গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন – কিছু হারিয়ে কিছু পাবার কথা ! আমাদের বাঙ্গালী সমাজের উদাহরণ টেনে উনি বলেছিলেন – “একটা মেয়ের যখন বিবাহ হয়, তখন সে তার আজন্ম-পরিচিত পরিবার হারিয়ে আবার নতুন একটা পরিবার পায় – স্বামী পায় – পুত্র-কন্যাদের পায়। আর কিছুদিনের মধ্যেই ওই মেয়েটি নতুন সংসারে এমনভাবে নিজেকে Set করে নেয় যে বাপের বাড়ি এলেও বেশিদিন থাকতে চায় না ! মাকে বলে – ‘আমার কি আর থাকবার আছে মা ! ওখানে শশুর-শাশুড়ির আমি না থাকলে কত অসুবিধা, তোমার জামাই নিজে কিছুই করতে পারে না – সব আমাকে হাতে হাতে ধরিয়ে দিতে হয়_ ছেলে/মেয়েটার পড়াশোনা কামাই হচ্ছে – তাই আমাকে চলে যেতেই হবে !’
দ্যাখো, ছোটবেলা থেকে যে বাড়িটায় তার জন্ম হলো – যাদেরকে আপন জেনে সে বড় হল (কারণ তার বাঁচা এবং বাড়ার সমস্ত রসদ সেই মেয়েটি তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই পেয়েছে) – সেই বাড়িটি বা পরিবারটিতে মেয়েটি একদিন বেশি থাকতে চাইছে না ! – এইভাবেই নতুন কিছু আসে পুরাতনকে অতিক্রম করেই !”
বর্তমানের মানবসমাজও এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে আরও উন্নততর সমাজ ব্যবস্থায় প্রবেশ করবে ! তারই ভাঙ্গা-গড়ার খেলা শুরু হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব জুড়ে ! সব কাজই তো তাঁর কাজ – এ জগতে আলাদা আর কি আছে ? আমি, আমার ‘অহংকার’ দিয়ে জগৎ থেকে নিজেকে আলাদা করে রেখে নিজেই কর্তা সেজে বসে আছি – তাই আলাদা করে আমি ভাবছি এটা আমার কাজ, এটা আমার দল, এটা আমার সম্প্রদায়, আমি অমুক জাতির, আমি অমুক গোষ্ঠীর ! প্রকৃতপক্ষে তো এসব ভেদ কিছুই নাই ! ঈশ্বরের সৃষ্টিতে বৈচিত্র্য রয়েছে – ভেদ তো নাই !
গুরু মহারাজ দুটো ইংরেজি শব্দের পার্থক্য করে গিয়েছিলেন – Variety এবং Diversity ! উনি বলেছিলেন প্রকৃতিতে diversity রয়েছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কোনো variety নাই ! Variety যেটা প্রতীয়মান হচ্ছে – সেটাই অজ্ঞানতা ! জ্ঞান হলে – নর্দমার জল এবং গঙ্গার জল দুটোই সমান ! কোন মহাপুরুষ কখনোই পাপী-তাপী, অস্পৃশ্য, অন্য জাত বা ধর্মের মানুষ বলে কাউকে দূরে সরিয়ে রাখেননি তো ! বরং তাদেরকেই বেশি বেশি করে কাছে টেনে নিয়েছেন – তাদেরকেই অপার্থিব প্রেমের স্পর্শ দিয়ে জন্ম-চক্রের অনেকটা পথ এগিয়ে দিয়েছেন !
কথা হচ্ছিল ‘কাজ’ নিয়ে ৷ দেখুন – পৃথিবীতে কাজ কিন্তু একটাই হয়ে চলেছে, আর সেই কাজ শুধু পৃথিবীগ্রহেই নয় সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ড জুড়ে হয়ে চলেছে ! কি সেই ‘কাজ’ ! “ঈশ্বরের ইচ্ছার রূপদান” ! এই সমগ্র জগৎ-সংসার একদিন সেই বিশ্ববিরাটরূপ ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই যাত্রা শুরু করেছিল, এখন তার বিস্তার period চলছে, এরপর হয়তো সাময়িক একটা স্থিতিকাল আসবে – তারপর শুরু হবে পশ্চাৎগতি অর্থাৎ সংকোচন ! এই সংকোচন শেষ হলেই আবার বিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড পুনরায় একটা বিন্দুতে পরিণত হবে । তারপর আবার তার মধ্যে bang হবে – আবার শুরু হবে সৃষ্টির পথে যাত্রা – বিস্তারের ক্রম !
ব্যাপারটা কি বোঝা গেল ? এই কাজটাই হয়ে চলেছে – তাই মহাজ্ঞানীরা সবসময় বলে থাকেন – “প্রভু তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হউক !” আর আমরা মহা-অজ্ঞানীরা সবসময় সময় বলে থাকি – “আমার ইচ্ছা পূর্ণ হউক !” কি আহাম্মকি !! আর এই কম্মো করতে গিয়েই গোটা পৃথিবীব্যাপী ঝামেলা-ঝন্ঝাট, অশান্তি-মারামারি, অকারণ রেষারেষি-রক্তপাত! কবে যে আমরা বড় হবো__তবে তো পৃথিবী শান্ত হবে।।… [ক্রমশঃ]
দ্যাখো, ছোটবেলা থেকে যে বাড়িটায় তার জন্ম হলো – যাদেরকে আপন জেনে সে বড় হল (কারণ তার বাঁচা এবং বাড়ার সমস্ত রসদ সেই মেয়েটি তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেই পেয়েছে) – সেই বাড়িটি বা পরিবারটিতে মেয়েটি একদিন বেশি থাকতে চাইছে না ! – এইভাবেই নতুন কিছু আসে পুরাতনকে অতিক্রম করেই !”
বর্তমানের মানবসমাজও এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে আরও উন্নততর সমাজ ব্যবস্থায় প্রবেশ করবে ! তারই ভাঙ্গা-গড়ার খেলা শুরু হয়ে গেছে গোটা বিশ্ব জুড়ে ! সব কাজই তো তাঁর কাজ – এ জগতে আলাদা আর কি আছে ? আমি, আমার ‘অহংকার’ দিয়ে জগৎ থেকে নিজেকে আলাদা করে রেখে নিজেই কর্তা সেজে বসে আছি – তাই আলাদা করে আমি ভাবছি এটা আমার কাজ, এটা আমার দল, এটা আমার সম্প্রদায়, আমি অমুক জাতির, আমি অমুক গোষ্ঠীর ! প্রকৃতপক্ষে তো এসব ভেদ কিছুই নাই ! ঈশ্বরের সৃষ্টিতে বৈচিত্র্য রয়েছে – ভেদ তো নাই !
গুরু মহারাজ দুটো ইংরেজি শব্দের পার্থক্য করে গিয়েছিলেন – Variety এবং Diversity ! উনি বলেছিলেন প্রকৃতিতে diversity রয়েছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কোনো variety নাই ! Variety যেটা প্রতীয়মান হচ্ছে – সেটাই অজ্ঞানতা ! জ্ঞান হলে – নর্দমার জল এবং গঙ্গার জল দুটোই সমান ! কোন মহাপুরুষ কখনোই পাপী-তাপী, অস্পৃশ্য, অন্য জাত বা ধর্মের মানুষ বলে কাউকে দূরে সরিয়ে রাখেননি তো ! বরং তাদেরকেই বেশি বেশি করে কাছে টেনে নিয়েছেন – তাদেরকেই অপার্থিব প্রেমের স্পর্শ দিয়ে জন্ম-চক্রের অনেকটা পথ এগিয়ে দিয়েছেন !
কথা হচ্ছিল ‘কাজ’ নিয়ে ৷ দেখুন – পৃথিবীতে কাজ কিন্তু একটাই হয়ে চলেছে, আর সেই কাজ শুধু পৃথিবীগ্রহেই নয় সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ড জুড়ে হয়ে চলেছে ! কি সেই ‘কাজ’ ! “ঈশ্বরের ইচ্ছার রূপদান” ! এই সমগ্র জগৎ-সংসার একদিন সেই বিশ্ববিরাটরূপ ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই যাত্রা শুরু করেছিল, এখন তার বিস্তার period চলছে, এরপর হয়তো সাময়িক একটা স্থিতিকাল আসবে – তারপর শুরু হবে পশ্চাৎগতি অর্থাৎ সংকোচন ! এই সংকোচন শেষ হলেই আবার বিশাল বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড পুনরায় একটা বিন্দুতে পরিণত হবে । তারপর আবার তার মধ্যে bang হবে – আবার শুরু হবে সৃষ্টির পথে যাত্রা – বিস্তারের ক্রম !
ব্যাপারটা কি বোঝা গেল ? এই কাজটাই হয়ে চলেছে – তাই মহাজ্ঞানীরা সবসময় বলে থাকেন – “প্রভু তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হউক !” আর আমরা মহা-অজ্ঞানীরা সবসময় সময় বলে থাকি – “আমার ইচ্ছা পূর্ণ হউক !” কি আহাম্মকি !! আর এই কম্মো করতে গিয়েই গোটা পৃথিবীব্যাপী ঝামেলা-ঝন্ঝাট, অশান্তি-মারামারি, অকারণ রেষারেষি-রক্তপাত! কবে যে আমরা বড় হবো__তবে তো পৃথিবী শান্ত হবে।।… [ক্রমশঃ]