[প্রোভার্টি রিলিফ সোসাইটির সংকট ও সেখান থেকে এর উত্থান!]
‌পরের দিন রাত্রে সাধ্যম্ আবার স্বামীজীর কাছে এলেন। তিনি প্রস্তাব দিলেন—রাজমুন্দ্রী ডিপােতে যে কাঠ এবং বাঁশ আছে সেগুলি বন্ধক রেখে কিছু অগ্রিম টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা গােদাবরী সেন্ট্রাল স্টোর হোতে সম্ভব হবে।
স্বামীজী বললেন __”প্রথমে নাইডুর কবল হোতে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। পরে আমরা যা হােক করে বেঁচে থাকতে পারবো।” সমস্ত স্টোরের ডিরেকটরদের নিয়ে একটা সভা ডাকা হোল। স্বামীজী সব ডিরেকটারের সঙ্গে আলাদা আলাদা ভাবে কথা বলে বিষয়বস্তু আলােচনা করলেন। সাধ্যম্ আরও বললেন “এই ব্যবসায়ে ঢুকে স্টোরগুলির কোন ক্ষতি হবে না। বরং কিছু লাভ হবে। এ ছাড়া আমরা উপজাতিদের সাহায্য করতে পারব। এবং সেটা হবে একটা বিরাট কাজ। এই কাজে ঈশ্বর তুষ্ট হবেন । এ সব ছেড়ে দিলেও, এই কাজ আমরা হাতে নিলে উপজাতিদের উন্নতি হবে। আমাদের নাম, যশও হবে।”
সাধ্যমের যুক্তি সমস্ত ডিরেকটরের উপর জয়লাভ করলো। তারা স্বামীজীকে কিছু প্রশ্ন করলেন। স্বামীজীর উত্তরে সকলেই বেশ খুশী হোলেন । তারা P.R.S -কে সাহায্য করার জন্য স্বামীজীর প্রস্তাব সমর্থন করলেন। বণিক সম্প্রদায়ের ডিরেকটর এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেন। মেরিনা নরসাম্মা ছিলেন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি। তিনি মন্তব্য করলেন “আমি কেবল অসুবিধা, জটিলতা এবং ক্ষতি দেখতে পাচ্ছি।” তিনি খুব জোর আপত্তি করলেন। তিনি বললেন যেহেতু স্টোরগুলি ব্যাঙ্কের টাকায় চলছে, সেইহেতু এই রকম কাজের ঝুঁকি নেওয়ার আগে ব্যাঙ্কের বিশেষ অনুমােদন নেওয়ার দরকার।
যাইহােক, সাধ্যম্ এবং তাঁর কার্যকলাপের উপর কপিলেশ্বর পুরমের জমিদার এবং পশ্চিম গােদাবরী জেলার জমিদারের পুরাে আস্থা ছিল। তারা সাধ্যম্ কে পুরােপুরি সমর্থন করলেন।
মিঃ নরসাম্মা এই বিষয়ে আইনের দিক থেকে অসুবিধা খুঁজতে লাগলেন। তিনি বিষয়টিকে স্টোরের উপদেষ্টার কাছে পাঠালেন। শ্রীসােলসা বাপানাইয়া ছিলেন আইনের উপদেষ্টা। তিনি এক সময় পেরেন্টাপল্লী এসেছিলেন। তিনি স্বামীজীকে চিনতেন। তিনি পরিস্থিতি বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একটা আদেশ দিলেন। যেহেতু স্টোরের অধিকাংশ ডিরেকটর প্রস্তাবকে অনুমােদন করে বলছেন যে, কাঠ এবং বাঁশ প্রভৃতি যা P. R. S -এর আছে, তা বন্ধক হিসাবে নিয়ে P. R. S কে অগ্রিম টাকা দেওয়া যাবে – সেইহেতু এই প্রস্তাব গ্রহণযােগ্য ।
প্রত্যেকে অনুভব করলেন সুন্দরমকে স্বামীজী কর্তৃক সাধ্যম্ নাম দেওয়া সার্থক। তিনি অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন। সাধ্যম্ এর প্রস্তাব অনুযায়ী P. R. S. কে কো-অপারেটিভ স্টোরে স্থানান্তরিত করা হল। P. R. S. সংগঠনের সেক্রেটারী পরিবর্তন করা হল । শ্ৰী মন্দ্রেটি ভেঙ্কটরামাইয়া সেক্রেটারির কার্যভার গ্রহণ করলেন। এই ভেঙ্কটরামাইয়াই উয়াডিগুডেমে স্বামীজীর শরীরে যে বিষক্রিয়া হয়েছিল তা থেকে আরােগ্য লাভ করতে স্বামীজীকে সাহায্য করেছিলেন।
নাইডুর ডিপােতে যে মাল মজুত ছিল তার মালিকানা স্টোর নিয়ে নিল। নাইডুকে দেয় টাকার কিছু অংশ দিয়ে দেওয়া হল। কিছু টাকা coup-এ পাঠানো হল, কাজ আরম্ভ করার জন্য উপজাতিদেরকেও দেয় টাকার কিছু অংশ দেওয়া হল ।
যে P. R. S-কে ভাবা হয়েছিল যে শেষ হয়ে গিয়েছে, সেই P. R. S. আবার মাথা তুলে দাঁড়াল। এক সময় এটার অবস্থা ক্ষুদ্র পাত্রস্থিত গাছের মতন ছিল । ক্রমশ শুষ্ক হয়ে যাচ্ছিলো পুষ্টির অভাবে। সাধ্যম্ তাকে যেন পাত্র হোতে তুলে মাটিতে পুঁতে দিলেন। এখন এটা মাটি হতে জল এবং খাবার প্রচুর পরিমাণে পাবে আর বাঁচতেও পারবে।
সবই সর্বেসর্বার দয়া। স্বামীজীর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হোল না । ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের আদেশে যে সংগঠন স্থাপিত হয়েছিল এখন তা নবযৌবন লাভ করলো।