[ আগের দিন ১৯৯০ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধ এবং এই সংক্রান্ত গুরুমহারাজের নানা বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেছিলাম । আজকে এই ব্যাপারে ন’কাকা কি বলেছিলেন সেই সব কথা হোক।]
গুরু মহারাজের কিছু কথা বলা হোলো, এবার ন’কাকার সাথে একদিন এইসব উপসাগরীয় যুদ্ধ, সাদ্দাম হোসেন, কর্নেল গদ্দাফি, আয়াতুল্লা খোমেইনী – এইসব নিয়ে কথা হচ্ছিলো ! ন’কাকা প্রতিদিন সকালে বনগ্রাম আশ্রমে গিয়ে খবরের কাগজটা উল্টেপাল্টে পড়তেন, তাছাড়া উনি সকাল-সন্ধ্যেয় রেডিওর খবরটাও শুনতেন(ন’কাকার বাড়িতে TV এসেছে মাত্র কয়েক বছর আগে।) ৷ তাই দেশের এবং আন্তর্জাতিক প্রায় সব খবরই উনি রাখতেন । সুতরাং ন’কাকার সঙ্গে বর্তমান কালের কোনো current topic নিয়ে আলোচনা করতে কোনো অসুবিধা হতো না ৷ সেদিনও উপসাগরীয় যুদ্ধ নিয়ে-ই আলোচনা চলছিলো ৷ আলোচনায় অনেকেই অংশগ্রহণ করেছিল ফলে সেটা চলেছিলো অনেকক্ষণ । ন’কাকা তো মজাদার মানুষ – আলোচনা শুরু করে দিয়েই নিজে চুপ করে গিয়ে অপরকে কথা বলায় উদ্বুদ্ধ করতেন ! ফলে আলোচনা শুরুর কিছুক্ষণ পর দেখা যেত ন’কাকা চুপচাপ, আর বাকিরা বকবক্ করেই যাচ্ছে।
সেদিনও তাই হচ্ছিলো –এবার ন’কাকা উঠে যাবেন (আলোচনাটা চলছিল বনগ্রাম আশ্রমে মুরারী মহারাজের অফিস ঘরে, সেখানে সকালের দিকে অনেকেই থাকে ! ন’কাকা রোজ এসে এক কাপ চা ও বিস্কুট খেতেন, খবরের কাগজটা চোখ বোলাতেন, আশ্রমের ফুলবাগান থেকে ৺রী মা করুণাময়ীর পূজার জন্য কিছু ফুল নিয়ে সকাল গ্রীষ্মকালে ন’টা এবং শীতকালে সাড়ে ন’টার মধ্যেই মায়ের পূজার জন্য বাড়ি চলে যেতেন ৷) কারণ বাড়িতে পূজার তাড়া রয়েছে – ফলে ওই উত্থিত আলোচনাটা শেষ করতে হবে – তাই সেটা ন’কাকা করলেন একটা মাত্র বাক্যে ! ফুলের প্যাকেটটা নিয়ে উঠতে উঠতে শুধু বললেন – ” হ্যাঁ – হ্যাঁ – দ্যাখো না কি হয় ! ওই তেল দিয়েই ওদের তেল মারবে !”
আমরা যারা ওখানে বসে ছিলাম, সবাই নিজের নিজের কথা থামিয়ে ওনার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠলাম, আর সেই ফাঁকে উনি উঠে বাইরে গিয়ে মুরারী মহারাজের সাথে কথা বলতে শুরু করে দিলেন । সাধারণত আমি ওনার সাথে সাথে চরৈবেতি কার্যালয় পর্যন্ত অথবা আর একটু দূর (এখন যেখানে নগেনদের দোকান বা হসপিটাল) পর্যন্ত যেতাম ৷ তাই সেদিনও ওনার সাথে যাবার জন্য উঠে পড়েছিলাম এবং যেতে যেতেই কথাটা আর একবার তুলেছিলাম – “ন’কাকা ! ওই রকম কথা বললেন কেন – ‘তেল দিয়ে তেল মারবে’?” ন’কাকা সেদিন গুরুমহারাজের করা আলোচনার-ই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন । বলেছিলেন – ” বাবা ! ওই যে বিশাল তেলের ভান্ডার রয়েছে – আরব সাগরের নিচে ! এইটার দখল নিয়েই লড়াই ! গোটা বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে ওই পেট্রোডলার – তাহলে, যার শক্তি আছে সে তো পৃথিবীর সব সম্পদের অধিকার চাইবেই ৷ ভারতীয় ঋষিরা তো বলেই গেছে – “বীরভোগ্যা বসুন্ধরা”! খবরের কাগজে যে সব খবর বেরুচ্ছে – সেগুলো তো দেখছি, তাতেই মনে হচ্ছে – পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলো সহজে এদেরকে ছাড়বে না – একে একে সব দখল নিয়ে নেবে, আর না পারলেও মরণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে ! দেশ দখল ওদের উদ্দেশ্য নয়, ওদের লক্ষ্য তেলের দিকে !”
সেদিন আমি আরও একবার বুঝেছিলাম গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের সাথে ন’কাকার একটা অদৃশ্য বন্ধন কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই রয়েছে ! না হোলে যে কোনো ব্যাপারে আলোচনা উঠলে উনি হুবহু একই কথা বলে দেন কি করে ! একটু আগে(আগের এপিসোডে) যে একজন মহারাজের কথা উল্লেখ করা হোলো অর্থাৎ যিনি গুরু মহারাজের ঘরে তার অন্তরের ব্যথা, হৃদয়ের কথা নিবেদন করছিলেন ___সেখানেও আমরা দেখেছি , ন’কাকা বাইরে থেকে(মুরারী মহারাজের অফিস ঘর) ছুটে যাচ্ছিলেন সেই কাতর আহ্বান অনুসরণ করে । এই ঘটনা থেকে আমরা সেই একাত্মতারই প্রমাণ পাই ৷ গুরু মহারাজের শরীর ছেড়ে দেবার পরেও অনেকবার ন’কাকাকে বলতে শুনেছি – ” কাল রাতে পরমানন্দ এসেছিল !” এই ব্যাপারটা অবশ্য আমি এখনও ঠিক বুঝতে পারি না, তবু এই সব ঘটনা থেকে ন’কাকার সাথে গুরু মহারাজের সতত যোগাযোগের কথাটা ঠিকই বুঝতে পারি ! … [ক্রমশঃ]
গুরু মহারাজের কিছু কথা বলা হোলো, এবার ন’কাকার সাথে একদিন এইসব উপসাগরীয় যুদ্ধ, সাদ্দাম হোসেন, কর্নেল গদ্দাফি, আয়াতুল্লা খোমেইনী – এইসব নিয়ে কথা হচ্ছিলো ! ন’কাকা প্রতিদিন সকালে বনগ্রাম আশ্রমে গিয়ে খবরের কাগজটা উল্টেপাল্টে পড়তেন, তাছাড়া উনি সকাল-সন্ধ্যেয় রেডিওর খবরটাও শুনতেন(ন’কাকার বাড়িতে TV এসেছে মাত্র কয়েক বছর আগে।) ৷ তাই দেশের এবং আন্তর্জাতিক প্রায় সব খবরই উনি রাখতেন । সুতরাং ন’কাকার সঙ্গে বর্তমান কালের কোনো current topic নিয়ে আলোচনা করতে কোনো অসুবিধা হতো না ৷ সেদিনও উপসাগরীয় যুদ্ধ নিয়ে-ই আলোচনা চলছিলো ৷ আলোচনায় অনেকেই অংশগ্রহণ করেছিল ফলে সেটা চলেছিলো অনেকক্ষণ । ন’কাকা তো মজাদার মানুষ – আলোচনা শুরু করে দিয়েই নিজে চুপ করে গিয়ে অপরকে কথা বলায় উদ্বুদ্ধ করতেন ! ফলে আলোচনা শুরুর কিছুক্ষণ পর দেখা যেত ন’কাকা চুপচাপ, আর বাকিরা বকবক্ করেই যাচ্ছে।
সেদিনও তাই হচ্ছিলো –এবার ন’কাকা উঠে যাবেন (আলোচনাটা চলছিল বনগ্রাম আশ্রমে মুরারী মহারাজের অফিস ঘরে, সেখানে সকালের দিকে অনেকেই থাকে ! ন’কাকা রোজ এসে এক কাপ চা ও বিস্কুট খেতেন, খবরের কাগজটা চোখ বোলাতেন, আশ্রমের ফুলবাগান থেকে ৺রী মা করুণাময়ীর পূজার জন্য কিছু ফুল নিয়ে সকাল গ্রীষ্মকালে ন’টা এবং শীতকালে সাড়ে ন’টার মধ্যেই মায়ের পূজার জন্য বাড়ি চলে যেতেন ৷) কারণ বাড়িতে পূজার তাড়া রয়েছে – ফলে ওই উত্থিত আলোচনাটা শেষ করতে হবে – তাই সেটা ন’কাকা করলেন একটা মাত্র বাক্যে ! ফুলের প্যাকেটটা নিয়ে উঠতে উঠতে শুধু বললেন – ” হ্যাঁ – হ্যাঁ – দ্যাখো না কি হয় ! ওই তেল দিয়েই ওদের তেল মারবে !”
আমরা যারা ওখানে বসে ছিলাম, সবাই নিজের নিজের কথা থামিয়ে ওনার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠলাম, আর সেই ফাঁকে উনি উঠে বাইরে গিয়ে মুরারী মহারাজের সাথে কথা বলতে শুরু করে দিলেন । সাধারণত আমি ওনার সাথে সাথে চরৈবেতি কার্যালয় পর্যন্ত অথবা আর একটু দূর (এখন যেখানে নগেনদের দোকান বা হসপিটাল) পর্যন্ত যেতাম ৷ তাই সেদিনও ওনার সাথে যাবার জন্য উঠে পড়েছিলাম এবং যেতে যেতেই কথাটা আর একবার তুলেছিলাম – “ন’কাকা ! ওই রকম কথা বললেন কেন – ‘তেল দিয়ে তেল মারবে’?” ন’কাকা সেদিন গুরুমহারাজের করা আলোচনার-ই পুনরাবৃত্তি ঘটালেন । বলেছিলেন – ” বাবা ! ওই যে বিশাল তেলের ভান্ডার রয়েছে – আরব সাগরের নিচে ! এইটার দখল নিয়েই লড়াই ! গোটা বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে ওই পেট্রোডলার – তাহলে, যার শক্তি আছে সে তো পৃথিবীর সব সম্পদের অধিকার চাইবেই ৷ ভারতীয় ঋষিরা তো বলেই গেছে – “বীরভোগ্যা বসুন্ধরা”! খবরের কাগজে যে সব খবর বেরুচ্ছে – সেগুলো তো দেখছি, তাতেই মনে হচ্ছে – পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলো সহজে এদেরকে ছাড়বে না – একে একে সব দখল নিয়ে নেবে, আর না পারলেও মরণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাবে ! দেশ দখল ওদের উদ্দেশ্য নয়, ওদের লক্ষ্য তেলের দিকে !”
সেদিন আমি আরও একবার বুঝেছিলাম গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের সাথে ন’কাকার একটা অদৃশ্য বন্ধন কোথাও না কোথাও নিশ্চয়ই রয়েছে ! না হোলে যে কোনো ব্যাপারে আলোচনা উঠলে উনি হুবহু একই কথা বলে দেন কি করে ! একটু আগে(আগের এপিসোডে) যে একজন মহারাজের কথা উল্লেখ করা হোলো অর্থাৎ যিনি গুরু মহারাজের ঘরে তার অন্তরের ব্যথা, হৃদয়ের কথা নিবেদন করছিলেন ___সেখানেও আমরা দেখেছি , ন’কাকা বাইরে থেকে(মুরারী মহারাজের অফিস ঘর) ছুটে যাচ্ছিলেন সেই কাতর আহ্বান অনুসরণ করে । এই ঘটনা থেকে আমরা সেই একাত্মতারই প্রমাণ পাই ৷ গুরু মহারাজের শরীর ছেড়ে দেবার পরেও অনেকবার ন’কাকাকে বলতে শুনেছি – ” কাল রাতে পরমানন্দ এসেছিল !” এই ব্যাপারটা অবশ্য আমি এখনও ঠিক বুঝতে পারি না, তবু এই সব ঘটনা থেকে ন’কাকার সাথে গুরু মহারাজের সতত যোগাযোগের কথাটা ঠিকই বুঝতে পারি ! … [ক্রমশঃ]