স্থান ~ পরমানন্দ মিশন, বনগ্রাম । সময় ~ ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ । উপস্থিত ব্যক্তিগণ ~ ইউরোপীয় ভক্তগণ (যেমন আলেক্স, জার্মান-শান্তি), সিঙ্গুরের ভক্তসহ আশ্রমিকগণ ৷

জিজ্ঞাসু :– ইউরােপের আইন-শৃঙ্খলার কথা আপনি বলেন – সত্যিই কি ওখানকার আইন এখানকার থেকে ভালাে ?

গুরমহারাজ :– আইন তাে ভালাে-মন্দ হয় না – সব দেশের আইন-ই সেই দেশের মানুষ এবং তাদের মানসিকতা অনুযায়ীদেশবাসীর কল্যানের কথা ভেবেই তৈরি করা হয়। কিন্তু ভালো ভালো আইন থাকাটা তো বড় কথা নয়একে কার্যে পরিণত করাটাই বড় কথা ! প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে যে আইন রয়েছে তা execute (কার্যে পরিণত করা) হয়—এখানে হয় না, এই যা তফাৎ! এদেশে বড় বড় businessman বা বড় বড় political leader-দের বড় একটা শাস্তি হয় না– কিন্তু ওই একই অন্যায় করলে সাধারণ মানুষের হয়তাে ফাঁসিহয়ে যাবে। পয়সা বা ক্ষমতার জোরে অনেক সময় ঐ ধরনের লােকেদের case-টাই বাতিল হয়ে যায় অথবা case কোর্টে উঠলেও হাল্কা কিছু শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এইসব ক্ষেত্রে হয়তাে প্রথমটায় একটু হইচই হয়, তারপর দীর্ঘদিন ধরে case চলতে থাকলে মানুষও ভুলে যায় এবং সবকিছু ধামাচাপা পড়ে যায়। প্রথমবিশ্বে এরকম হয় না ! ইংল্যাণ্ডের ইতিহাসে পড়েছ তো—কোন এক রাজকুমার কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় পিতা হয়েও রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ! ওই ঘটনার পরবর্তীতে ইংল্যাণ্ডে চালু হয় রাণীর শাসনব্যবস্থা! ওখানকার বিচার ব্যবস্থা খুবই সাচ্চা। তবে দুর্নীতি কি নেই ! রয়েছে কিন্তু ধরা পড়লে শাস্তি অনিবার্য—সে তুমি যত বড় মাপের মানুষই হও ! দ্যাখা যায় কি জানো সাধারণতঃ মানুষের মধ্যে দুর্নীতি করার একটা প্রবণতা তার প্রকৃতিতেই রয়েছে ! তাই অন্যায়, অত্যাচার, ধর্ষণ, প্রতারণা, চুরি ইত্যাদি সকলদেশেই কমবেশি রয়েছে। কিন্তু ওই যেটা বললামএখানে ধরা পড়লেও ধনী ব্যক্তির বা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এবং তাদের আত্মীয়দের ঠিকমতো বিচার হয় নাবিনিময়ে হয়তো কোন নিরীহ ব্যক্তি শাস্তি পায়–ওসব দেশে এইটি হয় না। সেইজন্য ইউরােপের উন্নত দেশগুলিতে যদি যাও তাহলে সবক্ষেত্রে তোমার শৃঙ্খলা নজরে পড়বে ! তোমার মনে হবে কোথাও যেন কোন বিশৃঙ্খলা নেই। আর যদি কখনও কোন বিশৃঙ্খলা হয়তাহলে সঙ্গে সঙ্গে action ! আমি যখন ইংল্যাণ্ডে ছিলাম(১৯৯০-৯১)‌, সেইসময় ঘটা একটা ঘটনার কথা বলছি শােন।

  ভারতীয় বংশােদ্ভূত একজন ইংরেজ লেখক সলমন রশদি “স্যাটানিক ভার্সেস” বলে একটা বই লিখেছিল। বইটিতে এমন কিছু লেখা ছিল -- যাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় চেতনায় আঘাত লেগেছিল। ফলে ইংল্যাণ্ডের কিছু মুসলিম জনগণ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করছিল। ওখানে তাে মিছিলে শব্দ করা যাবে না – হাতে, গায়ে Placard নিয়ে যেতে পারাে ! মিছিলটি ওয়েষ্ট মিনিষ্টার ব্রিজ অতিক্রম করে New London-এ ঢোকার চেষ্টা করতেই কয়েকশ ঘােড়া পুলিশ ওদের আটকে দিল ! এদিকে এই ঘটনাযর পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার meeting বসে গেছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার রেডিও-টিভির direct telecast-এর মাধ্যমে ঐ ধরণের আন্দোলন বন্ধ করতে বললেন এবং করলে কি শাস্তি হোতে পারে তারও বিধান দিয়ে দিলেন। ফলে সাথে সাথেই আন্দোলন থেমে গেল এবং দেখেছিলাম_____পরদিন থেকে ঐ issue-তে সারাদেশে আর কোন বিক্ষোভ আন্দোলন হোল না। আমাদের সরকারের এই রকম ভূমিকার কথা ভাবতে পারবে কি ? ওদের দেশে আইন যেমন রয়েছে তেমনি আইন রক্ষাকারী দপ্তরগুলি নিজ নিজ department-এ যাতে কোন কালিমা লেপন না হয় তার জন্য সদাই সচেতন থাকে। এটাকে ওরা দেশের একটা বিশেষ সম্মানসূচক কাজ বলে মনে করে।

  ইউরােপে ঘােরার সময় ঘটে যাওয়া আমার নিজের চোখে দেখা আর একটা ঘটনার কথা বলছি শােন। আমি তখন train-এ করে গ্রীস-ইস্তাম্বল ইত্যাদি দেশগুলি ঘুরছি। ওখানে আন্তঃ ইউরােপ train service রয়েছে। তুমি ইচ্ছা করলে ইউরােপের বিভিন্ন দেশ train-এ করেই ঘুরে বেড়াতে পারাে। এই service কখনও আল্পস পর্বতের মাথায় মাথায় যাচ্ছে, কখনও সমুদ্রের তলায় তলায় যাচ্ছে, কখনও passenger সমেত train জাহাজে উঠে পড়ছে—সমুদ্র পেরিয়ে ওপারে আবার line ধরে নিচ্ছে। সে এক মজার অভিজ্ঞতা ! যাইহােক, আমার সাথে নরওয়ের বেয়ন পিটারসেন ছিল । আমরা যখন  "Turkey-border-এ প্রবেশ করলাম তখন দেখলাম ওখানে routine মাফিক checking হচ্ছে, ফলে train-টা দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু ক্ষণ  ! আমাদের contpartment-এ আমরা দু'জন ছাড়া দু'জন জাপানি ছেলে, একটি ফরাসী মেয়ে, অন্য দু'জন ইউরােপীয় আর ছিল দুজন নিগ্রো যুবক যারা আমেরিকান citizen ৷ Checking Officer-রা সঙ্গে Turkey পুলিশ নিয়ে আমাদের compartment-এ এল, আমাদের সকলের passport, visa বা অন্যান্য কাগজপত্র ঠিকঠাক দেখল, luggage-গুলােও মােটামুটি ভদ্রভাবেই check করলো_ কিন্তু মুস্কিল বাধলাে ঐ কালাে দু'জনের checking নিয়ে ! কি সাংঘাতিক বর্ণবিদ্বেষী ওরা–না দেখলে বিশ্বাস করবে না ! সমগ্র ইউরােপ ঘুৱে এই বর্ণবিদ্বেষের ব্যপারটা আমি খুব দেখেছি। যাইহােক, Checking Officer যে ভাবে বা যে ভাষায় ওদের কাছে passport চাইলো–সেটাই অপমানকর, তবু ওরা ভদ্রভাবে ওদের কাগজপত্র দেখালাে। তারপর Officer-রা ওদের

luggage check করার পর ছুঁড়ে ফেলে দিল। ওরা রেগে গিয়ে বলল, “এটা কি করলেন? কুড়িয়ে দিন্।” Checker-রা কুড়িয়ে তাে দিলই না বরং একটা খারাপ গালাগাল দিয়ে বসল। আর যায় কোথায় ! নিগ্রোদের মধ্যে একজন_ ‘দ্রাম’ করে এক ঘুষি মারল এক checker-এর মুখে ! লােকটি তাে ছিটকে পড়ল gate-এর কাছে। ততক্ষণে Police-force-এর লোকেরা বন্দুক তাক করে position নিয়ে নিয়েছে কিন্তু এরা দুজনেই Martial Art জানতো তাই চোখের নিমেষে ফটাফট্ সবকটাকেই tight দিয়ে দিলো । সঙ্গে সঙ্গে এ কম্পার্টমেন্টে হুলুস্থুল কাণ্ড বেধে গেল –checker রক্তাক্তমুখে উঠে বেরিয়ে গিয়েই emergency police call করে দিয়েছিল। ফলে শয়ে শয়ে পুলিশ এসে নিমেষে শুধু আমাদের Conmpartment-ই নয়, গোটা train-টাকে ঘিরে ফেলল। ঘোষণা হয়ে গেলট্রেনে terrorist attack হয়েছে তাই অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঐ লাইনে সমস্ত রকমের train পরিষেবা বন্ধ ! ঐ ছেলেদুটিকে armed force ধরে নিয়ে চলে গেল ঐ একই compartment-এ থাকার সুবাদে আমরাও arrested অর্থাৎ আমাদের ক’জনকেও পুলিশ barricade করে border-camp-এ নিয়ে চলে গেল —-কারণ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমরা ! আমাদের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই কালােদুটোর শাস্তি চূড়ান্ত হবে। মজার ব্যাপার হোল এই যে, হঠাৎ জাপানি ছেলেদুটো কাঁদতে শুরু করলো। জানতে পারা গেল যে, ওরা খুব বড় athlete, সিওল (কোরিয়ার রাজধানী) Olympic-এ দেশের হয়ে সােনা জেতায় ওদের দেশের Govt. ওদেরকে সমগ্র ইউরােপ ঘােরার সবরকম ব্যবস্থা করে পাঠিয়েছে। এবার যেহেতু একটা case হয়ে গেছে এবং যে compartment-এ হয়েছে_ সেইখানেই ওরাও রয়েছে, ফলে হয়তাে পরের দিনের newspaper-এ ওদের নাম বেরোবে, আর তা যদি একবার বেরোয়তাহলে ওদের জন্য সমগ্র দেশের সম্মান নষ্ট হবে সুতরাং ওদেরও পরকাল ফর্সা ! অর্থাৎ ওদের পদক কেড়ে নেওয়া হবে,ভিসা পাসপোর্ট সবকিছু বাতিল করা হবে, আরও অনেক কিছু করা হোতে পারে_ এই ভয়ে ওরা কাঁদছিল। ফরাসী মেয়েটি তার নিজের জীবনের কিছু দুঃখময় দিক আছে, সেগুলি বলতে লাগলো এবং তার সাথে এই ঘটনার সাদৃশ্য টেনে sympathy পেতে চাইছিল। ঘটনাটা ঘটে যাবার পর থেকেই বেয়ন আমাকে শেখাতে লাগলো, “গুরুজী ! আপনি foreigner, ইউরােপীয় নন_ তাই ঝামেলায় নিজেকে একেবারেই জড়াবেন না। জিজ্ঞাসা করলে বলে দেবেন, আপনি কিছু দেখেন নি।”

এসবের মধ্যেই আমাদেরকে যখন অস্থায়ীভাবে নির্মিত বিচার সভার Office-এ ডাকলো, তখন ওখানে গিয়ে দেখি অল্পসময়ের মধ্যেই কতসব বড় বড় officer এসে হাজির! হবে-নাই বা কেন ? একে তাে মারপিটের ঘটনা—তার উপর আবার Inter Europian Rail-কে কয়েকঘণ্টা আটকে দেওয়া–এর তাে উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে, না হলে passenger-দেরকে বিশাল অঙ্কের একটা compensation দিতে হবে Turkey Govt.-কে !

জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হোল_ ওরা আমাদের সকলকে interrogate করতে লাগলো—আমাকেও কোরলো। বলল, “কেন গ্রীস যাচ্ছেন ?” আমি বললাম সেটাতো ভিসাতেই লেখা আছে—আবার জিজ্ঞাসা করাটা কি খুব জরুরী ! আরও কয়েকটা জিজ্ঞাসার পর আসল ঘটনায় এলো। আমি ঘটনাটি আনুপূর্বিক যা যা দেখেছি এবং যা সত্যি তাই বলে দিলাম ! ফলে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণভাবে ঐ কালাে ছেলেদুটোর সপক্ষে গেল। এরপর আমি officer-দেরকে জিজ্ঞাসা করলাম—”আপনাদের দেশের railway ticket-checker-দের ব্যবহার কি এইরকমই খারাপ ? তাহলে এই ব্যাপারটা কিন্তু আন্তর্জাতিক হয়ে যাবে, কারণ আমাদের কামরাতেই পাঁচটি পৃথক পৃথক দেশের লোক রয়েছে!” Officer -রা একটু ভয় খেয়ে বললো“না-না, এমন তাে নজির নেই!”। আমি বললাম– “তাহলে আজকের ঘটনাটি নজির হিসাবে লিখে রাখুন ! আপনাদের দেশের Checker-রা নিগ্রো দু’জনের উপর যেভাবে ব্যবহার করেছে তা কোন সভ্য মানুষ, পশুর সাথেও করে না।” ওরা বলল, “আপনার compartment-এর কেউ তাে এতোটা বলেনি, তাহলে আপনি ওদের দুজনকে support করছেন কেন ?” আমি বললাম, “কারণ ওরা আমার বন্ধু।” ওরা বলল, “তা কি করে হয়, ওরা American আর আপনি Indian। ওরা আমেরিকা থেকে direct আসছে আর আপনি Norway থেকে_ তাহলে বন্ধুত্ব কি করে হ’ল ?” আমি উত্তর দিলাম “Train-এর compartment-এ আমরা সহযাত্রী ছিলাম, ওখানেই আমাদের বন্ধুত্ব। ১৫ মিনিট আগে ওদের সাথে আমার প্রথম কথা হয়েছে–তখন থেকেই ওরা আমার বন্ধু।” তারপর আমি
আরও বললাম–“আপনাদের উচিত ছেলেটিকে ছেড়ে দিয়ে ঐ checker-দেরকে শাস্তি দেওয়া !” বেয়র্ বারবার আমাকে নিরস্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল_কিন্ত মা জগদম্বা যে আমার মুখে কথা মুখিয়ে যাচ্ছিল তা আর কি করে ওকে বোঝাই?

কিছুক্ষণ পর দেখলাম ওরা আমাদেরকে তো ছাড়লোইঐ নিগ্রো-দু’জনকেও ছেড়ে দিলো এবং অভিযোগপত্র যেগুলো লেখা হোয়ে গিয়েছিলসেইসব কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলে দিল! মাইকে ঘোষণা হোতে লাগলো যে সমস্যা মিটে গেছেএক্ষুনি ট্রেন ছাড়বে! আমরাও আবার train-এ চড়ে বসলাম, train ছেড়েও দিল লাভের মধ্যে আমরা কয়েকঘন্টা পরে গন্তব্যে পৌঁছালাম এই যা!!

অনেকপরে আমি চিন্তা করে দেখেছিলাম সেইদিন ঐ টার্কি বর্ডারে ঘটনাটা ঠিক কি ঘটেছিল, দেখলাম_ প্রথমটায় officer-দের স্বদেশপ্রীতি কাজ করছিল। এমনিতেই ওদের প্রচণ্ড colour-sentiment, তার ওপর আবার ‘কালাে’ নিগ্রোরা ওদের checker-কে physically আঘাত করেছিল—এই ব্যাপারটা ওরা মানতে না পেরে কালােদুটোর শাস্তি প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিল ! অফিসারেরা সমস্ত report-ও সেইভাবেই তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু যখন দেখল ঐ compartment-এর eye-witness-রা অন্য কথা বলছে তখন ওরা ভয় পেল ! কারণ ঐ জায়গাটা ছিল border, ওটা পেরােলেই অন্য দেশ — এধারে যত রাজ্যের বাঘা বাঘা সাংবাদিক বসে রয়েছে train-late-এর কারণ জানার জন্য! সত্যিটা জানতে পারলে আর রক্ষা নেই ! ইউরােপীয় গণমাধ্যম তুর্কীর border security-দের এবং চেকার-দের বারোটা বাজিয়ে ছাড়বে ! আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে _এইসব নানা কথা বিবেচনা করে, এতক্ষণ ধরে যে সব report ওরা তৈরি করেছিল সে সমস্তই ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিল এবং লােকদুটিকে মুক্তি দিয়ে train ছেড়ে দিয়েছিল ! ঐ ধরণের কোন ঘটনা যে সেদিন ঘটেছিল ওরা তার কোন record-ই রাখে নি । শুধুমাত্র দেশের এবং department-এর সম্মান বাঁচানাের জন্য কোন দ্বিধা না করে- কোন case file না করে_ train-টি ছেড়ে দিয়েছিল।

  আমাদের দেশের officer-রা হোলে চটজলদি এতোটা firm  decision নিতেই পারতাে না--একটা বিশৃঙ্খলা বাধিয়ে বসতো। যাইহােক, ওখানে থাকাকালীন যেসব ঘটনা আমার উপস্থিতিতে ঘটেছিল সেগুলির কয়েকটি তােমাদের বললাম। তাছাড়া এসব দেশে ঘোরার সময় দেখেছি ওদের মানুষজন_রাস্তাঘাট-ষ্টেশনচত্বর সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, আর দেখেছিলাম সবাই সময় সম্বন্ধে sincere । Train-Bus কখনও late করে না, খাদ্য বা ভোজ্যপানীয় উৎপাদনকারীরা কখনও কোন খাদ্যে ভেজাল দেয় না__ তবে এগুলাে দেশপ্রেম থেকে করে এমন যেন ভেবাে না ! শাস্তির ভয়ে এগুলাে করে। রাস্তায় ভুল গাড়ি parking করলে এমন large amount ফাইন্ করবে যে, হয়ত গাড়িটাই বেচে দিতে হবে। রাস্তাঘাট T.V.-eye দিয়ে monitoring হয়। কোথাও কিছু নােংরা বা অন্য পদার্থ পড়ে থাকলে সঙ্গে সঙ্গে report হয়ে যায় এবং তা তুলে ফেলার ব্যবস্থা হয়ে যায়। যারজন্য তুমি যখনই যাবে, মনে করবে– রাস্তাগুলো বোধহয় সবে নতুন করে তৈরি হয়েছে। এসব কিছুই হয়েছে আইন-প্রণয়ন এবং তার কার্যে রূপান্তরণের জন্য। আর আমাদের এখানে আইন রয়েছে, কিন্তু তার সঠিক প্রয়োগ হয় না। আইনের ফাঁক গলে ক্ষমতাবান বা অর্থবানরা বেরিয়ে যায়, আর layman-রা পড়ে পড়ে মার খায়।