শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো ৷ আমরা ছিলাম মেমারীর (শ্রীধরপুর) আশীষ মাস্টারমশাইয়ের সাথে গুরুমহারাজের ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কথায় ৷ গুরুজী সেদিন মাস্টারমশায়ের সাথে মানুষের ‘ভর’ হওয়া নিয়ে আলোচনা করছিলেন ৷ উনি মাস্টারমশাইকে বলেছিলেন — এই ধরনের ঘটনায় কদাচিৎ দু-চারজনের কুলকুন্ডলীনী শক্তির জাগরণ ঘটে, বাকিদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মধ্যে যা হয়_অর্থাৎ হাত-পা ছোঁড়া, মাথা নাড়ানো, অদ্ভুত আচরণ করা বা অদ্ভুত গলায় কথা বলা — এগুলি সবই নাটক বা অভিনয় ৷ এই অভিনয় যে যতটা ভালোভাবে করতে পারে – সেই ব্যক্তি ততটাই স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে ৷
যাইহোক, আমরা এখন ফিরে যাই অন্য আরেকটি প্রসঙ্গে ৷ সেদিনও আশীষ মাস্টারমশাই বনগ্রাম আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁর সামনেই ঘটনাটি ঘটেছিল। সেই ঘটনার কথাই এখানে এখন তুলে ধরা যাক্ ৷ অনেক আগে ‘পুরোনো বনগ্রামের কথা’-য় একবার উল্লেখ করা হয়েছিল যে, বনগ্রাম আশ্রম প্রতিষ্ঠার একেবারে গোড়ার দিকে বনগ্রাম এবং বনগ্রামের আশেপাশের গ্রামগুলিতে কাউকে সাপে কামড়ালে_ বাড়ির লোকেরা পেশেন্টকে হসপিটালে ভর্তি না করে নিশ্চিন্ত মনে সরাসরি গুরুমহারাজের কাছে নিয়ে আসতো। আর বলাই বাহুল্য — সেই সমস্ত পেশেন্টরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে যেতো ৷
সেইদিনও ওইরকমই একটা ঘটনা ঘটেছিল – যেটা আশীষ মাস্টারমশাই প্রত্যক্ষ করেছিলেন ৷ সেইদিন সাপে কাটা রোগীটি এসেছিল সামন্তী থেকে ৷ একদম তরতাজা যুবক একটি ছেলে ৷ অন্যান্য লোকের সাথে ছেলেটির বাবা-মা ও সঙ্গে ছিল ৷ সবাই মিলে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে একেবারে গুরুমহারাজের কাছে ছেলেটিকে কাঁধে নিয়ে এসে হাজির হয়েছিল। গুরুজী তখন ছিলেন সিটিং-এ বসে ৷ অনেকগুলি লোক একসাথে সিটিং-চলাকালীন হইচই করতে থাকায় অফিসঘর থেকে তৃষাণ মহারাজ(বর্তমান স্বামী পরমানন্দ), মুরারী মহারাজ(স্বামী নিষ্কামানন্দ)-রাও (তখন অফিসঘরেই তৃষাণ মহারাজ সকাল-সন্ধ্যায় বসতেন।) ওখানে এসে হাজির হয়েছিলেন ৷
মাস্টারমশাই সঙ্গের লোকেদের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন যে, ছেলেটিকে গোখরো সাপে ছোবল মেরেছে। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় ছেলেটি বিষের ঘোরে unconscious অবস্থায় পড়ে ছিল এবং তার মুখ দিয়ে সাদা সাদা ফেনার মত কিছু বেরোচ্ছিল ৷ আশীষ মাস্টার মনে করেছিলেন যে, এই ছেলেটি নির্ঘাত মারা যাবে ৷ গুরুমহারাজও ঐরকম অবস্থায় ছেলেটিকে দেখেই রোগীটির বাড়ির লোকজনদেরকে ধমকে উঠে বলেছিলেন – ” আরে ! ওকে এখানে নিয়ে এসেছো কেন ? কোনো হসপিটালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দাও ! আমি কি ডাক্তার — না এই আশ্রমটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ?”
কিন্তু ছেলেটির যা অবস্থা – তাতে হয়তো আশ্রম থেকে বের করে বাইরে গেলেই মারা পড়বে ! সুতরাং, ওই অবস্থায় যাবেই বা কোথায় ? তাছাড়া রোগীর বাড়ির লোকজন সম্ভবতঃ তৃষাণ মহারাজের পূর্বপরিচিত ছিল (কারণ তখন আশ্রমের যাবতীয় collection তৃষাণ মহারাজই করতেন, ফলে স্থানীয় মানুষজনেদের তৃষাণ মহারাজ খুবই ভালোমতন চিনতেন এবং তাদের প্রয়োজনে বা বিপদে-আপদে উনি এগিয়ে আসতেন।) – তাই তিনি ইতিমধ্যেই রোগীর বাবা-মাকে বলে দিয়েছিলেন — তারা যেন গুরুমহারাজের পা-দুটো ধরে কেঁদে কেটে তাদের সন্তানের প্রাণভিক্ষা চেয়ে নেয় !
তাই যখন গুরুমহারাজ ছেলেটির বাড়ির লোকজনেদের ধমক দিচ্ছিলেন, ছেলেটিকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য বলছিলেন – সেই সময় তৃষাণ মহারাজ (স্বামী পরমেশ্বরানন্দ) ছেলেটির বাবা-মার দিকে ইঙ্গিত করে গুরুজীর পা-দুটো ধরার কথা মনে পাড়িয়ে দিয়েছিলেন ৷ এতে তারা মনে জোর পেয়ে দুজনেই যেই গুরুজীর পা-দুটো ধরে কান্নাকাটি করতে শুরু করেছে – অমনি গুরুমহারাজ করুণাদ্র হয়ে পড়েছিলেন এবং বলেছিলেন – “ছেলেটিকে (সাপে কাটা রোগীটিকে) আমার ঘরের মেঝেতে শুইয়ে দিয়ে তোমরা সবাই বাইরে চলে এসো !”
যারা ছেলেটিকে কাঁধে করে সামন্তী থেকে মাঠে মাঠে বয়ে বনগ্রাম আশ্রমে এনেছিল – তারাই ধরাধরি করে ছেলেটিকে গুরুজীর ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিয়ে এসেছিল এবং তারপরেই গুরুমহারাজ সিটিং ছেড়ে উঠে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ৷ সেইদিনও আশীষ মাস্টারের ঘোর সংশয় ছিল যে, এই রোগীটিকে বাঁচানো অসম্ভব ! কারণ রোগীটি সাপের বিষে জর্জরিত হয়ে গেছিলো। একেবারে অজ্ঞান-অবস্থা, মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছে — এই অবস্থার রোগীকে antivenom না দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করে কি বাঁচানো সম্ভব ??
যাইহোক, আমরা এখন ফিরে যাই অন্য আরেকটি প্রসঙ্গে ৷ সেদিনও আশীষ মাস্টারমশাই বনগ্রাম আশ্রমে উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁর সামনেই ঘটনাটি ঘটেছিল। সেই ঘটনার কথাই এখানে এখন তুলে ধরা যাক্ ৷ অনেক আগে ‘পুরোনো বনগ্রামের কথা’-য় একবার উল্লেখ করা হয়েছিল যে, বনগ্রাম আশ্রম প্রতিষ্ঠার একেবারে গোড়ার দিকে বনগ্রাম এবং বনগ্রামের আশেপাশের গ্রামগুলিতে কাউকে সাপে কামড়ালে_ বাড়ির লোকেরা পেশেন্টকে হসপিটালে ভর্তি না করে নিশ্চিন্ত মনে সরাসরি গুরুমহারাজের কাছে নিয়ে আসতো। আর বলাই বাহুল্য — সেই সমস্ত পেশেন্টরা সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে যেতো ৷
সেইদিনও ওইরকমই একটা ঘটনা ঘটেছিল – যেটা আশীষ মাস্টারমশাই প্রত্যক্ষ করেছিলেন ৷ সেইদিন সাপে কাটা রোগীটি এসেছিল সামন্তী থেকে ৷ একদম তরতাজা যুবক একটি ছেলে ৷ অন্যান্য লোকের সাথে ছেলেটির বাবা-মা ও সঙ্গে ছিল ৷ সবাই মিলে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে একেবারে গুরুমহারাজের কাছে ছেলেটিকে কাঁধে নিয়ে এসে হাজির হয়েছিল। গুরুজী তখন ছিলেন সিটিং-এ বসে ৷ অনেকগুলি লোক একসাথে সিটিং-চলাকালীন হইচই করতে থাকায় অফিসঘর থেকে তৃষাণ মহারাজ(বর্তমান স্বামী পরমানন্দ), মুরারী মহারাজ(স্বামী নিষ্কামানন্দ)-রাও (তখন অফিসঘরেই তৃষাণ মহারাজ সকাল-সন্ধ্যায় বসতেন।) ওখানে এসে হাজির হয়েছিলেন ৷
মাস্টারমশাই সঙ্গের লোকেদের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন যে, ছেলেটিকে গোখরো সাপে ছোবল মেরেছে। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় ছেলেটি বিষের ঘোরে unconscious অবস্থায় পড়ে ছিল এবং তার মুখ দিয়ে সাদা সাদা ফেনার মত কিছু বেরোচ্ছিল ৷ আশীষ মাস্টার মনে করেছিলেন যে, এই ছেলেটি নির্ঘাত মারা যাবে ৷ গুরুমহারাজও ঐরকম অবস্থায় ছেলেটিকে দেখেই রোগীটির বাড়ির লোকজনদেরকে ধমকে উঠে বলেছিলেন – ” আরে ! ওকে এখানে নিয়ে এসেছো কেন ? কোনো হসপিটালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে দাও ! আমি কি ডাক্তার — না এই আশ্রমটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ?”
কিন্তু ছেলেটির যা অবস্থা – তাতে হয়তো আশ্রম থেকে বের করে বাইরে গেলেই মারা পড়বে ! সুতরাং, ওই অবস্থায় যাবেই বা কোথায় ? তাছাড়া রোগীর বাড়ির লোকজন সম্ভবতঃ তৃষাণ মহারাজের পূর্বপরিচিত ছিল (কারণ তখন আশ্রমের যাবতীয় collection তৃষাণ মহারাজই করতেন, ফলে স্থানীয় মানুষজনেদের তৃষাণ মহারাজ খুবই ভালোমতন চিনতেন এবং তাদের প্রয়োজনে বা বিপদে-আপদে উনি এগিয়ে আসতেন।) – তাই তিনি ইতিমধ্যেই রোগীর বাবা-মাকে বলে দিয়েছিলেন — তারা যেন গুরুমহারাজের পা-দুটো ধরে কেঁদে কেটে তাদের সন্তানের প্রাণভিক্ষা চেয়ে নেয় !
তাই যখন গুরুমহারাজ ছেলেটির বাড়ির লোকজনেদের ধমক দিচ্ছিলেন, ছেলেটিকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য বলছিলেন – সেই সময় তৃষাণ মহারাজ (স্বামী পরমেশ্বরানন্দ) ছেলেটির বাবা-মার দিকে ইঙ্গিত করে গুরুজীর পা-দুটো ধরার কথা মনে পাড়িয়ে দিয়েছিলেন ৷ এতে তারা মনে জোর পেয়ে দুজনেই যেই গুরুজীর পা-দুটো ধরে কান্নাকাটি করতে শুরু করেছে – অমনি গুরুমহারাজ করুণাদ্র হয়ে পড়েছিলেন এবং বলেছিলেন – “ছেলেটিকে (সাপে কাটা রোগীটিকে) আমার ঘরের মেঝেতে শুইয়ে দিয়ে তোমরা সবাই বাইরে চলে এসো !”
যারা ছেলেটিকে কাঁধে করে সামন্তী থেকে মাঠে মাঠে বয়ে বনগ্রাম আশ্রমে এনেছিল – তারাই ধরাধরি করে ছেলেটিকে গুরুজীর ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিয়ে এসেছিল এবং তারপরেই গুরুমহারাজ সিটিং ছেড়ে উঠে ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ৷ সেইদিনও আশীষ মাস্টারের ঘোর সংশয় ছিল যে, এই রোগীটিকে বাঁচানো অসম্ভব ! কারণ রোগীটি সাপের বিষে জর্জরিত হয়ে গেছিলো। একেবারে অজ্ঞান-অবস্থা, মুখ দিয়ে ফেনা বেরোচ্ছে — এই অবস্থার রোগীকে antivenom না দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করে কি বাঁচানো সম্ভব ??