গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের বলা কথা নিয়ে হচ্ছিল আমাদের আলোচনা । এখন আমরা বলছিলাম গুরুমহারাজ ভগবান বুদ্ধ সম্বন্ধে কখন কি কথা বলেছিলেন সেই সব কথার কিছু অংশ । গুরু মহারাজের বলা সব কথা তো কারো পক্ষে লেখা বা বলে বোঝানো সম্ভব নয় – তাই যেটুকু শুনেছিলাম এবং তার মধ্যে যেটুকু মনে আছে, তাই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার চেষ্টা করছি !
গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ভগবান বুদ্ধ জীবিত থাকাকালীন-ই ওনার তিনজন শিষ্যকে তাঁর শিক্ষাগুলি পৃথক পৃথকভাবে সংকলন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ এই ভাবেই অভিধর্ম পিটক, সূত্র পিটক এবং বিনয় পিটক নামে তিনটি ‘পিটক’ বা ‘ত্রিপিটক’ রচিত হয়েছিল । এই গ্রন্থ-ই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ ! এছাড়া বিভিন্ন লেখকের এর লেখা ‘বুদ্ধচরিত’ বা বুদ্ধজীবনী রচনা হয়েছিল পরবর্তীকালে, আর ছিল ‘জাতকের গল্প’ – যেগুলি ভগবান বুদ্ধ কোন না কোন সময় গল্পচ্ছলে তাঁর পূর্ব পূর্ব জীবনের কাহিনী বর্ণনা করেছিলেন ৷
ভগবান বুদ্ধের অনুগামীদের কাছে এই সব গ্রন্থগুলিই প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু গুরুমহারাজের কাছে অনেক কথা শুনে আমাদের এইটুকু ধারণা দৃঢ় হয়েছে যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাপুরুষগণের শিক্ষা, তাঁদের জীবন বা জীবনী সবই পাল্টে পাল্টে যায় ৷ আর বহুদিন ধরে পাল্টাতে পাল্টাতে মহাপুরুষগণের শিক্ষা হয়তো সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী হয়ে যায় অর্থাৎ মহাপুরুষগণ যা বলেছিলেন – কয়েকশো বছর পর তাঁর-ই অনুগামী বলে পরিচিতরা ঠিক তার উল্টো পথে চলে – উল্টো কথা বলে ! আর এইজন্যই তো “সম্ভবামি যুগে যুগে”, আবার একজন নতুন শরীরধারী মহাপুরুষ পৃথিবীর কোথাও না কোথাও শরীর ধারণ করে যুগোপযোগী ধর্মের বাণী প্রচার করে যান, যেগুলি follow করলে সমকালীন মানুষের কল্যাণ হয় – মঙ্গল হয় । ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আজ থেকে একশ বছরের ও বেশি সময় আগে বলেছিলেন _”বাদশাহী আমলের মুদ্রা _নবাবী আমলে চলে না।”__অর্থাৎ মানুষের উচিত যুগাবতারদের প্রচারিত যুগোপযোগী ধর্মমত গ্রহণ করে _সেই অনুযায়ী নিজেদের জীবন গঠন করা। কিন্তু আমাদের মধ্যে যে জড়তা বা জাড্যধর্ম রয়েছে _সেইটা আমাদেরকে কেবলই আটকে দেয় অথবা পিছন দিকে টানে।
আসলে আমরা সাধারণ মানুষেরা তাঁদের(মহাপুরুষদের) এই গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারি না, এটা যে মহাপ্রকৃতিরই গতি – সেটা বুঝতে পারি না ৷ আমরা তখনও সেই পিছনেই পড়ে থাকি – সেই পিছনটাকেই জাপটে আঁকড়ে ধরে থাকি, আর সেই জন্যই তো পারস্পারিক সংঘাতে লিপ্ত হই, নিজেরাই নিজেদের সাথে মারামারি করে মরি।
আমরা যদি একবার বুঝতে পারি যে, সেই সর্বশক্তিমান পরমেশ্বর (আল্লাহ, হরি,রাম, কালী, গড – ইত্যাদি যে নামই দেওয়া হোক)-ই পৃথিবীর মানুষের কল্যাণের জন্য বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামের মহাপুরুষদের পাঠিয়েছেন (অথবা তিনি-ই স্বয়ং শরীর নিয়েছেন) – তাহলে আর ঝগড়াটা কোথায় ? বরং সেই মহান সর্বশক্তিমান পরমেশ্বরের লীলা-বৈচিত্রের বহর দেখে – কতই না মজা পাওয়া যায়, কতই না আনন্দ করা যায়, কত বেশি বেশি করে সেই পরম করুণাময় পরমেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা, ভক্তি-শ্রদ্ধায় মস্তক অবনভ করা যায় ! কিন্তু হায় ! কি মূর্খ আমরা – এসব না করে আমরা শুধু লড়াই করেই মরছি – আনন্দ না করে দুঃখকে বরণ করে নিচ্ছি ! গুরুমহারাজ চরম দুংখেই বলতেন_”অবোধের গো-বধে আনন্দ !”
গুরু মহারাজ বলতেন – ” ভগবান বুদ্ধের দর্শনের পর স্বামী বিবেকানন্দ বুদ্ধ হয়ে গেলেন ! সত্যিই তো – ভগবান বুদ্ধের শিক্ষা_ “বহুজন হিতায় চ বহুজন সুখায় “-এর কাজই তো তিনি সারাজীবন ধরে করে গেলেন। _”আত্মনোমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” – এই শিক্ষার কথাও স্বামীজীর জীবনে প্রকটভাবে প্রতিফলিত, বারবার তাঁর কাজে ও কথায় এই কথার প্রতিফলন আমরা দেখতে পেয়েছি ৷
এই রকম ভাবনায় যদি আমরা অন্যান্য ধর্মমত প্রণেতা (অর্থাৎ ঈসামসি ও হযরত মুহাম্মদ প্রমুখরা)-দেরকেও বিচার করি, তাহলে কোনো ভেদ বা তফাৎ তো দেখতে পাবো না – বরং তাঁদের বহু কাজে, বহু কথায় সেই শাশ্বত-সনাতন বার্তার-ই প্রতিফলন দেখতে পাবো ! তাঁদের সবাইকেও আপন করে নিতে পারবো ।
অনেক মহামিলনের কথা হলো, এবার আমরা আবার ফিরে যাই গুরু মহারাজের বুদ্ধ বিষয়ক কথায় ! অবশ্য এতক্ষণ যে কথাগুলো বলা হলো – সে সবই গুরু মহারাজেরই কথার অংশবিশেষ ! গুরু মহারাজের সাথে যুক্ত হবার আগে তো আমরা ‘ভালো’ কিছুই জানতাম না, যা জানতাম সেগুলো সবই জীবন বিরোধী শিক্ষা – গুরু মহারাজই আমাদের হাত ধরে ধরে সঠিকভাবে কিভাবে ভাবতে হয়, কিভাবে হাঁটতে হয় – চলতে হয়, সেসব কিছুই শিখিয়েছিলেন ৷ আমরা শিখতে পারিনি সেটা আমাদের অপদার্থতা, আমাদের লজ্জা, আমাদের আহাম্মকি ! সেই মানুষটা তাঁর মহান জীবনের, তাঁর দেবদুর্লভ শরীরের একটু একটু করে ক্ষয় করে করে তাঁর প্রেম, তাঁর করুণা অকাতরে আমাদেরকে দিয়েছেন, আরো দিতে চেয়েছেন, দিয়ে দিয়ে নিঃশেষ হয়েছেন ! কিন্তু, আমরা বেশিরভাগেরা যে অনুপযুক্ত, আমরা অজ্ঞান-অন্ধকারে থাকায় স্বামী পরমানন্দের শিক্ষাকে আর জীবনে যোজনা করতে পারলাম কই ? এইরকম ভাবেই ভগবান বুদ্ধকে, ঈশামসিকে, হযরতকে, শ্রীচৈতন্যকে, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বা স্বামী বিবেকানন্দকে-ও আমরা ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারিনি । সেইজন্যই প্রকৃতি মায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষের সৃষ্টি সমাজে এত বিরোধ, এত হিংসা, এত রক্তপাত !
ভগবান বুদ্ধের ‘জাতকের গল্পে’-র কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছিল _এর সাদৃশ্য পাই গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের জীবনেও। উনি ওনার পূর্ব পূর্ব অনেক জীবনের কথা আমাদের কাছে বলেছিলেন। এর মধ্যে ওনার হাতিশরীরের কথা, বাল্টিক সাগরের তীরে জেলে_মেছুয়া শরীরের কথা, ক্ষত্রিয় কোন বীর সর্দার জীবনের কথা (যিনি তৎকালীন সমাজের পুরোহিত সমাজের এক কুপ্রথা দূর করেছিলেন, ওরা ছোট ছোট ছেলেদের জোর করে টেস্টিকল্ নষ্ট করে দিত _উনি সঙ্গী সাথীদের নিয়ে অস্ত্র হাতে ঐ অনুষ্ঠান ভেস্তে দিয়েছিলেন।) _এইরকম কত জীবনের কথা বলেছিলেন।
ভগবান বুদ্ধও পদ্মফুল ভালোবাসতেন_গুরুমহারাজও পদ্ম ভালোবাসতেন। পদ্মপ্রিয় বালক রবীন(গুরুমহারাজ) রাতের পর রাত জেগে কৃষ্ণদেবপুরের(গুরুমহারাজের জন্মভূমি) দীঘির জলে ভেসে ভেসে পদ্মকোরকের কাছে কাছে গিয়ে সেগুলির ফুটে ওঠা দেখতেন। সদ্য ফুটে ওঠা পদ্মফুলের সৌন্দর্য, তার অনাঘ্রাত সৌগন্ধের আনন্দ আস্বাদন করতেন স্বামী পরমানন্দ!! (ক্রমশঃ)
গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ভগবান বুদ্ধ জীবিত থাকাকালীন-ই ওনার তিনজন শিষ্যকে তাঁর শিক্ষাগুলি পৃথক পৃথকভাবে সংকলন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ এই ভাবেই অভিধর্ম পিটক, সূত্র পিটক এবং বিনয় পিটক নামে তিনটি ‘পিটক’ বা ‘ত্রিপিটক’ রচিত হয়েছিল । এই গ্রন্থ-ই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থ ! এছাড়া বিভিন্ন লেখকের এর লেখা ‘বুদ্ধচরিত’ বা বুদ্ধজীবনী রচনা হয়েছিল পরবর্তীকালে, আর ছিল ‘জাতকের গল্প’ – যেগুলি ভগবান বুদ্ধ কোন না কোন সময় গল্পচ্ছলে তাঁর পূর্ব পূর্ব জীবনের কাহিনী বর্ণনা করেছিলেন ৷
ভগবান বুদ্ধের অনুগামীদের কাছে এই সব গ্রন্থগুলিই প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু গুরুমহারাজের কাছে অনেক কথা শুনে আমাদের এইটুকু ধারণা দৃঢ় হয়েছে যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাপুরুষগণের শিক্ষা, তাঁদের জীবন বা জীবনী সবই পাল্টে পাল্টে যায় ৷ আর বহুদিন ধরে পাল্টাতে পাল্টাতে মহাপুরুষগণের শিক্ষা হয়তো সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী হয়ে যায় অর্থাৎ মহাপুরুষগণ যা বলেছিলেন – কয়েকশো বছর পর তাঁর-ই অনুগামী বলে পরিচিতরা ঠিক তার উল্টো পথে চলে – উল্টো কথা বলে ! আর এইজন্যই তো “সম্ভবামি যুগে যুগে”, আবার একজন নতুন শরীরধারী মহাপুরুষ পৃথিবীর কোথাও না কোথাও শরীর ধারণ করে যুগোপযোগী ধর্মের বাণী প্রচার করে যান, যেগুলি follow করলে সমকালীন মানুষের কল্যাণ হয় – মঙ্গল হয় । ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আজ থেকে একশ বছরের ও বেশি সময় আগে বলেছিলেন _”বাদশাহী আমলের মুদ্রা _নবাবী আমলে চলে না।”__অর্থাৎ মানুষের উচিত যুগাবতারদের প্রচারিত যুগোপযোগী ধর্মমত গ্রহণ করে _সেই অনুযায়ী নিজেদের জীবন গঠন করা। কিন্তু আমাদের মধ্যে যে জড়তা বা জাড্যধর্ম রয়েছে _সেইটা আমাদেরকে কেবলই আটকে দেয় অথবা পিছন দিকে টানে।
আসলে আমরা সাধারণ মানুষেরা তাঁদের(মহাপুরুষদের) এই গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারি না, এটা যে মহাপ্রকৃতিরই গতি – সেটা বুঝতে পারি না ৷ আমরা তখনও সেই পিছনেই পড়ে থাকি – সেই পিছনটাকেই জাপটে আঁকড়ে ধরে থাকি, আর সেই জন্যই তো পারস্পারিক সংঘাতে লিপ্ত হই, নিজেরাই নিজেদের সাথে মারামারি করে মরি।
আমরা যদি একবার বুঝতে পারি যে, সেই সর্বশক্তিমান পরমেশ্বর (আল্লাহ, হরি,রাম, কালী, গড – ইত্যাদি যে নামই দেওয়া হোক)-ই পৃথিবীর মানুষের কল্যাণের জন্য বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন নামের মহাপুরুষদের পাঠিয়েছেন (অথবা তিনি-ই স্বয়ং শরীর নিয়েছেন) – তাহলে আর ঝগড়াটা কোথায় ? বরং সেই মহান সর্বশক্তিমান পরমেশ্বরের লীলা-বৈচিত্রের বহর দেখে – কতই না মজা পাওয়া যায়, কতই না আনন্দ করা যায়, কত বেশি বেশি করে সেই পরম করুণাময় পরমেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা, ভক্তি-শ্রদ্ধায় মস্তক অবনভ করা যায় ! কিন্তু হায় ! কি মূর্খ আমরা – এসব না করে আমরা শুধু লড়াই করেই মরছি – আনন্দ না করে দুঃখকে বরণ করে নিচ্ছি ! গুরুমহারাজ চরম দুংখেই বলতেন_”অবোধের গো-বধে আনন্দ !”
গুরু মহারাজ বলতেন – ” ভগবান বুদ্ধের দর্শনের পর স্বামী বিবেকানন্দ বুদ্ধ হয়ে গেলেন ! সত্যিই তো – ভগবান বুদ্ধের শিক্ষা_ “বহুজন হিতায় চ বহুজন সুখায় “-এর কাজই তো তিনি সারাজীবন ধরে করে গেলেন। _”আত্মনোমোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ” – এই শিক্ষার কথাও স্বামীজীর জীবনে প্রকটভাবে প্রতিফলিত, বারবার তাঁর কাজে ও কথায় এই কথার প্রতিফলন আমরা দেখতে পেয়েছি ৷
এই রকম ভাবনায় যদি আমরা অন্যান্য ধর্মমত প্রণেতা (অর্থাৎ ঈসামসি ও হযরত মুহাম্মদ প্রমুখরা)-দেরকেও বিচার করি, তাহলে কোনো ভেদ বা তফাৎ তো দেখতে পাবো না – বরং তাঁদের বহু কাজে, বহু কথায় সেই শাশ্বত-সনাতন বার্তার-ই প্রতিফলন দেখতে পাবো ! তাঁদের সবাইকেও আপন করে নিতে পারবো ।
অনেক মহামিলনের কথা হলো, এবার আমরা আবার ফিরে যাই গুরু মহারাজের বুদ্ধ বিষয়ক কথায় ! অবশ্য এতক্ষণ যে কথাগুলো বলা হলো – সে সবই গুরু মহারাজেরই কথার অংশবিশেষ ! গুরু মহারাজের সাথে যুক্ত হবার আগে তো আমরা ‘ভালো’ কিছুই জানতাম না, যা জানতাম সেগুলো সবই জীবন বিরোধী শিক্ষা – গুরু মহারাজই আমাদের হাত ধরে ধরে সঠিকভাবে কিভাবে ভাবতে হয়, কিভাবে হাঁটতে হয় – চলতে হয়, সেসব কিছুই শিখিয়েছিলেন ৷ আমরা শিখতে পারিনি সেটা আমাদের অপদার্থতা, আমাদের লজ্জা, আমাদের আহাম্মকি ! সেই মানুষটা তাঁর মহান জীবনের, তাঁর দেবদুর্লভ শরীরের একটু একটু করে ক্ষয় করে করে তাঁর প্রেম, তাঁর করুণা অকাতরে আমাদেরকে দিয়েছেন, আরো দিতে চেয়েছেন, দিয়ে দিয়ে নিঃশেষ হয়েছেন ! কিন্তু, আমরা বেশিরভাগেরা যে অনুপযুক্ত, আমরা অজ্ঞান-অন্ধকারে থাকায় স্বামী পরমানন্দের শিক্ষাকে আর জীবনে যোজনা করতে পারলাম কই ? এইরকম ভাবেই ভগবান বুদ্ধকে, ঈশামসিকে, হযরতকে, শ্রীচৈতন্যকে, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বা স্বামী বিবেকানন্দকে-ও আমরা ঠিকমতো গ্রহণ করতে পারিনি । সেইজন্যই প্রকৃতি মায়ের সর্বশ্রেষ্ঠ জীব মানুষের সৃষ্টি সমাজে এত বিরোধ, এত হিংসা, এত রক্তপাত !
ভগবান বুদ্ধের ‘জাতকের গল্পে’-র কথা আগে উল্লেখ করা হয়েছিল _এর সাদৃশ্য পাই গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের জীবনেও। উনি ওনার পূর্ব পূর্ব অনেক জীবনের কথা আমাদের কাছে বলেছিলেন। এর মধ্যে ওনার হাতিশরীরের কথা, বাল্টিক সাগরের তীরে জেলে_মেছুয়া শরীরের কথা, ক্ষত্রিয় কোন বীর সর্দার জীবনের কথা (যিনি তৎকালীন সমাজের পুরোহিত সমাজের এক কুপ্রথা দূর করেছিলেন, ওরা ছোট ছোট ছেলেদের জোর করে টেস্টিকল্ নষ্ট করে দিত _উনি সঙ্গী সাথীদের নিয়ে অস্ত্র হাতে ঐ অনুষ্ঠান ভেস্তে দিয়েছিলেন।) _এইরকম কত জীবনের কথা বলেছিলেন।
ভগবান বুদ্ধও পদ্মফুল ভালোবাসতেন_গুরুমহারাজও পদ্ম ভালোবাসতেন। পদ্মপ্রিয় বালক রবীন(গুরুমহারাজ) রাতের পর রাত জেগে কৃষ্ণদেবপুরের(গুরুমহারাজের জন্মভূমি) দীঘির জলে ভেসে ভেসে পদ্মকোরকের কাছে কাছে গিয়ে সেগুলির ফুটে ওঠা দেখতেন। সদ্য ফুটে ওঠা পদ্মফুলের সৌন্দর্য, তার অনাঘ্রাত সৌগন্ধের আনন্দ আস্বাদন করতেন স্বামী পরমানন্দ!! (ক্রমশঃ)