[জিজ্ঞাসু:—আমরা অনেক সময় শুনতে পাই যে, সমাজে এমন অনেক সাধু-সন্ন্যাসী রয়েছে_ যাদের মধ্যে অনেকেরই নানারকম সিদ্ধাই রয়েছে ! তারা বিশেষ ক্ষমতাবান সাধু ! কিছু কিছু সাধু-সন্তের এরকম ক্ষমতাবান হয়ে ওঠা রহস্যটা কি ?____এই জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছিলেন গুরু মহারাজ। আজ সেই আলোচনার শেষাংশ]
… এরপর স্বামীজী ওই পিশাচ সিদ্ধের কাছ থেকে চলে এসেছিলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই কলকাতার গুরুভ্রাতাদের কাছ থেকে মা ভুবনেশ্বরী দেবীর কুশল সংবাদও পেয়ে গিয়েছিলেন । এই ঘটনার বহুদিন পর অর্থাৎ আমেরিকা থেকে বিশ্বজয় করে যখন তিনি দেশে ফিরে এলেন__ তারপর উনি একবার পুনরায় দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলেন এবং আলাসিঙ্গা ও অন্যান্য ভক্তদের কাছ থেকে সেই পিশাচসিদ্ধ সাধকের খোঁজখবর নিয়ে ছিলেন । তখন ওরা জানিয়েছিল,__ “সেই সাধকটি এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছে, তার উপর__ আর তার বিশেষ সাধন-শক্তিও নাই ! এখন ওর কাছে আর কেউ যায়না, সেবা করার জন্যেও প্রায় কেউ থাকেনা ! দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে লোকটি বিছানায় শুয়ে বর্তমানে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছে !”
একথা শুনে স্বামীজী তৎক্ষণাৎ সেই সাধকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন । সেখানে পৌঁছে স্বামীজী নিঃসংকোচে ঐ সাধকের ঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন এবং তারপর তার মাথার গোড়ায় বসে লোকটির মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে তাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন । মহাপুরুষের স্পর্শ পেয়ে লোকটি কাঁদতে লাগলো ! স্বামীজী সেদিন ওকে শান্ত করে, তবেই ফিরে এসেছিলেন ! শোনা যায়, এই ঘটনার অল্পদিনের মধ্যেই ওই সাধক মারা গিয়েছিল।
এই ঘটনাটা তোমাদেরকে বিস্তারিতভাবে এই জন্যই বললাম যে, একটু আগেই মহাপুরুষদের লীলার কথা হচ্ছিলো না__ এই দ্যাখো, মহাপুরুষের নরলীলা ! স্বামীজী কি পারতেন না __নিজে নিজেই তাঁর আত্মশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বা মনোঃসংযোগ করে মায়ের খবর নিতে ! কিন্তু যখনই পেরুমল ঐ পিশাচ-সিদ্ধের কথা স্বামীজীকে জানালো, সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সেই সাধকের সাহায্য গ্রহণ করার চেষ্টা করলেন । আর কিছু হোক বা না হোক, লোকটা সাধক তো বটেই ! সে সিদ্ধি অর্জনের জন্য দীর্ঘ সাধনা তো করেছে __তা সে positive বা negative-যাই হোক না কেন, তাতে কি আসে যায় ? স্বামীজী ওই ব্যক্তির সাধনাকে সম্মান জানিয়েছিলেন !
এবার দ্যাখো, ওইটুকু উপকারের বিনিময়ে স্বামীজী ঠিক ওই ব্যক্তির মৃত্যুশয্যায় গিয়ে হাজির হয়েছিলেন এবং তাকে স্পর্শ করে তার negativity নষ্ট করে দিয়েছিলেন ! এটা তিনি করেছিলেন__ যাতে সে পরবর্তী জন্মে আধ্যাত্মিক চেতনা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে এবং সাধন-ভজন করে প্রকৃত আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে পারে তার ব্যবস্থা স্বামীজী করে দিয়েছিলেন।
দ্যাখো, উনি কিন্তু আগে যাননি, কারণ যতদিন ওই ব্যক্তির মধ্যে negative শক্তি ক্রিয়াশীল ছিল_ ততদিন কোনো positive শক্তি স্পর্শ দিলেও কাজ হোতো না ! কিন্তু যখন লোকটির negative শক্তি শেষ হয়ে গেল, তখন সে ফতুর হয়ে গেল এবং তখন সে শুধুমাত্র মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষা করছিল ! তখন স্বামীজী তাকে positive শক্তি সঞ্চারিত করলেন । এটাই শক্তি সঞ্চারণের সঠিক art !
আমি তোমাদের প্রত্যেককেই বলছি__ যদি ঈশ্বরের অনুগ্রহ বা কোনো মহাপুরুষের কাছ থেকে কৃপাপ্রাপ্ত হোতে চাও__ তাহলে আগে ফতুর হও, vacant হও ! অহংকার-অভিমান সব ত্যাগ করে শূন্য হোতে পারলে, দেখবে__ ঈশ্বরের করুণার প্রবাহ, কৃপার ধারা আপনা হোতেই তোমার উপর ঝরে পড়বে।
তাছাড়া আরো একটা ব্যাপার এই ঘটনা থেকে লক্ষ্য করা যায়, সেটা হোলো কোনো মহাপুরুষ যদি কারো কাছ থেকে অল্প কিছুও গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি বিনিময়ে তাকে শতগুণ বা সহস্রগুন ফিরিয়ে দেন । যেমন, এক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দ ওই পিশাচসিদ্ধকে দিয়েছিলেন । মৃত্যুশয্যায় একবার positive touch দিয়ে ওই ব্যক্তিকে কত জন্ম-জন্মান্তর এগিয়ে দিয়েছিলেন স্বামীজী__ তার কি ঠিক আছে ! ওই ব্যক্তির কতজন্মের সাধনার ফল ঐ একটা স্নেহস্পর্শেই লাভ হয়ে গেলো ! স্বামীজীর মতো মহাপুরুষেরা যখন শরীর গ্রহণ করেন, তখন তাঁরা তো শুধুমাত্র জীবজগতের কল্যাণের জন্যই আসেন__ তাই তাঁদের আগমনে শুধুমাত্র দু-একজন মানুষ নয়, সমস্ত মানব সমাজেরই কিছু না কিছু কল্যাণ হয়।৷
… এরপর স্বামীজী ওই পিশাচ সিদ্ধের কাছ থেকে চলে এসেছিলেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই কলকাতার গুরুভ্রাতাদের কাছ থেকে মা ভুবনেশ্বরী দেবীর কুশল সংবাদও পেয়ে গিয়েছিলেন । এই ঘটনার বহুদিন পর অর্থাৎ আমেরিকা থেকে বিশ্বজয় করে যখন তিনি দেশে ফিরে এলেন__ তারপর উনি একবার পুনরায় দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলেন এবং আলাসিঙ্গা ও অন্যান্য ভক্তদের কাছ থেকে সেই পিশাচসিদ্ধ সাধকের খোঁজখবর নিয়ে ছিলেন । তখন ওরা জানিয়েছিল,__ “সেই সাধকটি এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছে, তার উপর__ আর তার বিশেষ সাধন-শক্তিও নাই ! এখন ওর কাছে আর কেউ যায়না, সেবা করার জন্যেও প্রায় কেউ থাকেনা ! দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে লোকটি বিছানায় শুয়ে বর্তমানে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছে !”
একথা শুনে স্বামীজী তৎক্ষণাৎ সেই সাধকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন । সেখানে পৌঁছে স্বামীজী নিঃসংকোচে ঐ সাধকের ঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন এবং তারপর তার মাথার গোড়ায় বসে লোকটির মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে তাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন । মহাপুরুষের স্পর্শ পেয়ে লোকটি কাঁদতে লাগলো ! স্বামীজী সেদিন ওকে শান্ত করে, তবেই ফিরে এসেছিলেন ! শোনা যায়, এই ঘটনার অল্পদিনের মধ্যেই ওই সাধক মারা গিয়েছিল।
এই ঘটনাটা তোমাদেরকে বিস্তারিতভাবে এই জন্যই বললাম যে, একটু আগেই মহাপুরুষদের লীলার কথা হচ্ছিলো না__ এই দ্যাখো, মহাপুরুষের নরলীলা ! স্বামীজী কি পারতেন না __নিজে নিজেই তাঁর আত্মশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বা মনোঃসংযোগ করে মায়ের খবর নিতে ! কিন্তু যখনই পেরুমল ঐ পিশাচ-সিদ্ধের কথা স্বামীজীকে জানালো, সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সেই সাধকের সাহায্য গ্রহণ করার চেষ্টা করলেন । আর কিছু হোক বা না হোক, লোকটা সাধক তো বটেই ! সে সিদ্ধি অর্জনের জন্য দীর্ঘ সাধনা তো করেছে __তা সে positive বা negative-যাই হোক না কেন, তাতে কি আসে যায় ? স্বামীজী ওই ব্যক্তির সাধনাকে সম্মান জানিয়েছিলেন !
এবার দ্যাখো, ওইটুকু উপকারের বিনিময়ে স্বামীজী ঠিক ওই ব্যক্তির মৃত্যুশয্যায় গিয়ে হাজির হয়েছিলেন এবং তাকে স্পর্শ করে তার negativity নষ্ট করে দিয়েছিলেন ! এটা তিনি করেছিলেন__ যাতে সে পরবর্তী জন্মে আধ্যাত্মিক চেতনা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে এবং সাধন-ভজন করে প্রকৃত আধ্যাত্মিক উন্নতি করতে পারে তার ব্যবস্থা স্বামীজী করে দিয়েছিলেন।
দ্যাখো, উনি কিন্তু আগে যাননি, কারণ যতদিন ওই ব্যক্তির মধ্যে negative শক্তি ক্রিয়াশীল ছিল_ ততদিন কোনো positive শক্তি স্পর্শ দিলেও কাজ হোতো না ! কিন্তু যখন লোকটির negative শক্তি শেষ হয়ে গেল, তখন সে ফতুর হয়ে গেল এবং তখন সে শুধুমাত্র মৃত্যুর জন্য প্রতীক্ষা করছিল ! তখন স্বামীজী তাকে positive শক্তি সঞ্চারিত করলেন । এটাই শক্তি সঞ্চারণের সঠিক art !
আমি তোমাদের প্রত্যেককেই বলছি__ যদি ঈশ্বরের অনুগ্রহ বা কোনো মহাপুরুষের কাছ থেকে কৃপাপ্রাপ্ত হোতে চাও__ তাহলে আগে ফতুর হও, vacant হও ! অহংকার-অভিমান সব ত্যাগ করে শূন্য হোতে পারলে, দেখবে__ ঈশ্বরের করুণার প্রবাহ, কৃপার ধারা আপনা হোতেই তোমার উপর ঝরে পড়বে।
তাছাড়া আরো একটা ব্যাপার এই ঘটনা থেকে লক্ষ্য করা যায়, সেটা হোলো কোনো মহাপুরুষ যদি কারো কাছ থেকে অল্প কিছুও গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি বিনিময়ে তাকে শতগুণ বা সহস্রগুন ফিরিয়ে দেন । যেমন, এক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দ ওই পিশাচসিদ্ধকে দিয়েছিলেন । মৃত্যুশয্যায় একবার positive touch দিয়ে ওই ব্যক্তিকে কত জন্ম-জন্মান্তর এগিয়ে দিয়েছিলেন স্বামীজী__ তার কি ঠিক আছে ! ওই ব্যক্তির কতজন্মের সাধনার ফল ঐ একটা স্নেহস্পর্শেই লাভ হয়ে গেলো ! স্বামীজীর মতো মহাপুরুষেরা যখন শরীর গ্রহণ করেন, তখন তাঁরা তো শুধুমাত্র জীবজগতের কল্যাণের জন্যই আসেন__ তাই তাঁদের আগমনে শুধুমাত্র দু-একজন মানুষ নয়, সমস্ত মানব সমাজেরই কিছু না কিছু কল্যাণ হয়।৷