শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা (কথিত এবং লিখিত) এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো। গুরুমহারাজ এখন আলোচনা করছিলেন ‘প্রেম’ প্রসঙ্গে ! মানবজীবনে প্রেমের প্রকাশ কি প্রকারে ঘটে সেই প্রসঙ্গে উনি বললেন – “প্রেমের প্রকাশ তখনই ঘটে, যখন ‘আমি’-র পাহাড়টা আর থাকে না। একমাত্র তখনই মানবের ‘বাণী’ বদলে যায়, তখন আর ‘আমি’ – ‘আমি’ নয়, শুধু ‘তুমি’ – ‘তুমি’ – সব ‘তোমা’তে ‘তুমি’ সবেতে ! এই বিশ্বে একমাত্র ‘তুমি’-ই আছো। একমাত্র প্রেমেতেই মানবের অবিদ্যারূপ আমির পাহাড়টা সরে যায়। প্রেমের প্রবাহ বইতে থাকে অন্তরে, প্রেমের সিঁড়ি বেয়ে পরমেশ্বরের উপলব্ধি হয়।”
প্রিয় পাঠক ! বুঝতেই পারছেন আমাদের যত গন্ডগোল ঐ ‘আমি’-কে নিয়ে অর্থাৎ অহংভাব বা ‘আমি অমুক’- এই ভাব যতক্ষণ না বিলুপ্ত হোচ্ছে, ততক্ষণ মানবজীবনে প্রেমের বর্ষা নামবে না – আর পরমেশ্বরের (আল্লা, গড, হরি, রাম, কালী) বোধও হবে না। যেমন যেমন এই ‘আমি’-র নাশ হোতে থাকবে – তেমন তেমন সাধকের জীবনে প্রেমের প্রকাশ ঘটবে। গুরুমহারাজ একবার সিটিংয়ে বলেছিলেন, “তোরা কি ভাবিস্ ! তুই যেভাবে জগৎ দেখছিস – সকলেই সেই একইভাবে জগৎ দেখে বা জগৎকে বিচার করে ? না – তা করে না ! বর্তমান পৃথিবীতে যত কোটি মানুষ রয়েছে – সকলেই নিজের নিজের ভাবে, আপন আপন দৃষ্টিতে জগৎ দেখে এবং নিজেদের বুদ্ধির সীমা level অনুযায়ী জগৎকে বিচার করে। সাধনার দ্বারা চেতনার উত্তরণ হোতে শুরু করলেই তখন মানবের অহংভাব বা ‘আমি – আমি’ ভাব নষ্ট হতে থাকে এবং তার জায়গায় ‘তুমি’-ভাব স্থান করে নেয়৷ গুরুমহারাজ আর একবার অন্যত্র বলেছিলেন – ” ‘আমি – আমার’ ভাবটি মানবের অজ্ঞান অবস্থার ভাব, ‘তুমি – তোমার’ ভাবটি মানবের বিজ্ঞান অবস্থার ভাব এবং ‘আমি-ই তুমি’ – ‘তুমি-ই আমি’– এই ভাবটি প্রজ্ঞান অবস্থার ভাব !”
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, মানব যতক্ষন নিম্ন চেতনায় থাকে, ততক্ষণই ‘আমি-আমার’ ভাব বা অজ্ঞান অবস্থার ভাব মানবের মধ্যে বিদ্যমান থাকে। এই অবস্থাতেই আমরা সমাজের বেশিরভাগ মানবেরা রয়েছি। এর মধ্যে উচ্চ-নীচ বংশজাত, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-নির্ধন, সাদা চামড়া-কালো চামড়া, হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীগণ ইত্যাদি সকলেই এই দলে পড়ে যাচ্ছে ! সমাজের বিভিন্ন অবস্থার মানুষের মধ্যে নানান ভেদ রয়েছে, বৈচিত্র্য রয়েছে কিন্তু চেতনায় তারা প্রায় একই level-এ থেকে যাচ্ছে। বিবেকের জাগরণ এবং আত্মিক উত্তরণের দিক থেকে বিচার করলে দেখা যাবে – সমাজের সমস্ত প্রকারের মানুষই প্রায় একই level-এ রয়েছে – ঐ মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ ! কেউ হয়তো শিক্ষা, বিদ্যা, অর্থ, সামর্থ্য বা ক্ষমতা (দৈহিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মনৈতিক), সুযোগ ইত্যাদি লাভ করে –কিন্তু সে যে অজ্ঞানের জগতে রয়েছে (অর্থাৎ তার মধ্যে লোভ-লালসা, অত্যাচার-অনাচার, ভোগ-বাসনা, অপরকে dominate করে রাখার tendency ইত্যাদি negative মানবিক গুণ সমূহের প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়) – সেটা তার কথাবার্তায়, চালচলনে, আচার-আচরণে প্রতি মুহূর্তেই প্রকাশ ঘটে থাকে।
অপরদিকে যার মধ্যে প্রেমের স্ফূরণ ঘটে গেছে, যার আত্মিক উত্তরণ বা বিবেকের জাগরণ হয়েছে – তার মধ্যে আর ঐ ‘অহং-অস্মিতা’ ভাব থাকে না । সে তখন বিদ্বান-বুদ্ধিমান-ঐশ্বর্যশালী-ক্ষমতাশালী (দৈহিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ধর্মনৈতিক) ইত্যাদি হোলেও – তার মধ্যে অপরের প্রতি অর্থাৎ সমাজের দুর্বলতর (অর্থনৈতিকভাবে, শিক্ষাগতভাবে, সামাজিক সংস্কারের প্রভাবে), পিছিয়ে পড়া মানুষজনেদের প্রতি কর্তব্যবোধ, প্রেমবোধ, সেবার ভাব জাগ্রত থাকবে। কারণ তার তখন এইটুকু ধারণা হয়ে যায় যে, এই জগতের সবকিছুই সেই পরমেশ্বরেরই সৃষ্টি ! তিনি-ই সব হয়েছেন, তাই ‘আমি’ও তিনি এবং আমার বাইরে যারা রয়েছে – তারাও ‘তিনি’ বা তাঁর প্রকাশ! যে কোনো একজনকে আঘাত করা মানে – নিজেকেই আঘাত করা !
যাইহোক, আমরা আবার গুরুমহারাজ এরপরে কি বলছেন সেই কথায় ফিরে যাই। গুরুমহারাজ বলেছিলেন – ” মানবের মধ্যে থাকে ‘আমি’র পাহাড়টা সরে গেলেই অন্তরে প্রেমের প্রবাহ বইতে থাকে এবং এই অবস্থাতেই পরমেশ্বরের উপলব্ধি হয়।” পরমেশ্বরের উপলব্ধি হোলে সাধকের কি অবস্থা হয় – সেটা আমরা এবার শুনবো। উনি বললেন – ” মানব উন্নীত হয় ‘অভাব’ হোতে ‘স্বভাবে’ এবং ‘স্বভাব’ হোতে ‘মহাভাবে’, ‘মৃত্যু’ হোতে ‘জীবনে’ এবং ‘জীবন’ থেকে ‘মহাজীবনে’, ‘খাল’ হোতে ‘নদী’তে এবং ‘নদী’ হোতে ‘সাগরে’। মানব উপনীত হয় অসহজ মানব হোতে সহজ মানবে, ব্যাষ্টি চেতনা হোতে সমষ্টি চেতনায়, জীবত্ব হোতে শিবত্বে, ভক্ত হোতে ভগবানে – এবং বাসনা হতে প্রেমে।”
মানবের অজ্ঞান অবস্থাই অ-ভাব অবস্থা৷ সাধনার দ্বারা মানবের চেতনার উত্তরণ হোতে শুরু করলে অর্থাৎ জীবনে প্রেমের স্ফুরণ ঘটতে থাকলেই মানব অ-ভাব অবস্থা থেকে তার স্ব-ভাবে উন্নীত হয়, অর্থাৎ এই অবস্থায় মানুষ যা – সে তাই হয়। এই কথাটা কেন বলা হোলো বলছি – আসলে আমরা তো নামেই ‘মানুষ’ পদবাচ্য ! প্রকৃত অর্থে আমরা কি ‘মানুষ’ হয়ে উঠতে পেরেছি ? পারিনি তো ! ঠিক ঠিক মানুষ হয়ে ওঠা মানেই তো মানুষের ‘মনুষ্যত্ব’ অর্জন করা ! আর একবার মনুষ্যত্ব অর্জন হওয়া মানেই হোলো সেই মানবের মধ্যে আর কোন negative ভাব থাকে না অর্থাৎ সেই মানুষের মধ্যে আর হিংসা-দ্বেষ-স্বার্থপরতা-লোভ-অহংকার-অভিমান-মিথ্যাচার ইত্যাদি বিষয়গুলি থাকবে না। বিনিময়ে সেই প্রকৃত অর্থে হয়ে ওঠা মানুষের মধ্যে সদা বিরাজিত থাকবে স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসা-শ্রদ্ধা-করুণা-দয়া-সদাচারীতা-সংযম-আত্মবোধের প্রচেষ্টা ইত্যাদি বিষয়গুলির প্রকাশ ঘটবে। এমন কোনো মানুষ সমাজের যেকোনো স্থানে থাকুক না কেন – জানবেন তিনিই ঠিক ঠিক মানুষ পদবাচ্য, ইনিই যথার্থ ‘মান’ এবং ‘হুঁশ’-বিশিষ্ট !
যাইহোক, গুরুমহারাজের উপরোক্ত কথাগুলি থেকে আমরা আরও যা পাচ্ছি তা হোলো – মানুষ স্ব-ভাবে পৌঁছাতে পারলে, তারপর সাধনার দ্বারা মানব ‘মহাভাব’ অবস্থায় পৌঁছাতে পারে – এটাই চূড়ান্ত অবস্থা বা প্রেমের অবস্থা ! এই অবস্থাগুলির ক্রমকেই গুরুমহারাজ বলেছেন –অভাব থেকে স্বভাবে এবং স্বভাব থেকে মহাভাবে পৌঁছানো _অথবা মৃত্যু থেকে জীবনে এবং জীবন থেকে মহাজীবনে উপনীত হওয়া ।।
প্রিয় পাঠক ! বুঝতেই পারছেন আমাদের যত গন্ডগোল ঐ ‘আমি’-কে নিয়ে অর্থাৎ অহংভাব বা ‘আমি অমুক’- এই ভাব যতক্ষণ না বিলুপ্ত হোচ্ছে, ততক্ষণ মানবজীবনে প্রেমের বর্ষা নামবে না – আর পরমেশ্বরের (আল্লা, গড, হরি, রাম, কালী) বোধও হবে না। যেমন যেমন এই ‘আমি’-র নাশ হোতে থাকবে – তেমন তেমন সাধকের জীবনে প্রেমের প্রকাশ ঘটবে। গুরুমহারাজ একবার সিটিংয়ে বলেছিলেন, “তোরা কি ভাবিস্ ! তুই যেভাবে জগৎ দেখছিস – সকলেই সেই একইভাবে জগৎ দেখে বা জগৎকে বিচার করে ? না – তা করে না ! বর্তমান পৃথিবীতে যত কোটি মানুষ রয়েছে – সকলেই নিজের নিজের ভাবে, আপন আপন দৃষ্টিতে জগৎ দেখে এবং নিজেদের বুদ্ধির সীমা level অনুযায়ী জগৎকে বিচার করে। সাধনার দ্বারা চেতনার উত্তরণ হোতে শুরু করলেই তখন মানবের অহংভাব বা ‘আমি – আমি’ ভাব নষ্ট হতে থাকে এবং তার জায়গায় ‘তুমি’-ভাব স্থান করে নেয়৷ গুরুমহারাজ আর একবার অন্যত্র বলেছিলেন – ” ‘আমি – আমার’ ভাবটি মানবের অজ্ঞান অবস্থার ভাব, ‘তুমি – তোমার’ ভাবটি মানবের বিজ্ঞান অবস্থার ভাব এবং ‘আমি-ই তুমি’ – ‘তুমি-ই আমি’– এই ভাবটি প্রজ্ঞান অবস্থার ভাব !”
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, মানব যতক্ষন নিম্ন চেতনায় থাকে, ততক্ষণই ‘আমি-আমার’ ভাব বা অজ্ঞান অবস্থার ভাব মানবের মধ্যে বিদ্যমান থাকে। এই অবস্থাতেই আমরা সমাজের বেশিরভাগ মানবেরা রয়েছি। এর মধ্যে উচ্চ-নীচ বংশজাত, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-নির্ধন, সাদা চামড়া-কালো চামড়া, হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীগণ ইত্যাদি সকলেই এই দলে পড়ে যাচ্ছে ! সমাজের বিভিন্ন অবস্থার মানুষের মধ্যে নানান ভেদ রয়েছে, বৈচিত্র্য রয়েছে কিন্তু চেতনায় তারা প্রায় একই level-এ থেকে যাচ্ছে। বিবেকের জাগরণ এবং আত্মিক উত্তরণের দিক থেকে বিচার করলে দেখা যাবে – সমাজের সমস্ত প্রকারের মানুষই প্রায় একই level-এ রয়েছে – ঐ মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ ! কেউ হয়তো শিক্ষা, বিদ্যা, অর্থ, সামর্থ্য বা ক্ষমতা (দৈহিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মনৈতিক), সুযোগ ইত্যাদি লাভ করে –কিন্তু সে যে অজ্ঞানের জগতে রয়েছে (অর্থাৎ তার মধ্যে লোভ-লালসা, অত্যাচার-অনাচার, ভোগ-বাসনা, অপরকে dominate করে রাখার tendency ইত্যাদি negative মানবিক গুণ সমূহের প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়) – সেটা তার কথাবার্তায়, চালচলনে, আচার-আচরণে প্রতি মুহূর্তেই প্রকাশ ঘটে থাকে।
অপরদিকে যার মধ্যে প্রেমের স্ফূরণ ঘটে গেছে, যার আত্মিক উত্তরণ বা বিবেকের জাগরণ হয়েছে – তার মধ্যে আর ঐ ‘অহং-অস্মিতা’ ভাব থাকে না । সে তখন বিদ্বান-বুদ্ধিমান-ঐশ্বর্যশালী-ক্ষমতাশালী (দৈহিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ধর্মনৈতিক) ইত্যাদি হোলেও – তার মধ্যে অপরের প্রতি অর্থাৎ সমাজের দুর্বলতর (অর্থনৈতিকভাবে, শিক্ষাগতভাবে, সামাজিক সংস্কারের প্রভাবে), পিছিয়ে পড়া মানুষজনেদের প্রতি কর্তব্যবোধ, প্রেমবোধ, সেবার ভাব জাগ্রত থাকবে। কারণ তার তখন এইটুকু ধারণা হয়ে যায় যে, এই জগতের সবকিছুই সেই পরমেশ্বরেরই সৃষ্টি ! তিনি-ই সব হয়েছেন, তাই ‘আমি’ও তিনি এবং আমার বাইরে যারা রয়েছে – তারাও ‘তিনি’ বা তাঁর প্রকাশ! যে কোনো একজনকে আঘাত করা মানে – নিজেকেই আঘাত করা !
যাইহোক, আমরা আবার গুরুমহারাজ এরপরে কি বলছেন সেই কথায় ফিরে যাই। গুরুমহারাজ বলেছিলেন – ” মানবের মধ্যে থাকে ‘আমি’র পাহাড়টা সরে গেলেই অন্তরে প্রেমের প্রবাহ বইতে থাকে এবং এই অবস্থাতেই পরমেশ্বরের উপলব্ধি হয়।” পরমেশ্বরের উপলব্ধি হোলে সাধকের কি অবস্থা হয় – সেটা আমরা এবার শুনবো। উনি বললেন – ” মানব উন্নীত হয় ‘অভাব’ হোতে ‘স্বভাবে’ এবং ‘স্বভাব’ হোতে ‘মহাভাবে’, ‘মৃত্যু’ হোতে ‘জীবনে’ এবং ‘জীবন’ থেকে ‘মহাজীবনে’, ‘খাল’ হোতে ‘নদী’তে এবং ‘নদী’ হোতে ‘সাগরে’। মানব উপনীত হয় অসহজ মানব হোতে সহজ মানবে, ব্যাষ্টি চেতনা হোতে সমষ্টি চেতনায়, জীবত্ব হোতে শিবত্বে, ভক্ত হোতে ভগবানে – এবং বাসনা হতে প্রেমে।”
মানবের অজ্ঞান অবস্থাই অ-ভাব অবস্থা৷ সাধনার দ্বারা মানবের চেতনার উত্তরণ হোতে শুরু করলে অর্থাৎ জীবনে প্রেমের স্ফুরণ ঘটতে থাকলেই মানব অ-ভাব অবস্থা থেকে তার স্ব-ভাবে উন্নীত হয়, অর্থাৎ এই অবস্থায় মানুষ যা – সে তাই হয়। এই কথাটা কেন বলা হোলো বলছি – আসলে আমরা তো নামেই ‘মানুষ’ পদবাচ্য ! প্রকৃত অর্থে আমরা কি ‘মানুষ’ হয়ে উঠতে পেরেছি ? পারিনি তো ! ঠিক ঠিক মানুষ হয়ে ওঠা মানেই তো মানুষের ‘মনুষ্যত্ব’ অর্জন করা ! আর একবার মনুষ্যত্ব অর্জন হওয়া মানেই হোলো সেই মানবের মধ্যে আর কোন negative ভাব থাকে না অর্থাৎ সেই মানুষের মধ্যে আর হিংসা-দ্বেষ-স্বার্থপরতা-লোভ-অহংকার-অভিমান-মিথ্যাচার ইত্যাদি বিষয়গুলি থাকবে না। বিনিময়ে সেই প্রকৃত অর্থে হয়ে ওঠা মানুষের মধ্যে সদা বিরাজিত থাকবে স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসা-শ্রদ্ধা-করুণা-দয়া-সদাচারীতা-সংযম-আত্মবোধের প্রচেষ্টা ইত্যাদি বিষয়গুলির প্রকাশ ঘটবে। এমন কোনো মানুষ সমাজের যেকোনো স্থানে থাকুক না কেন – জানবেন তিনিই ঠিক ঠিক মানুষ পদবাচ্য, ইনিই যথার্থ ‘মান’ এবং ‘হুঁশ’-বিশিষ্ট !
যাইহোক, গুরুমহারাজের উপরোক্ত কথাগুলি থেকে আমরা আরও যা পাচ্ছি তা হোলো – মানুষ স্ব-ভাবে পৌঁছাতে পারলে, তারপর সাধনার দ্বারা মানব ‘মহাভাব’ অবস্থায় পৌঁছাতে পারে – এটাই চূড়ান্ত অবস্থা বা প্রেমের অবস্থা ! এই অবস্থাগুলির ক্রমকেই গুরুমহারাজ বলেছেন –অভাব থেকে স্বভাবে এবং স্বভাব থেকে মহাভাবে পৌঁছানো _অথবা মৃত্যু থেকে জীবনে এবং জীবন থেকে মহাজীবনে উপনীত হওয়া ।।