুখ্য চরিত্রে রয়েছে একজন নারী ৷ যাকে কেন্দ্র করে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে!
গ্রীক ভাস্কর্যের কথা বলেছিলেন গুরু মহারাজ – এর খুব প্রশংসা করেছিলেন উনি ! বিশ্বকে বিখ্যাত বিখ্যাত গণিতবিদ , দার্শনিক , শিল্পীদের উপহার দিয়েছে এই দেশ ! কিন্তু উনি ওই দেশে বিভিন্ন পণ্ডিতদের সাথে আলোচনা করে দেখেছিলেন – তারা ‘Alexander the Great’ বলে না – তারা বলে ‘Alexander the Barbarian’ ! সেদিন এই কথাটা শুনে আমাদের কাছে খুবই আশ্চর্যের মনে হয়েছিল ! আমাদের দেশে পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হয় – গ্রীক বীর আলেকজান্ডার ! কিন্তু খোদ গ্রীসের পন্ডিত সমাজ আলেকজান্ডারকে নিজেদের দেশের লোক-ই বলে না ! ওরা বলে যে , ম্যাকিডনিয়া বা ম্যাসিডন বর্তমান তুরস্কে অবস্থিত , ওসব পাহাড়ি এলাকা ছিল , ওখানে Barbarian-রা বাস করতো ৷
গ্রিসের সাথে ক্রীট দ্বীপের বহুকাল থেকে নানা ঝামেলা লেগেই থাকত – ইলিয়াডের ঘটনাতেও উভয় রাজ্যের রাজার দ্বন্দ্বের কথা ফুটে উঠেছিল । গুরুমহারাজ ক্রীট দ্বীপেও গিয়েছিলেন । গ্রীসের সিসিলিতে কোন পন্ডিত যিনি ভারতীয় ভাষা (সংস্কৃত) জানতেন এমন একজনের সাথে তাঁর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল! ওইসব দেশে অসংখ্য সামুদ্রিক ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে – যেগুলি এক একটি হয়তো একজন মালিকের কেনা! অনেক দ্বীপ রয়েছে যেগুলি হয়তো কয়েকজন মিলে বা কোন কোম্পানি কিনে রেখে দিয়েছে ৷ এখন তারা ঐসব দ্বীপে নানা চিত্তাকর্ষক জিনিস সৃষ্টি করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে এবং সেখান থেকে বহু লক্ষ ডলার উপার্জন করে নিচ্ছে! সরকার শুধু লিজ বাবদ বা এককালীন মূল্য বাবদ কিছু টাকা পেয়েছে – বাকি যা লাভ তা ওই ধনী ব্যবসায়ীদের!
ওখানকার একটা দ্বীপের কথা গুরু মহারাজ বলেছিলেন যেখানে নানান রকম আজগুবি ব্যাপারসমূহ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ইংরেজিতে যত আজগুবি কার্টুন রয়েছে তার বেশিরভাগ উপকরণ রয়েছে ওই দ্বীপে ! ইচ্ছা করেই দ্বীপটাকে মানুষের কাছে রহস্যময় করে তৈরি করা হয়েছে ! যেমন পাহাড়ের চুড়োগুলো মানুষের মাথার মতো , পর্বতের গুহাগুলো বুড়ো মানুষের হাঁ-য়ের মতো ইত্যাদি ! এছাড়া বলা হয় সেখানকার গাছ নাকি কথা বলে , হেঁটে বেড়ায় , মৃত আগ্নেয়গিরির মধ্যে জুরাসিক প্রাণীরা রয়েছে – এইরকম আরও কত কি ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন বিশ্বের তাবড় তাবড় কার্টুনিস্টরা বা রহস্য গল্পলেখক অথবা কিশোরদের জন্য রহস্য গল্প-লিখিয়েরা সারাজীবনে অন্ততঃ একবার ওই দ্বীপে যেতে চায়!
এসব বলার পর গুরু মহারাজ বললেন – “তবে যতই কেউ কৃত্রিমভাবে চিত্তাকর্ষক কিছু তৈরি করুক বা প্রচার করুক , প্রকৃতপক্ষে হিমালয়ের মতো রহস্যে ঘেরা স্থান পৃথিবীতে আর দুটি নেই !”
এরপর গুরুমহারাজ বলেছিলেন এমন একটা দ্বীপের কথা, যেখানকার ব্যাপার স্যাপার শুনলে, সেদিন ওখানে উপস্থিত ভক্তদের মতো আপনারাও হেসে কুটোকুটি হয়ে যাবেন! ____সেই দ্বীপটিতে যেতে হোলে সবাইকে উলঙ্গ হয়ে যেতে হয়! উনি বলেছিলেন _” জাহাজ থেকে নামার পর দেখলাম খানিকটা ভিতর থেকেই পুরো একটা ছোটখাটো শহরের মতোই সব আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে! হোটেল, রেস্তোরাঁ, খেলার মাঠ, ব্যাংক সহ সরকারী বেসরকারী অফিস, সিকিউরিটি ব্যবস্থা (পুলিশ বা মিলিটারি) ইত্যাদি সবই রয়েছে _কিন্তু সব জায়গাতেই মানুষজন অর্থাৎ পর্যটকরা বা কর্মচারী _অ্যাকাউন্টান্ট-ম্যানেজার-মালিক সবাই উলঙ্গ! ”
গুরুমহারাজ এতদূর পর্যন্ত কথাগুলি বলতেই বনগ্রামের নগেন আর তপিমা তো হেসেই খুন! সবাই হাসছিল _কিন্তু সামনেই গুরুমহারাজ বসে আছেন, তাই কেউ জোরে জোরে হাসতে পারছিল না! সেই তুলনায় নগেন আর তপিমা বেশ উচ্চৈস্বরে হেসে উঠেছিল! এবার নগেন অবাক বিস্ময়ভরা চোখে গুরুমহারাজের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলে উঠল _”বাবা! ব্যাংকের বা অন্যান্য অফিসের সমস্ত কর্মচারীরাই চেয়ারে ল্যাংটো হয়ে বসে আছে!!”
গুরুমহারাজও হাসতে হাসতে ওর দিকে স্নেহপূর্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন _”হ্যাঁ রে নগেন! সত্যি সত্যিই!! সবাই!! Each and every one!!!”(ক্রমশঃ)
যাইহোক ওই ঘটনা ঘটে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেই জাহাজটি গ্রীসের নির্দিষ্ট কোন বন্দরে ঢুকে পড়েছিল – কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে ছেলেমেয়েগুলি কিন্তু আর কোন হৈ-চৈ করেনি ! ওদের সাথে পরে আর গুরু মহারাজের দেখাও হয়নি – ওদের কেউ পরবর্তীতে ইন্ডিয়ায় এসেছিল কিনা সেটাও আমাদের আর গুরু মহারাজকে জিজ্ঞাসা করে ওঠা হয়নি ৷
ঐসময় গ্রীসের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছিলেন গুরু মহারাজ ! সেদিন সিটিং এ সেই সব কথাই উনি বলেছিলেন, তাছাড়াও ঐদিন গ্রীস মহাকাব্য ইলিয়াড-ওডিসির সাথে আমাদের দেশের মহাকাব্যের যে যথেষ্ট মিল রয়েছে _তা আলোচনা করেছিলেন গুরু মহারাজ । উনি বলেছিলেন উভয় দেশের মহাকাব্যেই (ইলিয়াড ও রামায়ণে) মুখ্য চরিত্রে রয়েছে একজন নারী ৷ যাকে কেন্দ্র করে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে!
গ্রীক ভাস্কর্যের কথা বলেছিলেন গুরু মহারাজ – এর খুব প্রশংসা করেছিলেন উনি ! বিশ্বকে বিখ্যাত বিখ্যাত গণিতবিদ , দার্শনিক , শিল্পীদের উপহার দিয়েছে এই দেশ ! কিন্তু উনি ওই দেশে বিভিন্ন পণ্ডিতদের সাথে আলোচনা করে দেখেছিলেন – তারা ‘Alexander the Great’ বলে না – তারা বলে ‘Alexander the Barbarian’ ! সেদিন এই কথাটা শুনে আমাদের কাছে খুবই আশ্চর্যের মনে হয়েছিল ! আমাদের দেশে পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হয় – গ্রীক বীর আলেকজান্ডার ! কিন্তু খোদ গ্রীসের পন্ডিত সমাজ আলেকজান্ডারকে নিজেদের দেশের লোক-ই বলে না ! ওরা বলে যে , ম্যাকিডনিয়া বা ম্যাসিডন বর্তমান তুরস্কে অবস্থিত , ওসব পাহাড়ি এলাকা ছিল , ওখানে Barbarian-রা বাস করতো ৷
গ্রিসের সাথে ক্রীট দ্বীপের বহুকাল থেকে নানা ঝামেলা লেগেই থাকত – ইলিয়াডের ঘটনাতেও উভয় রাজ্যের রাজার দ্বন্দ্বের কথা ফুটে উঠেছিল । গুরুমহারাজ ক্রীট দ্বীপেও গিয়েছিলেন । গ্রীসের সিসিলিতে কোন পন্ডিত যিনি ভারতীয় ভাষা (সংস্কৃত) জানতেন এমন একজনের সাথে তাঁর দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল! ওইসব দেশে অসংখ্য সামুদ্রিক ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে – যেগুলি এক একটি হয়তো একজন মালিকের কেনা! অনেক দ্বীপ রয়েছে যেগুলি হয়তো কয়েকজন মিলে বা কোন কোম্পানি কিনে রেখে দিয়েছে ৷ এখন তারা ঐসব দ্বীপে নানা চিত্তাকর্ষক জিনিস সৃষ্টি করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে এবং সেখান থেকে বহু লক্ষ ডলার উপার্জন করে নিচ্ছে! সরকার শুধু লিজ বাবদ বা এককালীন মূল্য বাবদ কিছু টাকা পেয়েছে – বাকি যা লাভ তা ওই ধনী ব্যবসায়ীদের!
ওখানকার একটা দ্বীপের কথা গুরু মহারাজ বলেছিলেন যেখানে নানান রকম আজগুবি ব্যাপারসমূহ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ইংরেজিতে যত আজগুবি কার্টুন রয়েছে তার বেশিরভাগ উপকরণ রয়েছে ওই দ্বীপে ! ইচ্ছা করেই দ্বীপটাকে মানুষের কাছে রহস্যময় করে তৈরি করা হয়েছে ! যেমন পাহাড়ের চুড়োগুলো মানুষের মাথার মতো , পর্বতের গুহাগুলো বুড়ো মানুষের হাঁ-য়ের মতো ইত্যাদি ! এছাড়া বলা হয় সেখানকার গাছ নাকি কথা বলে , হেঁটে বেড়ায় , মৃত আগ্নেয়গিরির মধ্যে জুরাসিক প্রাণীরা রয়েছে – এইরকম আরও কত কি ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন বিশ্বের তাবড় তাবড় কার্টুনিস্টরা বা রহস্য গল্পলেখক অথবা কিশোরদের জন্য রহস্য গল্প-লিখিয়েরা সারাজীবনে অন্ততঃ একবার ওই দ্বীপে যেতে চায়!
এসব বলার পর গুরু মহারাজ বললেন – “তবে যতই কেউ কৃত্রিমভাবে চিত্তাকর্ষক কিছু তৈরি করুক বা প্রচার করুক , প্রকৃতপক্ষে হিমালয়ের মতো রহস্যে ঘেরা স্থান পৃথিবীতে আর দুটি নেই !”
এরপর গুরুমহারাজ বলেছিলেন এমন একটা দ্বীপের কথা, যেখানকার ব্যাপার স্যাপার শুনলে, সেদিন ওখানে উপস্থিত ভক্তদের মতো আপনারাও হেসে কুটোকুটি হয়ে যাবেন! ____সেই দ্বীপটিতে যেতে হোলে সবাইকে উলঙ্গ হয়ে যেতে হয়! উনি বলেছিলেন _” জাহাজ থেকে নামার পর দেখলাম খানিকটা ভিতর থেকেই পুরো একটা ছোটখাটো শহরের মতোই সব আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে! হোটেল, রেস্তোরাঁ, খেলার মাঠ, ব্যাংক সহ সরকারী বেসরকারী অফিস, সিকিউরিটি ব্যবস্থা (পুলিশ বা মিলিটারি) ইত্যাদি সবই রয়েছে _কিন্তু সব জায়গাতেই মানুষজন অর্থাৎ পর্যটকরা বা কর্মচারী _অ্যাকাউন্টান্ট-ম্যানেজার-মালিক সবাই উলঙ্গ! ”
গুরুমহারাজ এতদূর পর্যন্ত কথাগুলি বলতেই বনগ্রামের নগেন আর তপিমা তো হেসেই খুন! সবাই হাসছিল _কিন্তু সামনেই গুরুমহারাজ বসে আছেন, তাই কেউ জোরে জোরে হাসতে পারছিল না! সেই তুলনায় নগেন আর তপিমা বেশ উচ্চৈস্বরে হেসে উঠেছিল! এবার নগেন অবাক বিস্ময়ভরা চোখে গুরুমহারাজের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলে উঠল _”বাবা! ব্যাংকের বা অন্যান্য অফিসের সমস্ত কর্মচারীরাই চেয়ারে ল্যাংটো হয়ে বসে আছে!!”
গুরুমহারাজও হাসতে হাসতে ওর দিকে স্নেহপূর্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন _”হ্যাঁ রে নগেন! সত্যি সত্যিই!! সবাই!! Each and every one!!!”(ক্রমশঃ)