জিজ্ঞাসু—শিরডির সাইবাবাই কি বর্তমানের সাইবাবা ?
গুরুমহারাজ — না—শিরডি সাইবাবা উত্তরভারতের আর বর্তমানের সাইবাবা দক্ষিণভারতের লোক। তাছাড়া শিরডির সাইবাবা অনেকদিন হল মারা গেছেন আর বতমানের সাইবাবা এখনও বেঁচে। শিরডির সাইবাবার জন্ম হয়েছিল শিপ্রা নদীর ধারে একটি গ্রামে। তাঁর পিতা পেশায় মাল্লা ছিলেন। পিতা ও মাতা
উভয়েই শিবের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন কিন্তু তাঁদের কোন সন্তান ছিল না। একদিন ঝড়জলের রাত্রি, হঠাৎ পিতার মনে হ’ল নৌকাটা বোধহয় ঠিকমত বাঁধা হয়নি, তাই তিনি নৌকাটিকে ঠিকমতো বাঁধার জন্য বেরিয়ে গেলেন। মা ঘরে একা, এমন সময় বাইরে দরজায় ধাক্কা দেওয়ার আওয়াজ হলো। মা ভাবলেন হয়তো বা স্বামী এসেছে কিন্তু দরজা খুলে দেখেন এক বৃদ্ধ —ভিজে ঠক্ ঠক্ করে কাঁপছে। তিনি এই দেখে তাড়াতাড়ি বৃদ্ধকে ভিতরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে মাথা মুছিয়ে ভিজে কাপড় ছাড়িয়ে শুকনো কাপড় পরতে দিলেন। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃদ্ধ একটু সুস্থ হল কিন্তু সে জানাল যে, সে বড়ই ক্ষুধার্ত। তখন মা ঘরে খুঁজে খুঁজে সামান্য আহার্য জোগাড় করে বৃদ্ধকে খেতে দিলেন। কিন্তু তা খেয়েও বৃদ্ধের ক্ষুন্নিবৃত্তি হ’ল না, মা আর কি করেন সমস্ত কৌটো, বাটি থেকে উদ্ধার করে যেখান থেকে যা পারলেন সবটুকু আবার বৃদ্ধকে এনে দিলেন, বৃদ্ধ সেইটা খেয়ে জল পান করে ঢেকুর তুলে বললেন – “আঃ এতক্ষণে শান্তি হোল, এবার আমি ঘুমাবো।” এই বলে সে তাদের শয্যার দিকে তাকাল। মা পড়েন মহা মুস্কিলে, স্বামী অনুপস্থিত, বৃদ্ধ হলেও পরপুরুষ তো, তাকে তাদের শয্যায় শুতে দেন কি করে ! এইসব সাত-পাঁচ ভাবছেন হঠাৎ দরজায় আবার আঘাত, এবার নিশ্চয়ই স্বামী ভেবে দরজা খুলেই দেখেন এক বৃদ্ধা। বৃদ্ধাটি ঘরে ঢুকেই বৃদ্ধকে ঐ অবস্থায় দেখে রেগে আগুন। দুজনে লেগে গেল ঝগড়া – ঝগড়াঝাঁটি থেকে প্রায় হাতাহাতি হবার জোগাড় ! মা আর কি করেন, হাতজোড় করে একবার একে থামানোর চেষ্টা করছেন আর একবার ওকে। কিন্তু কেউ শান্ত হচ্ছে না দেখে নিরুপায় হয়ে বিপদের ত্রাতা মহাদেবকে একমনে স্মরণ করতে লাগলেন। হঠাৎ বন্ধ চোখে আলোর জ্যোতি অনুভব করতেই তিনি চোখ খুললেন। চোখ খুলে দেখেন কোথায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা! সারাঘর আলোয় আলোয় উদ্ভাসিত, আর তার মাঝে শিব ও শিবানী প্রসন্ন-দৃষ্টিতে তাঁর দিকে চেয়ে রয়েছেন । এই অপার্থিব দৃশ্য দেখে মা আর স্থির থাকতে পারলেন না —অচৈতন্য হয়ে ঘরেই পড়ে গেলেন।
এদিকে সত্যিই জলের ধাক্কায় নৌকার কাছি খুলে নৌকা ভেসে গিয়েছিল—সেই নৌকাকে ঠিকমতো জায়গায় এনে শক্ত করে বেঁধে ঘরে.ফিরতে পিতার প্রায় ভোর হয়ে গেল। তিনি এসে স্ত্রীকে ডেকে তুললেন—আর তাঁর কাছে সমস্ত কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁকে নিয়ে শিবমন্দিরে গিয়ে ভক্তিভরে প্রণাম ও প্রার্থনা করতে লাগলেন। তাঁদের ভক্তিতে প্রসন্ন হয়ে শিব বর দেন যে, তাঁদের পুত্র সন্তান হবে এবং তাঁর দ্বারা জগৎকল্যাণ হবে। এরপর যে পুত্র হয়—সেই ছেলেই পরবর্তীকালের শিরডির সাইবাবা। সাইবাবার জন্মের পরই তার পিতা ও মাতা দুজনেরই মৃত্যু হয়। ঘটনা ঘটেছিল কি, আসন্ন প্রসবা স্ত্রীকে নিয়ে স্বামী শিপ্রা নদীর তীর ধরে কোথাও যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যেই প্রসব বেদনা ওঠায়—বিপন্ন স্বামী সাহায্যের খোঁজে পাগলের মতো ছুটে বেরিয়ে যান এবং শিপ্রা নদীতে অন্ধকারে পড়ে ভেসে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্তান প্রসব হয়ে যায়। মা নিজের চোখে স্বামীর মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে সহ্য করতে না পেরে নবজাতককে ভাল করে কাপড়ে জড়িয়ে রাস্তার পাশে শুইয়ে রেখে নিজেও শিপ্রা নদীতে আত্মবিসর্জন দেন।
সকালের দিকে এক ধনী-দম্পতি গরুর গাড়ীতে করে ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁরা একটি নবজাতকের কান্নার ধ্বনি শুনে দেখেন পথপার্শ্বে এক সদ্যজাত শিশু কাপড়ে জড়ানো পড়ে রয়েছে। তাঁদেরও কোন সন্তান ছিল না। এদিক ওদিক খোঁজ করেও যখন তাঁরা কাউকে দেখতে পেলেন না তখন ভগবানের দান হিসাবে ঐ নবজাতককে তাঁরা নিজেদের সন্তানজ্ঞানে গ্রহণ করলেন এবং মানুষ করতে লাগলেন। ঐ সময় তার ডাক নাম দিলেন “বাবু”। ছোটবেলায় অত্যন্ত দুরন্ত ছিলেন বাবু। গ্রামের সমস্ত ছেলেদের সর্দার বাবু, সকলকে জুটিয়ে যতরকম অন্যায় করা যায় তাই করতেন। একবার সব ছেলেদেরকে দিয়ে তাদের নিজের নিজের বাড়ীর শালগ্রাম শিলাগুলো চুরি করে আনিয়ে ‘গুলি’ খেলা করেছিলেন। বুঝতেই পারছো গ্রামের মানুষের কি অবস্থা ! বাবুর নেতৃত্বে ছেলেরা মন্দিরে গিয়ে আজান দিতো আবার মসজিদে গিয়ে শিবপূজা করতো। এইরকম নানাবিধ অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রামের মানুষ অসংখ্যবার ‘বাবু’র পালকপিতার কাছে তাঁর নামে অভিযোগ জানাতো। অভিযোগের পর অভিযোগে অতিষ্ঠ হয়ে পালকপিতা “বাবু’কে পড়াশুনা করানোর জন্য দূরবর্তী গ্রামে গুরুগৃহে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু এর কিছুদিন পরই পালক-পিতা ও মাতা দুজনেই মারা যান। যাইহোক পড়াশুনায় ‘বাবু’ সবার সেরা। তাছাড়া বাপ-মা মরা ছেলে, সেই হিসাবে গুরুদেব ‘বাবুকে’ একটু বিশেষ স্নেহ করতেন। গুরুদেব বিশেষ বিশেষ কাজ বাবুকে দিয়েই করাতেন—এর মধ্যে প্রত্যহ ভোরে পূজার ফুল তোলার ভার ছিল তাঁর। এসব ব্যাপারগুলো আবার অন্যান্য ছেলেরা খুব একটা ভাল চোখে দেখতো না। গুরুদেব বাবুকেই বেশী ভালোবাসেন বলে বাকিরা সবাই নানা বিষয়ে বাবুর উপর নানা ষড়যন্ত্র করত, বাবুর বিরুদ্ধে নানারকম নালিশ জানাতো গুরুদেবের কাছে। কিন্তু গুরুদেব ওদের কোন কথাতেই কান দিতেন না। এতে ছেলেরা ঠিক করল ভোরবেলায় বাবু যখন বাগানে ফুল তুলতে যাবে তখন তারা বাবুকে মেরে ফেলবে। পরদিন ভোরবেলায় বাবু যথারীতি বেলপাতা, ফুল ইত্যাদি তুলতে
গেছেন পাশের বাগানে, এমনসময় ছেলের দল চুপিসাড়ে পিছন থেকে পাথরের মতো ইঁটের একটা বড় টুকরো দিয়ে সজোরে বাবুর মাথায় আঘাত করল। বাবুর মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত ঝরতে লাগল আর তিনি জ্ঞান হারিয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়ে গেলেন। ছেলেরা ভয় পেয়ে পালিয়ে গেল—তারা গুরুদেবকেও কিছু বলল না। এদিকে গুরুদেব বাবুর ফিরতে দেরি দেখে অজানা আশঙ্কায় উৎকণ্ঠিত হলেন এবং নিজেই তাকে খুঁজতে বেরোলেন। খুঁজতে খুঁজতে পাশের বাগানে গিয়ে দেখেন বেলপাতা হাতে বাবু রক্তাক্ত ও জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়ে, মাথার ক্ষতস্থান দিয়ে তখনও রক্ত চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে। গুরুদেব নিজের বস্ত্র ছিঁড়ে তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থানটি বেঁধে দিলেন—চোখে-মুখে জল দিয়ে প্রাথমিক পরিচর্যারও চেষ্টা করলেন কিন্তু কোন ফল হ’ল না দেখে তাঁর নিজের ভুলে এমন একটি ছেলের প্রাণ গেল এই ভেবে হা-হুতাশ করতে করতে সেখানেই প্রাণত্যাগ করলেন। বাবু কিন্তু মারা যান নি। ধীরে ধীরে তাঁর জ্ঞান ফিরতেই তিনি চোখ মেলে চাইলেন এবং তাঁর সব কথা মনে পড়ে গেল। আস্তে আস্তে উঠে দেখলেন যে, গুরুদেব তাঁর পাশেই মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। ব্যাপারটা বুঝে নিয়েই তিনি ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ালেন, তাঁর নিজের বস্ত্রটা অর্ধেক ছিঁড়ে একটা ঝোলার মত করে নিয়ে সেই রক্তমাখা ইটটি ঝোলায় ভরে নিলেন এবং মাথায় গুরুদেবের বস্ত্র দিয়ে ফেটি তৈরী করে নিয়ে সেটি পরে অজানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেলেন।
এরপর অনেক দিন কেটে গেছে। শিরডি নামক স্থানে ফকিরবেশী এক মহাত্মা, মাথায় ফেটি এবং কাঁধে ঝোলা নিয়ে ধুনি জ্বালিয়ে এক গাছতলায় বসে থাকতেন। স্থানীয় মানুষ তাঁকে বিরক্ত করতো না বরং ভক্তি করতো। একবার এক রাজপুরুষের একটি ঘোড়া জঙ্গলে হারিয়ে যায়, সেই ঘোড়ার সন্ধান করতে করতে রাজপুরুষটি এসে ফকিরের সামনে হাজির। তিনি এসে দেখলেন ফকিরের ধুনির আগুন নিভে গেছে কিন্তু ফকিরটি মাটিতেই চিমটি ঠুকে আগুন জ্বালিয়ে ফেললেন। এটা দেখে তাঁর খুবই কৌতূহল হ’ল। তিনি ভাবলেন এই ফকির নিশ্চয়ই কোন মহাপুরুষ, তাই তিনি ফকিরের সামনে এসে তাঁর দুঃখের কথা নিবেদন করলেন। ফকির তাঁকে বললেন, ঘোড়া হারানোর জন্য দুঃখ করার কোন কারণ নেই কারণ ঘোড়াটি তাঁর পিছনের গাছের নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছে। লোকটি পাগলের মতো দৌড়ে সেখানে গিয়ে দেখলেন সত্যিই ঘোড়াটি সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তিনি অবাক-বিস্ময়ে করজোড়ে ফকিরবাবার সামনে নতজানু হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কে ’? ফকির উত্তর দিলেন, “আমি সাইবাবা”। বাউল গানে আছে – “যিনি সহজ তিনিই সাইসাই-এর উপরে আর কিছু নাই।” যাইহোক তখন থেকেই লোকের মুখে মুখে সাইবাবার নাম দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ল। শিরডিতে তাঁর আত্মপ্রকাশ হয়েছিল বলে তিনি শিরডির সাইবাবা নামে পরিচিত। তাঁর জীবদ্দশায় বহু আর্ত, দুঃখী, পীড়িত মানুষ তাদের নানান সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে এসেছে এবং তিনি বিভূতি প্রয়োগের দ্বারা সে সমস্ত মানুষের দুঃখমোচন করেছেন- এরকম বহু ঘটনার কথা তাঁর জীবনচরিতে উল্লেখ আছে। সম্প্রতি তাঁর জীবন নিয়ে film-ও হয়ে গেছে।
যাইহোক সাধুসমাজে বলা হয় শিরডির সাইবাবা কবীরের উত্তর শরীর। এর কারণ হয়তো হতে পারে – দুজনেরই জন্মবৃত্তান্ত অনেকটা একই রকমের বা কিছু মিল রয়েছে। তবে জানবে কোন মহাপুরুষ যে পরিবারেই জন্মগ্রহণ করুন না কেন, সেই পরিবারের লোকেদের বা পিতামাতাকে অশেষ দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। এখানে শিরডির সাইবাবার ক্ষেত্রেও এই রকম হয়েছিল। তবে শিরডির সাইবাবা যে শরীর নিয়ে লীলা করে গেছেন, জেনে রাখবে তাঁর সেই স্থূল শরীর না থাকলেও তিনি সুক্ষ্মশরীরে এখনও কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন যোগী, মহাত্মাদের শরীর রক্ষা করা বা সুবিধা-অসুবিধাগুলি তিনি দেখেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সাধনকালে একবার এমন অবস্থা হয়েছিল যে, তিনি আর কিছু খেতে পারতেন না অর্থাৎ নীচে আর মনকে নামাতে পারতেন না, সবসময় আনন্দময় কোষের ক্রিয়া চলত, ঈশ্বরীয়ভাবে—তুরীয় স্থিতিতে বিরাজ করতেন। হৃদয়ের মতো অমন যে মামার সেবক সেও faliure হয়ে গিয়েছিল কারণ ঐ অবস্থা থেকে মনকে কি করে নিচে নামাতে হয় সে কায়দা তো আর হৃদয়ের জানা ছিল না, এটা যোগের আচার্যের কাজ। সেইসময় কোথা থেকে এক ফকির এসে হাজির হন দক্ষিণেশ্বরে। তিনি ক’দিন ওখানে থেকে ঠাকুরকে খাবার সময় লাঠি হাতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে খাওয়াতেন। এইভাবে কয়েকদিন করার পর ধীরে ধীরে ঠাকুরের মন পার্থিব জগতে নেমে আসে এবং তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন। এই কাজ শেষ হতেই সেই ফকির কিন্তু উধাও হয়ে যান। মাথায় পাগড়ি, হাতে চিমটাওয়ালা ঐ ফকিরই ছিলেন শিরডির সাইবাবা। ঠাকুরের শরীর রক্ষার জন্য গুরুকুল থেকে নির্দেশিত হয়ে তিনি ঐ কাজটি করে দিয়েছিলেন।
আর একবার ঋষিকেশে শিবানন্দ সরস্বতী মহারাজের নিজের শরীরে কুম্ভক ক্রিয়ার পর বায়ু আটকে গিয়ে এমন অবস্থা হয় যে, তাঁর প্রাণ-সংকটকাল উপস্থিত হবার জোগাড় ! তৎকালীন সাধুসমাজের সমস্ত
মণ্ডলেশ্বর-যোগাচার্যদের ডেকেও কোন ফল হয়নি। অবশেষে শিষ্য- ভক্তরা গুরুদেব শরীর ছেড়ে দেবেন ভেবে ধূপ-ধুনা জ্বালিয়ে নাম-গান করতে শুরু করে। প্রায় তিন দিন পর ঐ ধোঁয়ার কুণ্ডলীকে আশ্রয় করে এক মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়, যাঁর মাথায় পাগড়ি, হাতে চিমটা। উনি প্রকট হবার পর শিবানন্দ সরস্বতীর শরীরের একটি নির্দিষ্ট স্থানে চিমটার বাড়ি বা আঘাত করতেই শিবানন্দ পড়ে যান এবং ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। ফকিরবাবা আবার অন্তর্হিত হন। এই ঘটনাটি বহু লোকের সামনেই ঘটেছিল। সেখানে শুধু যে শিবানন্দ সরস্বতীর শিষ্যরাই ছিলেন তা নয়—অন্যান্য পরম্পরার বহু সাধু-ব্রহ্মচারী—এমনকি সাধারণ মানুষও উপস্থিত ছিলেন। কারণ ঐ সময় বিখ্যাত যোগী-মহাত্মা শিবানন্দ সরস্বতীর প্রাণ-সংকটকাল উপস্থিত শুনে তাঁকে দর্শন করতে হাজার হাজার মানুষ ঋষিকেশে ওনার আশ্রমে এসেছিলেন। ফলে বহু মানুষের সামনেই ঘটনাটা ঘটেছিল। এইভাবে বহু ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে, শিরডির সাইবাবা এখনও সূক্ষ্মভাবে সাধু-মহাত্মাদের অর্থাৎ যাঁদের দ্বারা সমাজের কল্যাণসাধিত হবে—তাঁদের শরীর রক্ষা করে থাকেন বা তাঁদের কোন সাধনে বিঘ্ন ঘটলে তিনি তা থেকে তাঁদের রক্ষা করেন।