শ্রী শ্রী গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ ভগবান বুদ্ধ বিষয়ক অনেক কথা বলেছিলেন, তার সবগুলো না হলেও কিছু কিছু এখানে পরিবেশন করা হচ্ছে । ভগবান বুদ্ধের অন্তরঙ্গ শিষ্যদের মধ্যে আনন্দ বয়ঃকনিষ্ঠ এবং খুব শান্তশিষ্ট ও বিবেক-গুণসম্পন্ন ছিল । সেইজন্যে সমস্ত ভক্তরা মিলে ভগবান বুদ্ধের সেবা-শুশ্রূষা, দেখ-ভাল, খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি সমস্ত কিছুরই ভার দিয়েছিলে আনন্দ-র উপর । আনন্দ বয়সে ছোট হলেও খুবই বুদ্ধিমান ছিল – তাই সে এই ভার পাবার পর সরাসরি বুদ্ধের চরণে প্রণাম করে তাকে বলেছিল, ” ভগবন্ ! যে ভার আজ আমাকে দেওয়া হল, সে ভার আমি নিতে পারি, কিন্তু কয়েকটা বিষয়ে আপনাকে কথা দিতে হবে – যাতে আমার কোন অপরাধ হলেও তা ক্ষমা হয়ে যায় – মাফ হয়ে যায় ।” বুদ্ধ হাসতে হাসতে জানতে চাইলেন – ” কি কি ব্যাপারে অপরাধ হতে পারে – সেগুলি বলা হোক্ ।” আনন্দ বলেছিল – প্রথমটি হলো, যেহেতু বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা সারাদিনে একবার মাত্র আহার্য গ্রহণ করে থাকে, তাই বুদ্ধকে মধ্যাহ্নভোজন নিবেদন করার সময় বয়ঃকনিষ্ঠ আনন্দ-র-ও খালি পেটে থাকাই স্বাভাবিক । ফলে এইসময় গুরুকে নিবেদন করা আহার্য দেখে তার মনে লোভ জাগতে পারে – এই অপরাধ যেন ক্ষমা হয় !
ভগবান বুদ্ধ আনন্দ-কে এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করে দ্বিতীয় কারণ জানতে চাইলেন । আনন্দ বলেছিল – তার শরীরে ঘুমের প্রকোপ খুব বেশি (গুরু মহারাজ বলেছিলেন, যে কৈশোর থেকে যৌবনে পা দেবার সময়ে ছেলে বা মেয়েদের শরীরে প্রচন্ড ঘুমের প্রভাব থাকে ৷ কারণ এই সময়ে মানব শরীরের বিভিন্ন endocrine gland গুলি একসঙ্গে ক্রিয়াশীল হয়ে ওঠায় এই কাণ্ডটি হয় ৷), সুতরাং যদি অসময়ে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য যদি সে সেবাকাজ ঠিকমতো না করতে পারে – সেই অপরাধও যেন ক্ষমা হয় ৷ ভগবান বুদ্ধ সে প্রার্থনাও মঞ্জুর করেছিলেন । এইভাবে যে যে কারণে সেবা অপরাধ হোতে পারে _সেগুলি থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে আধ্যাত্মিক গুরুগনের সেবকদের জন্য এক আদর্শ পথ নির্দেশ করে গেছিলেন ভগবানের প্রিয় শিষ্য আনন্দ ।
গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” অনেক পরবর্তীতে বৈষ্ণবদের মধ্যে বিশেষতঃ গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের মধ্যে (অর্থাৎ যারা চৈতন্য মহাপ্রভুর পরবর্তী পরম্পরার বৈষ্ণব) এই ‘অপরাধ’- ব্যাপারটি খুবই প্রকট ভাবে দেখা দিয়েছে । বৈষ্ণব অপরাধ, সেবা অপরাধ, এই অপরাধ – সেই অপরাধ ! স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন – মুখে ‘পাপ’- ‘পাপ’ বললে সেই ব্যক্তি নিজেই ‘পাপী’ হয়ে যায় । তাই সবেতেই ‘অপরাধ’ না দেখে আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে ভক্তপ্রবর আনন্দের শিক্ষা জীবনে গ্রহণ করে নেওয়াই তো ভালো ! ” দেবতারে প্রিয় করি – প্রিয়েরে দেবতা !”– এটাই তো ভারতবর্ষের মানুষের সহজ ভাব (ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের মানুষের এই গুন থাক বা না থাক, বাঙালিদের মধ্যে এই বিশেষ গুণটি খুবই রয়েছে, যারা ঈশ্বরকে- ভগবানকে- দেবতাকে তার প্রিয় হিসাবে মেনে নিয়ে তাঁর পূজা বা সেবা করতে পারে৷) ! তাই ঈশ্বরের পূজা করতে গিয়ে, সেবা-অর্চনা করতে গিয়ে – সদাই যদি অপরাধের ভয় থাকে, তাহলে কি অন্তরে প্রেম জাগবে না সেবা-পূজায় নিষ্ঠা আসবে ?”
ভগবান বুদ্ধের প্রচারিত শিক্ষা তৎকালীন সাধারণ মানুষ প্রথমেই খুব বেশি বেশি করে গ্রহণ করেছিল ৷ সেই সময়কার ইতিহাসে প্রেক্ষাপটের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যাবে – তখন বৈদিক যাগ-যজ্ঞ, মন্ত্রোচ্চারণ এইসব চলছে ব্রাহ্মণ-প্রধান সমাজে ৷ রাজন্যবর্গের সঙ্গে ব্রাহ্মণ সমাজের একটা দৃশ্য বা অদৃশ্য বন্ধন তৈরী হয়ে গিয়েছিল । কেউ কাউকে ডিস্টার্ব করবে না – বরং উভয়ে উভয়কে সাহায্য করবে এবং সমাজের বৃহত্তর অংশকে শাসন করা বা শোষণ করার সুবিধা ভোগ করবে ।
তৎকালীন সমাজের সাধারণ মানুষের এই ধরনের চরম দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় শরীর নিয়েছিলেন ভগবান বুদ্ধ ৷ রাজ পরিবারের একমাত্র সন্তান হিসাবে জন্মগ্রহণ করেও রাজ্যপাট, সুন্দরী স্ত্রী (গোপা বা যশোধরা) এবং শিশুপুত্র রাহুলকে ত্যাগ করে উনি ত্যাগব্রত অবলম্বন করলেন । ভগবান বুদ্ধের আগে পর্যন্ত বৈদিক চতুরাশ্রম প্রথা সমাজে চালু ছিল অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস এই চারটি জীবনচর্যা ছিল ৷ শৈশব গৃহে কাটানোর পর কৈশোর থেকে যৌবনকাল অর্থাৎ ৭/৮ বছর বয়স থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত গুরুগৃহে পঠন-পাঠন-সংযম-সাধন-শিক্ষা-দীক্ষা হোত ৷ “পঞ্চাশোর্ধে বনং ব্রজেৎ”। অর্থাৎ পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত গার্হস্থ্য জীবন যাপন করে উপযুক্ত ব্যক্তিরা বা ইচ্ছুক ব্যক্তিরা ‘বনে’- অর্থাৎ তপোবনে – যেখানে ‘গুরুকুল আশ্রম গুলি রয়েছে – সেখানে Join করতে পারতো। সেখানে তারা যে – যে বিষয়ে expart, সে – সেই বিষয়ে ওখানকার ছাত্রদের শিক্ষা দিতো । বানপ্রস্থ আশ্রমে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই যোগদান করার বিধান ছিল ৷ গুরুমহারাজ-ও বলেছিলেন – “বনগ্রাম আশ্রমে এমনটাই হবে । এখানেও যারা সেবাকাজ করবে বা শিক্ষা দেবে, তারা সবাই স্বেচ্ছায় এবং বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করবে, কাজকে ভালোবেসে কাজ করবে । এদের অনেকে কম বয়সে ব্রহ্মচারী হিসাবে আসবে, আবার অনেক গৃহস্থী এখানে আসবে ‘বানপ্রস্থী’ হিসাবে ৷ তবে স্ত্রী থাকলে স্বামী-স্ত্রী একসাথে ‘বানপ্রস্থ’ অবলম্বন করাই প্রশস্ত – অন্যথায় উভয়েরই আধ্যাত্মিক অগ্রগতি ব্যাহত হয় ।”
যাইহোক কথা হচ্ছিল ভগবান বুদ্ধের সময়কার কথায়, তাই আমরা সেখানেই ফিরে আসি । ভগবান বুদ্ধ বেদে উল্লিখিত এই চতুরাশ্রম প্রথা ভেঙে উপযুক্ত তরুণ-যুবকদের সরাসরি ব্রহ্মচর্য বা সন্ন্যাস সংস্কার দিয়ে দিয়েছিলেন (সেই প্রথাই এখনো চলছে), তিনি ব্রাহ্মণ্য প্রথার মাথায় মুগুর মেরে সমাজের শূদ্রবর্ণ সহ সকলকেই বেদপাঠের অধিকার, পূজা-পাঠের অধিকার দিয়ে দিয়েছিলেন ৷
সমাজে ব্রাহ্মণদের একচেটিয়া পূজার্চনা, হোম-যজ্ঞের অধিকার এক ধাক্কায় কেড়ে নিয়েছিলেন ভগবান বুদ্ধ ! সাধারণ মানুষ এতদিন সমাজের এক কোণে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল! তারা যখন সমস্ত রকম কাজের অধিকার লাভ করল – তখন সমস্ত জড়তা-ভয় কাটিয়ে তারা দলে দলে বুদ্ধের চরণে শরণ নিতে লাগলো ৷ এই ভাবেই বুদ্ধপরবর্তী সময়ে গোটা ভারতবর্ষে একবার বৌদ্ধ-প্লাবন হয়েছিল, আর সেই প্লাবনে ভেসে গিয়েছিল ব্রাহ্মণ্যবাদের একচেটিয়া অধিকার ! আর এই সমস্ত কারনেই ভগবান বুদ্ধকে তৎকালীন সমাজে “বেদবিরোধী” বলে অভিহিত করা হয়েছিল ! [ক্রমশঃ]
ভগবান বুদ্ধ আনন্দ-কে এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করে দ্বিতীয় কারণ জানতে চাইলেন । আনন্দ বলেছিল – তার শরীরে ঘুমের প্রকোপ খুব বেশি (গুরু মহারাজ বলেছিলেন, যে কৈশোর থেকে যৌবনে পা দেবার সময়ে ছেলে বা মেয়েদের শরীরে প্রচন্ড ঘুমের প্রভাব থাকে ৷ কারণ এই সময়ে মানব শরীরের বিভিন্ন endocrine gland গুলি একসঙ্গে ক্রিয়াশীল হয়ে ওঠায় এই কাণ্ডটি হয় ৷), সুতরাং যদি অসময়ে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য যদি সে সেবাকাজ ঠিকমতো না করতে পারে – সেই অপরাধও যেন ক্ষমা হয় ৷ ভগবান বুদ্ধ সে প্রার্থনাও মঞ্জুর করেছিলেন । এইভাবে যে যে কারণে সেবা অপরাধ হোতে পারে _সেগুলি থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিয়েছিলেন এবং পরবর্তীকালে আধ্যাত্মিক গুরুগনের সেবকদের জন্য এক আদর্শ পথ নির্দেশ করে গেছিলেন ভগবানের প্রিয় শিষ্য আনন্দ ।
গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” অনেক পরবর্তীতে বৈষ্ণবদের মধ্যে বিশেষতঃ গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের মধ্যে (অর্থাৎ যারা চৈতন্য মহাপ্রভুর পরবর্তী পরম্পরার বৈষ্ণব) এই ‘অপরাধ’- ব্যাপারটি খুবই প্রকট ভাবে দেখা দিয়েছে । বৈষ্ণব অপরাধ, সেবা অপরাধ, এই অপরাধ – সেই অপরাধ ! স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন – মুখে ‘পাপ’- ‘পাপ’ বললে সেই ব্যক্তি নিজেই ‘পাপী’ হয়ে যায় । তাই সবেতেই ‘অপরাধ’ না দেখে আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে ভক্তপ্রবর আনন্দের শিক্ষা জীবনে গ্রহণ করে নেওয়াই তো ভালো ! ” দেবতারে প্রিয় করি – প্রিয়েরে দেবতা !”– এটাই তো ভারতবর্ষের মানুষের সহজ ভাব (ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের মানুষের এই গুন থাক বা না থাক, বাঙালিদের মধ্যে এই বিশেষ গুণটি খুবই রয়েছে, যারা ঈশ্বরকে- ভগবানকে- দেবতাকে তার প্রিয় হিসাবে মেনে নিয়ে তাঁর পূজা বা সেবা করতে পারে৷) ! তাই ঈশ্বরের পূজা করতে গিয়ে, সেবা-অর্চনা করতে গিয়ে – সদাই যদি অপরাধের ভয় থাকে, তাহলে কি অন্তরে প্রেম জাগবে না সেবা-পূজায় নিষ্ঠা আসবে ?”
ভগবান বুদ্ধের প্রচারিত শিক্ষা তৎকালীন সাধারণ মানুষ প্রথমেই খুব বেশি বেশি করে গ্রহণ করেছিল ৷ সেই সময়কার ইতিহাসে প্রেক্ষাপটের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যাবে – তখন বৈদিক যাগ-যজ্ঞ, মন্ত্রোচ্চারণ এইসব চলছে ব্রাহ্মণ-প্রধান সমাজে ৷ রাজন্যবর্গের সঙ্গে ব্রাহ্মণ সমাজের একটা দৃশ্য বা অদৃশ্য বন্ধন তৈরী হয়ে গিয়েছিল । কেউ কাউকে ডিস্টার্ব করবে না – বরং উভয়ে উভয়কে সাহায্য করবে এবং সমাজের বৃহত্তর অংশকে শাসন করা বা শোষণ করার সুবিধা ভোগ করবে ।
তৎকালীন সমাজের সাধারণ মানুষের এই ধরনের চরম দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় শরীর নিয়েছিলেন ভগবান বুদ্ধ ৷ রাজ পরিবারের একমাত্র সন্তান হিসাবে জন্মগ্রহণ করেও রাজ্যপাট, সুন্দরী স্ত্রী (গোপা বা যশোধরা) এবং শিশুপুত্র রাহুলকে ত্যাগ করে উনি ত্যাগব্রত অবলম্বন করলেন । ভগবান বুদ্ধের আগে পর্যন্ত বৈদিক চতুরাশ্রম প্রথা সমাজে চালু ছিল অর্থাৎ ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস এই চারটি জীবনচর্যা ছিল ৷ শৈশব গৃহে কাটানোর পর কৈশোর থেকে যৌবনকাল অর্থাৎ ৭/৮ বছর বয়স থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত গুরুগৃহে পঠন-পাঠন-সংযম-সাধন-শিক্ষা-দীক্ষা হোত ৷ “পঞ্চাশোর্ধে বনং ব্রজেৎ”। অর্থাৎ পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত গার্হস্থ্য জীবন যাপন করে উপযুক্ত ব্যক্তিরা বা ইচ্ছুক ব্যক্তিরা ‘বনে’- অর্থাৎ তপোবনে – যেখানে ‘গুরুকুল আশ্রম গুলি রয়েছে – সেখানে Join করতে পারতো। সেখানে তারা যে – যে বিষয়ে expart, সে – সেই বিষয়ে ওখানকার ছাত্রদের শিক্ষা দিতো । বানপ্রস্থ আশ্রমে স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই যোগদান করার বিধান ছিল ৷ গুরুমহারাজ-ও বলেছিলেন – “বনগ্রাম আশ্রমে এমনটাই হবে । এখানেও যারা সেবাকাজ করবে বা শিক্ষা দেবে, তারা সবাই স্বেচ্ছায় এবং বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করবে, কাজকে ভালোবেসে কাজ করবে । এদের অনেকে কম বয়সে ব্রহ্মচারী হিসাবে আসবে, আবার অনেক গৃহস্থী এখানে আসবে ‘বানপ্রস্থী’ হিসাবে ৷ তবে স্ত্রী থাকলে স্বামী-স্ত্রী একসাথে ‘বানপ্রস্থ’ অবলম্বন করাই প্রশস্ত – অন্যথায় উভয়েরই আধ্যাত্মিক অগ্রগতি ব্যাহত হয় ।”
যাইহোক কথা হচ্ছিল ভগবান বুদ্ধের সময়কার কথায়, তাই আমরা সেখানেই ফিরে আসি । ভগবান বুদ্ধ বেদে উল্লিখিত এই চতুরাশ্রম প্রথা ভেঙে উপযুক্ত তরুণ-যুবকদের সরাসরি ব্রহ্মচর্য বা সন্ন্যাস সংস্কার দিয়ে দিয়েছিলেন (সেই প্রথাই এখনো চলছে), তিনি ব্রাহ্মণ্য প্রথার মাথায় মুগুর মেরে সমাজের শূদ্রবর্ণ সহ সকলকেই বেদপাঠের অধিকার, পূজা-পাঠের অধিকার দিয়ে দিয়েছিলেন ৷
সমাজে ব্রাহ্মণদের একচেটিয়া পূজার্চনা, হোম-যজ্ঞের অধিকার এক ধাক্কায় কেড়ে নিয়েছিলেন ভগবান বুদ্ধ ! সাধারণ মানুষ এতদিন সমাজের এক কোণে অবহেলিত হয়ে পড়েছিল! তারা যখন সমস্ত রকম কাজের অধিকার লাভ করল – তখন সমস্ত জড়তা-ভয় কাটিয়ে তারা দলে দলে বুদ্ধের চরণে শরণ নিতে লাগলো ৷ এই ভাবেই বুদ্ধপরবর্তী সময়ে গোটা ভারতবর্ষে একবার বৌদ্ধ-প্লাবন হয়েছিল, আর সেই প্লাবনে ভেসে গিয়েছিল ব্রাহ্মণ্যবাদের একচেটিয়া অধিকার ! আর এই সমস্ত কারনেই ভগবান বুদ্ধকে তৎকালীন সমাজে “বেদবিরোধী” বলে অভিহিত করা হয়েছিল ! [ক্রমশঃ]