ন’কাকার সাথে তারাপীঠ দর্শনের বিভিন্ন সময়ের[যেহেতু তারাপীঠে ন’কাকার সাথে বেশ কয়েকবার যাওয়া হয়েছিল] সাথীরা ছিল নন্দ মহারাজ , সনৎ কাকা (কীর্ণাহার) , অসিত দা (কীর্ণাহার) , পার্থ-জবা (কীর্ণাহার) , কাজল মা (কীর্ণাহার) , ত্রিলোচন (কীর্ণাহার) , সুকুমার মুখার্জি বা তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা (চাকপাড়া) , আলতা মা (নানুর) , মধুমিতা-অভি (বোলপুর) , দেবাশীষ মাস্টারমশাই (বোলপুর) , উদয়-চন্দন এবং ওদের ফ্যামিলি অর্থাৎ সঞ্চিতা-মানবী ও তাদের ছেলে-মেয়ে (আমোদপুর),মুকুল ব্যানার্জি (বার্নপুর) , দেবকুমার-ভূতনাথ (হাওড়া) – প্রমুখেরা ! এরা সবাই যে একবারে একসাথে গেছিল – তা নয় , আলাদা আলাদা সময়ে এরা সকলে আলাদা আলাদা দলে ন’কাকার সাথে ৺তারা মায়ের দর্শন করতে গেছিল । ঠিক জানি না – তবে আমার মনে হোতো এরা প্রত্যেকেই ন’কাকার পূর্ব শরীরের সাথে কোনো না কোনো ভাবে সম্পর্কযুক্ত ছিল ! তবে আমার এই ধারণা সত্যি হতেও পারে – আবার হয়তো কেউ কেউ এই শরীরেই প্রথম ওনার কৃপা লাভ কোরলো_এমনো হোতে পারে ! মহামানবগণ ছাড়া তো এই রহস্য কেউ জানতে পারে না! তবে আমি শুনেছিলাম ন’কাকা উল্লেখিত ব্যক্তিগণের মধ্যে অনেককেই তাঁর পূর্বশরীরের সাথে সম্পর্কের কথা নিজের মুখেই বলেছিলেন – তাই সাহস করে এত কথা বলতে পারলাম !
ন’কাকাকে নিয়ে সাঁইথিয়া , নলহাটি সহ বীরভূমের অন্যান্য সতী তীর্থগুলির ঘোরার শখ অনেকেরই ছিল । অনেকেই তখন আমার কাছে প্রস্তাব রেখে বলতো – “এবার শীতকালে ন’কাকা এলে – চলুন ন’কাকাকে নিয়ে সমগ্র বীরভূম ঘুরে আসার একটা ব্যবস্থা করি ।” – কিন্তু পরিকল্পনা গুলির ‘পরি’ উড়ে যেতো – পড়ে থাকতো শুধুই ‘কল্পনা’ !ফলে দু-তিন বছর ধরে পরিকল্পনা চললেও _সেটি বাস্তবায়িত হয় নি!
অবশ্য একবার দেবাশীষ মাস্টারের উৎসাহে এবং চন্দন-উদয়-দের ব্যবস্থাপনায় ন’কাকাকে নিয়ে সবাই মিলে যাওয়া হয়েছিল সুদূর – ‘মুলুটি’-তে ! মুলুটি যেতে হোলে রামপুরহাট থেকে গাড়ি ভাড়া করে দূর্গম রাস্তা ধরে যেতে হয়(অন্তত তখন ছিল)। ওখানে বামদেবের ছোটবেলার কিছুটা সময় কেটেছিল ! বেশ কিছু বামলীলা ওখানে ঘটেছিল। ওখানকার দেবীকে বামদেব বুঝিবা ‘ছোটমা’ বলতেন ! রামপুরহাটের দিক থেকে গেলে ওই গ্রামটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের প্রথম গ্রাম – কিন্তু ওখানকার একশো ভাগ মানুষ-ই বাঙালী ! ওদের কি মুশকিল বলুন তো !
তবে আমরা যখন গেছিলাম – তার ঠিক আগেই ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ওই গ্রামে এসেছিল , ফলে মুলুটি-র মায়ের মন্দির এবং গ্রামটির রাস্তাঘাটের কিছুটা উন্নতি হয়েছিল ।
ওই গ্রামে চন্দনের (আমোদপুর) স্ত্রী সঞ্চিতার দিদি নিবেদিতার বিবাহ হয়েছে ৷ তাদের বাড়িতেই আমাদের দুপুরের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল ৷ মাটির ঘরের দাওয়ায় অতগুলো লোক সবাই মিলে (সেদিন আমরা ন’কাকার সাথে প্রায় আট-দশজন ছিলাম) লাইন দিয়ে খেতে বসা এবং ঘরোয়াভাবে রান্না হওয়া বিশুদ্ধ খাবার খেয়ে সেদিন ন’কাকা সহ আমাদের প্রত্যেকের খুবই তৃপ্তি হয়েছিল ।
‘মুলুটি’- মায়ের মন্দির প্রাঙ্গণটি বেশ বড়োসড়ো – অনেকটা জায়গা জুড়ে মূল মন্দির , আরো কয়েকটি ছোট ছোট মন্দির , ভোগ ঘর ইত্যাদি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে । মায়ের পূজো দেবার পর _মন্দিরের পাশে থাকা স্যাঁতস্যাঁতে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে আমরা ন’কাকার সাথে মন্দির প্রদক্ষিণটাও সেরে নিয়েছিলাম ! খুব ভালো লাগছিল , __বাংলা অথচ বাংলা নয় (ঝাড়খন্ড) – এমন একটি গ্রামের সেই অদ্ভুত অথচ শান্ত পরিবেশে ন’কাকার সান্নিধ্যে দিনটি আমাদের কি যে ভালো কেটেছিল __সে কথা বলার নয় ! ঐদিন _বোলপুরের দেবাশীষ মাস্টারমশাই একটা বেশ দামী ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলেন এবং প্রচুর ছবি তুলেছিলেন ! ক্যামেরাটা দেখে ন’কাকা খুবই আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন , বললেন – “মাস্টারের ব্যাপার-স্যাপারই আলাদা ! সব ব্যাপারেই একটা Class, Maintain করে । মাষ্টারের এই ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগে ! ঠিকই তো! আমার যখন সামর্থ্য রয়েছে তখন আমি খারাপ জিনিস কিনব কেন ? শখ মেটাতে গেলে উঁচু নজর থাকা চাই !” ন’কাকার বলা সোজাসুজি এই প্রশ্ংসাসূচক কথাগুলো শুনে মাষ্টারমশাই একটু লজ্জিত নিশ্চয়ই হচ্ছিলেন!
সেইবার-ই ফেরার পথে সাঁইথিয়ার পীঠস্থানেও(নন্দিকেশ্বরী) যাওয়া হয়েছিল , ওখান থেকে মহারাজা নন্দকুমার প্রতিষ্ঠিত কালীবাড়িও যাওয়া হয়েছিল ! ন’কাকা গাড়িতে যাওয়ার সময় নন্দকুমারের ইতিহাস গড়গড় করে বলে দিচ্ছিলেন | আমরা গুরুমহারাজ (স্বামী পরমানন্দ)-এর কাছে শুনেছিলাম – মহারাজা নন্দকুমারকে পরবর্তীতে যেভাবে ঐতিহাসিকরা বিরাট চরিত্র হিসাবে দেখিয়েছে – লোকটি ব্যবহারিক জীবনে অতটা ভালো ছিল না । প্রথমদিকে ইংরেজদের সাহায্যই করেছিল – পরে স্বার্থ সংঘাত হওয়ায় ইংরেজরা ওর ফাঁসির শাস্তি দেয় । তবে বিচারটা অন্যায্য-ই হয়েছিল, ফাঁসিটা রদ করা যেতো । কিন্তু মা মহামায়ার জগতে যা ঘটে – তার অবশ্যই কোনো না কোনো কার্যকরণ সম্পর্ক থাকে ! এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল !(ক্রমশঃ)
ন’কাকাকে নিয়ে সাঁইথিয়া , নলহাটি সহ বীরভূমের অন্যান্য সতী তীর্থগুলির ঘোরার শখ অনেকেরই ছিল । অনেকেই তখন আমার কাছে প্রস্তাব রেখে বলতো – “এবার শীতকালে ন’কাকা এলে – চলুন ন’কাকাকে নিয়ে সমগ্র বীরভূম ঘুরে আসার একটা ব্যবস্থা করি ।” – কিন্তু পরিকল্পনা গুলির ‘পরি’ উড়ে যেতো – পড়ে থাকতো শুধুই ‘কল্পনা’ !ফলে দু-তিন বছর ধরে পরিকল্পনা চললেও _সেটি বাস্তবায়িত হয় নি!
অবশ্য একবার দেবাশীষ মাস্টারের উৎসাহে এবং চন্দন-উদয়-দের ব্যবস্থাপনায় ন’কাকাকে নিয়ে সবাই মিলে যাওয়া হয়েছিল সুদূর – ‘মুলুটি’-তে ! মুলুটি যেতে হোলে রামপুরহাট থেকে গাড়ি ভাড়া করে দূর্গম রাস্তা ধরে যেতে হয়(অন্তত তখন ছিল)। ওখানে বামদেবের ছোটবেলার কিছুটা সময় কেটেছিল ! বেশ কিছু বামলীলা ওখানে ঘটেছিল। ওখানকার দেবীকে বামদেব বুঝিবা ‘ছোটমা’ বলতেন ! রামপুরহাটের দিক থেকে গেলে ওই গ্রামটি বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের প্রথম গ্রাম – কিন্তু ওখানকার একশো ভাগ মানুষ-ই বাঙালী ! ওদের কি মুশকিল বলুন তো !
তবে আমরা যখন গেছিলাম – তার ঠিক আগেই ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ওই গ্রামে এসেছিল , ফলে মুলুটি-র মায়ের মন্দির এবং গ্রামটির রাস্তাঘাটের কিছুটা উন্নতি হয়েছিল ।
ওই গ্রামে চন্দনের (আমোদপুর) স্ত্রী সঞ্চিতার দিদি নিবেদিতার বিবাহ হয়েছে ৷ তাদের বাড়িতেই আমাদের দুপুরের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল ৷ মাটির ঘরের দাওয়ায় অতগুলো লোক সবাই মিলে (সেদিন আমরা ন’কাকার সাথে প্রায় আট-দশজন ছিলাম) লাইন দিয়ে খেতে বসা এবং ঘরোয়াভাবে রান্না হওয়া বিশুদ্ধ খাবার খেয়ে সেদিন ন’কাকা সহ আমাদের প্রত্যেকের খুবই তৃপ্তি হয়েছিল ।
‘মুলুটি’- মায়ের মন্দির প্রাঙ্গণটি বেশ বড়োসড়ো – অনেকটা জায়গা জুড়ে মূল মন্দির , আরো কয়েকটি ছোট ছোট মন্দির , ভোগ ঘর ইত্যাদি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে । মায়ের পূজো দেবার পর _মন্দিরের পাশে থাকা স্যাঁতস্যাঁতে বাঁধানো রাস্তা দিয়ে আমরা ন’কাকার সাথে মন্দির প্রদক্ষিণটাও সেরে নিয়েছিলাম ! খুব ভালো লাগছিল , __বাংলা অথচ বাংলা নয় (ঝাড়খন্ড) – এমন একটি গ্রামের সেই অদ্ভুত অথচ শান্ত পরিবেশে ন’কাকার সান্নিধ্যে দিনটি আমাদের কি যে ভালো কেটেছিল __সে কথা বলার নয় ! ঐদিন _বোলপুরের দেবাশীষ মাস্টারমশাই একটা বেশ দামী ক্যামেরা নিয়ে গিয়েছিলেন এবং প্রচুর ছবি তুলেছিলেন ! ক্যামেরাটা দেখে ন’কাকা খুবই আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন , বললেন – “মাস্টারের ব্যাপার-স্যাপারই আলাদা ! সব ব্যাপারেই একটা Class, Maintain করে । মাষ্টারের এই ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগে ! ঠিকই তো! আমার যখন সামর্থ্য রয়েছে তখন আমি খারাপ জিনিস কিনব কেন ? শখ মেটাতে গেলে উঁচু নজর থাকা চাই !” ন’কাকার বলা সোজাসুজি এই প্রশ্ংসাসূচক কথাগুলো শুনে মাষ্টারমশাই একটু লজ্জিত নিশ্চয়ই হচ্ছিলেন!
সেইবার-ই ফেরার পথে সাঁইথিয়ার পীঠস্থানেও(নন্দিকেশ্বরী) যাওয়া হয়েছিল , ওখান থেকে মহারাজা নন্দকুমার প্রতিষ্ঠিত কালীবাড়িও যাওয়া হয়েছিল ! ন’কাকা গাড়িতে যাওয়ার সময় নন্দকুমারের ইতিহাস গড়গড় করে বলে দিচ্ছিলেন | আমরা গুরুমহারাজ (স্বামী পরমানন্দ)-এর কাছে শুনেছিলাম – মহারাজা নন্দকুমারকে পরবর্তীতে যেভাবে ঐতিহাসিকরা বিরাট চরিত্র হিসাবে দেখিয়েছে – লোকটি ব্যবহারিক জীবনে অতটা ভালো ছিল না । প্রথমদিকে ইংরেজদের সাহায্যই করেছিল – পরে স্বার্থ সংঘাত হওয়ায় ইংরেজরা ওর ফাঁসির শাস্তি দেয় । তবে বিচারটা অন্যায্য-ই হয়েছিল, ফাঁসিটা রদ করা যেতো । কিন্তু মা মহামায়ার জগতে যা ঘটে – তার অবশ্যই কোনো না কোনো কার্যকরণ সম্পর্ক থাকে ! এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল !(ক্রমশঃ)